মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: গা ছমছমে পরিবেশে কয়েকশো বছরের প্রকাণ্ড বটগাছের তলায় বন্দেমাতরম মন্ত্রে এখনও পুজিত হন ভবানী পাঠকের কালী। একটা সময় ছিল যখন চারিদিকে জঙ্গল গা ছমছমে পরিবেশ খড়ের চালায় মায়ের মূর্তি প্রকাণ্ড এক বটগাছের তলায়। পিছনে রয়েছে প্রকাণ্ড এক জলাশয় নিচে ছিল সুরঙ্গ তার ধ্বংসাবশেষ এখনও দেখতে পাওয়া যায়।
'দেবী চৌধুরানী এই মন্দির শুরু করেছিলেন..'
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে এখনো এই মন্দির চত্বরে আছে মানুষের এবং শেয়ালের মাথার খুলি, সেই বট গাছও এখনও রয়েছে। রয়েছে জলাশয়ও। শুধু আশেপাশের জঙ্গল অনেকটাই পরিষ্কার করে এখন গড়ে উঠেছে বসতি বহুতলাবাসন ইট কার্ড কংক্রিটের নগরায়ন। শতাধিক বছর আগে ভবানী পাঠক দেবী চৌধুরানী এই মন্দির শুরু করেছিলেন বলে কথিত আছে।
'বিপ্লবীরা এই মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন'
আরও জানা যায়, দেশ স্বাধীনে যুক্ত বিপ্লবীরা এই মন্দিরে আস্তানা গড়ে ছিলেন এবং তারাই এই পুজো করতেন। সেজন্য এই মন্দিরে এখনো বন্দেমাতরম মন্ত্র এই পুজো শুরু হয়, তবে সেই গা ছমছমে পরিবেশ অতটা না থাকলেও সেই প্রকাণ্ড বটগাছ এখনও জানান দেয়, কয়েক দশক আগেও জায়গাটা কিরকম ছিল, মন্দিরের পুরোহিত মিলন চট্টোপাধ্যায় জানালেন, পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে জানা গেছে তন্ত্রমতো এখানে পুজো হয় এবং যেহেতু বিপ্লবীরা এই পুজো করতেন সেজন্য সেই বন্দেমাতরম মন্ত্র এখনো সেই নিয়মই চলে আসছে।
আরও পড়ুন, 'অভয়ামঞ্চ' তৈরি করে ফের পথে নামতে চলেছে চিকিৎসকরা
বিপ্লবীদের সঙ্গে আরও একটি যোগসূত্র প্রকাশ্যে এসেছে বালুরঘাটেও। বালুরঘাটের রঘুনাথপুরের জাগ্রত তারা কালী। এক সময়ের বালুরঘাটের বোলদাবাড়ি আজ রঘুনাথপুর নামে পরিচিত। সে সময় এই অঞ্চল জঙ্গলে পূর্ণ ছিল। সেই জঙ্গলেই তারা কালীর পুজো শুরু হয়। ইতিহাস গবেষক ও শিক্ষক ডঃ সমিত ঘোষ জানিয়েছেন জনশ্রুতি আছে যে, ডাকাতরা এই পুজো শুরু করে। এখন এই ডাকাতরা কি শুধুই ডাকাত ? না কি বিপ্লবী ? স্বদেশী, না কি স্বাধীনতা সংগ্রামী এ নিয়ে নিশ্চিত কিছু জানা যায় না। বৃটিশ আমলে অনেকে বিপ্লবীদেরকে ডাকাত মনে করত। যাই হোক ডাকাতরা ডাকাতি করতে যাবার আগে দেবীর কাছে পুজো দিত। ধীরে ধীরে রঘুনাথপুরে গঞ্জ গড়ে ওঠায় মানুষের বসবাস বাড়তে থাকে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।