কলকাতা: সাম্প্রতিক অতীতে এমনটা দেখা গিয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। সূর্যের শক্তিশালী তরঙ্গ বিকিরণ তাই এবার তাক লাগিয়ে দিল সবাইকে। এক্স সোলার ফ্লেয়ার নামের একটি বিশেষ সৌরতরঙ্গ নির্গত হয়েছে সূর্য থেকে। নাসার সোলার ডায়নামিক্স অবজারভেটরি শুক্রবার এই বিষয়টি জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, আয়তনে এই তরঙ্গ বেশ বড়। নাসার (NASA) বিজ্ঞানীদের মতে, এটি এক্স ৩.৪-ক্লাসের বিস্ফোরণ। সেই মাফিক এটিকে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে এত শক্তিশালী সৌরতরঙ্গ দেখা যায়নি বলেই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। শুক্রবার দুপুর ১ টা বেজে ১০ মিনিট গ্রিনিচ মিন টাইমে এই ঘটনা ঘটে।
সোলার ফ্লেয়ার (Solar Flare) আদতে কী ?
সোলার ফ্লেয়ার বা সৌরতরঙ্গ সৌরশক্তির বিপুল বিষ্ফোরণের কারণে তৈরি হয়। এটি সূর্য থেকে সরাসরি পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের উপর প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রাখে এই বিশেষ সৌরতরঙ্গ। শুক্রবার দুপুর নাগাদ পৃথিবীর সাপেক্ষে সূর্যের পিছনদিকে থাকা একটি অংশ থেকে এই সৌরতরঙ্গ নির্গত হয়। সামনের দিক থেকে নির্গত হলে এর প্রভাব আরও বেশি হত বলে মনে করছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
সৌরতরঙ্গ কেন বিপজ্জনক ?
এটি সরাসরি পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের উপর প্রভাব ফেলে। শুক্রবারের এই ঘটনায় তেমন ঘটনাও ঘটেছে। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আটলান্টিকের বেশ কিছু অংশে এই দিন রেডিয়ো যোগাযোগ কিছুক্ষণ বন্ধ হয়ে যায়।
সৌরতরঙ্গটি নির্গত হয়েছে সূর্যের AR3576 সানস্পট থেকে। যেখান থেকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি একটি সানস্পট নির্গত হয়। তবে সেটি ছিল এম ক্লাসের সৌরতরঙ্গ। তবে ৫ ফেব্রুয়ারির ওই সৌরতরঙ্গ বিকিরণের সঙ্গে প্লাজমাও নির্গত হয়েছিল। পদার্থবিদ কেইথ স্ট্রং এক্স হ্যান্ডেলে টুইট করেন, ‘সূর্যের পিছনদিকে হয়েছিল ভাগ্যিস,সূর্যের সামনের দিকে হলে না জানি এটি কত বড় হত!’
প্রসঙ্গত, এই বিশাল আকারের সোলার ফ্লেয়ার সূর্যের করোনাল ভর নির্গমনের কারণে হয়ে থাকে। এর সঙ্গে প্লাজমা ও চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের নির্গমনের ভূমিকাও রয়েছে। প্রসঙ্গত, এই ধরনের সৌরতরঙ্গ পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে বিশাল আকারের ভূচৌম্বকীয় ঝড় তৈরি হয়। যার জেরে স্যাটেলাইট ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হতে পারে। ভেঙে পড়তে পারে যোগাযোগ ব্যবস্থা।