Science News: গ্রহ থেকে পদাবনতি হয় প্লুটোরও, নক্ষত্রও কি কখনও গ্রহে পরিণত হতে পারে!

Space Science: কালক্রমে নক্ষত্র কি কখনও গ্রহে পরিণত হতে পারে, এমন প্রশ্নও উঠে আসে অহরহ। এ ব্যাপারে কী বলছে বিজ্ঞান?

Continues below advertisement

নয়াদিল্লি: নক্ষত্র মিটমিট করে জ্বলে, স্থির থাকে গ্রহ, ছোটদের বইয়ে এভাবেই গ্রহ এবং নক্ষত্রের পার্থক্য বোঝানো হয়ে থাকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বিজ্ঞানের পরিধিরও বিস্তার ঘটেছে। একসময় যা কল্পনাও করা যেত না, আজ তা বাস্তব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের সৌরমণ্ডলের বাইরেও যে অন্য জগৎ থাকতে পারে, সেখানেও প্রাণধারণের উপযোগী পরিবেশ থাকতে পারে বলে যেমন নিত্য-নতুন তথ্য উঠে আসছে, তেমনই মানব বিজ্ঞানের জগতে নিত্য-নতুন মাইলফলক তৈরি করে চলেছে মানবসমাজও, সে ক্ষেপণাস্ত্র দেগে গ্রহাণুকে হটানোই হোক বা সূর্যের উদ্দেশে অভিযান। তাই বিগত কয়েক বছরে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে কৌতূহলও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। (Science News)

Continues below advertisement

এমনকি কালক্রমে নক্ষত্র কি কখনও গ্রহে পরিণত হতে পারে, এমন প্রশ্নও উঠে আসে অহরহ। এ ব্যাপারে কী বলছে বিজ্ঞান? বিজ্ঞানীদের মতে, রাতের আকাশে যে সমস্ত নক্ষত্রকে মিটমিট করে জ্বলতে দেখি আমরা, পৃথিবী থেকে লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান তাদের। অত্যধিক তাপমাত্রার জন্যই জ্বলছে-নিভছে বলে ঠাহর হয়। সেই তুলনায় গ্রহগুলি অনেক শীতল। এই নক্ষত্র এবং গ্রহের মাঝামাঝি আয়তনের, বাদামি রংয়ের, বামনাকার মহাজাগতিক ধাঁধাও রয়েছে, যারা আয়তনে গ্রহের চেয়ে বড় হয়, আবার নক্ষত্রের চেয়ে ছোট। তাই এই দুই গোত্রে ফেলা যায় না তাদের। (Space Science)

এই মহাজাগতিক ধাঁধাগুলিকে 'ব্যর্থ নক্ষত্র' বলেও উল্লেখ করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। কিন্তু নক্ষত্রে হিসেবে মহাজগতে অস্তিত্ব গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয় যারা, তারা কি কখনও গ্রহে পরিণত হতে পারে? বামনাকার ওই মহাজাগতিক ধাঁধাগুলিকি কখনও গ্রহে পরিণত হবে? প্রশ্ন শুনে উত্তেজনা জাগলেও, অধিকাংশ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পত্রপাঠ সেই সম্ভাবনা নাকচ করে দেন। অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ সিডনমির জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের গবেষক কোভি রোজ জানিয়েছেন, নক্ষত্র এবং গ্রহের গঠন প্রক্রিয়াই সম্পূর্ণ আলাদা। 
 
 
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নক্ষত্র এবং বাদামি রংয়ের, বামনাকৃতির মহাজাগতিক ধাঁধাগুলির সৃষ্টি গ্যাসের মেঘ থেকে। অভিকর্ষ শক্তির প্রভাবে পুঞ্জীভূত হয়ে গড়ে ওঠে। নক্ষত্রের ভর অনেক বেশি। নিউক্লিয় সংযোজন বজায় থাকে এদের, হাইড্রোজেন প্রথমে হিলিয়াং, তার পর কার্বন এবং শেষে লৌহে পরিণত হয়। ততটা না হলেও, বামনাকার মহাজাগতিক বস্তুগুলিতেও হাইড্রোজেনও তুলনামূলক ভারী উপাদানে পরিণত হয়, ডিউটেরিয়ামে। গ্রহের মতো বয়সের সঙ্গে বামনাকার বস্তুগুলিও ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়। কিন্তু বিস্ফোরণ ঘটে একসময় মৃত্যু হয় তাদের। মহাজাগতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়ে যায় তাদের টুকরো টুকরো অংশ। যে গ্যাস পড়ে থাকে, তা থেকে নতুন নক্ষত্র জন্ম নেয়।  আর পাথর, ধুলোবালি যা পড়ে থাকে, তা থেকে পরবর্তী কালে জন্ম হয় গ্রহের।

অর্থাৎ নক্ষত্র এবং বামনাকার বস্তুগুলির সৃষ্টি গ্যাস থেকে। ভারী উপাদান থেকে সৃষ্টি গ্রহের। তাই নক্ষত্র কখনও গ্রহে পরিণত হতে পারে না বলে মত বিজ্ঞানীদের। যদিও সময়ের সঙ্গে প্রচলিত সব সংজ্ঞা পাল্টে যেতে পারে বলেও মনে করেন তাঁরা। কারণ এক সময় নক্ষত্র এবং গ্রহের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে বলে জানতেনই না কেউ। বামনাকার বস্তুর অস্তিত্বও জানা ছিল না। নক্ষত্র এবং বামনাকার বস্তুগুলিও পরস্পরকে প্রদক্ষিণ করতে পারে বলে সম্প্রতি জানা গিয়েছে। কিছু গ্রহ আবার এমনও রয়েছে, যারা নক্ষত্র বা কোনও কিছুর চারিদিকেই ঘোরে না। তবে শুধুমাত্র ভর নয়, গঠনপ্রক্রিয়া গিয়ে বিচার করলে, নক্ষত্র কখনও গ্রহে পরিণত হতে পারে না বলে মত বিজ্ঞানীদের।

যদিও বিজ্ঞানীদের একাংশই আবার প্লুটোর কথা স্মরণ করিয়ে দেন। একসময় গ্রহ বলে ধরা হলেও, পরবর্তী কালে পদাবনতি ঘটে বামনগ্রহে পরিণত হয়। কারণ ২০০৬ সালে গ্রহের সংজ্ঞা পাল্টে দেয় ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রনমিক্যাল ইউনিয়ন। একই ভাবে ভবিষ্যতে কোনও বামনাকার বস্তুকেও গ্রহ বলে গন্য করা হতে পারে বলে মত বিজ্ঞানীদের কারও কারও। তাই নক্ষত্র সরাসরি গ্রহে পরিণত না হতে পারলেও, কোনও না কোনও ভাবে তার অংশ গ্রহের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা। মহাজাগতিক ধূলিকণা থেকেই সবকিছুর সৃষ্টি। প্রত্যেক বস্তুই পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত বলে মত তাঁদের।

Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola