কলকাতা: পৃথিবীর চার পাশে অঙ্ক মেনে পাঁচ বার চক্কর কাটা শেষ। এবার সময় একটা জোরাল 'ধাক্কার' (Thrust)। এই 'ধাক্কা' খেয়েই পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ (Earth's Gravity) কাটিয়ে চাঁদের কক্ষপথে (Orbit Of The Moon) স্থাপিত হওয়ার কথা চন্দ্রযান-৩-এর (Chandrayaan 3 Mission)। ভারতীয় সময় অনুযায়ী, ১ অগাস্ট রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে এই 'ধাক্কা' খাওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজকর্ম শুরু হওয়ার কথা। ইসরোর চন্দ্রাভিযানের এই পর্যায়ের নাম Trans Lunar Injection বা TLI। বিজ্ঞানীদের মতে, এই পর্যায় সফল হওয়ার উপর বাকি অভিযানের সাফল্য-ব্যর্থতা নির্ভর করছে। কাজেই প্রতিটি মুহূর্ত নজরে রাখছেন বিজ্ঞানীরা।
Trans Lunar Injection কী?
লঞ্চ ভেহিকল মার্ক ৩ বা LVM3, চন্দ্রযান-৩ এবং তার প্রোপালশান মউিউলকে পৃথিবীর চারপাশে একটি বড়সড় কক্ষপথে পৌঁছে দিয়েছে। Trans Lunar Injection-এর আগে চন্দ্রযান ৩ এবং তার প্রোপালশান মউিডলটি ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৬০৩ কিলোমিটার*236 কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে। তবে এই দুটিকে মোটেও এক ধাক্কায় পৃথিবী থেকে এত দূরের কক্ষপথে স্থাপন করা হয়নি। এই জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। গত দুসপ্তাহ ধরে পৃথিবীর চারপাশে ঘোরার সময় ধাপে ধাপে দূরত্ব বাড়িয়েছে চন্দ্রযান-৩ এবং তার প্রোপালশান মউিউল। পাঁচটি ধাপ পেরোনোর পর এই দুটি ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৬০৩ কিলোমিটার*236 কিলোমিটার দূরত্বে এসে পৌঁছয়। এবার দরকার একটা 'ধাক্কা' । এই ধাক্কাতেই পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে ছিটকে বেরিয়ে চাঁদের কক্ষপথে ঢুকবে চন্দ্রযান-৩ এবং তার প্রোপালশান মউিউল। সে জন্য 'থ্রাস্টারগুলি' জ্বলে ওঠার কথা যার ধাক্কায় পৃথিবীর 'মায়া' কাটিয়ে চাঁদের কক্ষপথে ঢুকবে চন্দ্রযান-৩। তার পর, একই ভাবে ধাপে ধাপে চাঁদের চারপাশে কয়েকবার পাক খাবে। প্রতি ধাপেই কক্ষপথের দূরত্ব কমবে, জানাচ্ছে ইসরো। তার পর চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধে অবতরণের পর্যায়। কিন্তু সে সব ঠিকঠাক হবে কিনা, তা নির্ভর করছে এই Trans Lunar Injection-এর উপর।
চন্দ্রযান-৩ সম্পর্কে
ভারতের মহাকাশ গবেষণা ক্ষেত্রে অন্যতম মাইলস্টোন চন্দ্রযান ৩। চন্দ্রযান-৩ প্রায় তার আগের ভার্সান অর্থাৎ চন্দ্রযান ২- এর মতোই। তবে চন্দ্রযান ২- এর সময় অর্থাৎ ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্র অভিযানের সময় মহাকাশযানে ছিল একটি অরবিটার। কিন্তু চন্দ্রযান ৩- এর ক্ষেত্রে এই অরবিটার নেই। ২০১৯ সালের ২২ জুলাই লঞ্চ হয়েছিল চন্দ্রযান ২। তার প্রায় চার বছরের মাথায় এবার উৎক্ষেপণ হল চন্দ্রযান ৩। ISRO-এর এই অভিযানে ৬১৫ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। চন্দ্রযান ২ এর তুলনায় অনেকটাই কম খরচ হয়েছে। আগের অভিযানে খরচ হয়েছিল ৯৬০ কোটি টাকা। গত ১৪ জুলাই চন্দ্রযান-৩-এর সফল উৎক্ষেপণের পর ইসরোকে অভিনন্দন জানিয়েছিল নাসা-সহ একাধিক বিশিষ্ট মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। তখন থেকেই চন্দ্রযান-৩-এর প্রত্যেকটা পর্যায় নিয়ে ট্যুইট করেছে ইসরো। এবার অভিযানের আর এক মাহেন্দ্রক্ষণ।
আরও পড়ুন:অভিষেকের ডাকা বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি বাতিল হাইকোর্টে