নয়াদিল্লি: মহাশূন্যে প্রাণের খোঁজ করতে গিয়ে নয়া আবিষ্কার। শনির ক্ষুদ্র আকারের উপগ্রহ, Mimas-এ এবার তরল মহাসাগরের সন্ধান পেলেন তাঁরা। বরফের চাদরের নিচে, Mimas-এর বুকে জল টলটলে মহাসাগর রয়েছে বলে দাবি তাদের। তাই সেখানে প্রাণধারণের উপযুক্ত পরিবেশ থাকলেও থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এ নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। (Ocean on Mimas)
বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার আরও একটি কারণে উল্লেখযোগ্য। উপগ্রহের বুকে যদি সত্যিই মহাসাগর থাকে, তাহলে মহাশূন্যে ভিন্গ্রহীদের খোঁজের গতিপথই পাল্টে যাবে বলে মনে করছেন মহাকাশ বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের যুক্তি, Mimas-কে এতদিন 'ডেথ স্টার'ও বলা হতো, কারণ বাইরে থেকে তার বুকে বৃহদাকার গহ্বর দেখা গিয়েছিল। তাই বাইরে থেকে গড়ন দেখে আর কোনও গ্রহ বা উপগ্রহ প্রাণধারণের উপযোগী কি না, তা বিচার করা যাবে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের। (Science News)
বিশেষজ্ঞদের মতে, দূর থেকে মহাজাগতিক বস্তুর গড়ন দেখেই, তার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা জন্মায়। Mimas-কে দেখেও তার বুকে মহাসাগর থাকতে পারে বলে প্রথমে মনেই হয়নি বিজ্ঞানীদের। কিন্তু গভীরে খতিয়ে দেখতেই সেই ধারণা বদলে গিয়েছে। তাই আগামী দিনে মহাশূন্যে ভিন্গ্রহীদের সন্ধান করতে গেলে, চিরাচরিত ধারণা থেকে সরে আসতে হবে বলে মত তাঁদের।
বিজ্ঞানীদের যে দল Mimas-এর বুকে মহাসাগরের সন্ধান পেয়েছে, তারা জানিয়েছে, Mimas-এর মাটির উপরিভাগ মোটা বরফের চাদরে ঢাকা। তার ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার গভীরে টলটলে জলের মহাসাগর থাকার ইঙ্গিত মিলেছে। ওই মহাসাগরের বয়সও তেমন নয় বলে মত বিজ্ঞানীদের। তাঁদের দাবি, খুব বেশি হলে ২ কোটি বছর আগে ওই মহাসাগরের সৃষ্টি। বরফের চাদরের নিচে ঢাকা পড়ে থাকলেও, ওই মহাসাগর আয়তনে চাঁদের প্রায় অর্ধেক বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানী ভ্যালেরি লেইনি বলেন, "সৌরজগতের যেখানে প্রাণ ধারণের উপযোগী পরিবেশ থাকতে পারে বলে কল্পনাও করিনি আমরা, সেখানেই মহাসাগর থাকার ইঙ্গিত মিলেছে। সত্যিই বিস্ময়কর।" এই আবিষ্কারের পর, Mimas-কে শনির আর এক উপগ্রহ Enceladus-এর সমগোত্রীয় করে তুলেছে। কারণ Enceladus-এর বুকেও মহাসাগর রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। দুই উপগ্রহের আয়তনও প্রায় সমান, শনির থেকে দূরত্বও। তবে Enceladus-এর মহাসাগর থেকে ফিনকি দিয়ে জল বেরোয় বলে ইঙ্গিত মিলেছে, Mimas-এর ক্ষেত্রে মহাসাগরটি মাটির অনেক নিচে রয়েছে।