কলকাতা: বলা হয়, টেবিল টেনিস রিফ্লেক্সের খেলা। হ্যান্ড-আই কো অর্ডিনেশনের ওপর নির্ভর করে প্লেয়ারের সাফল্য-ব্যর্থতা। অথচ যদি কোনও টিটি খেলোয়াড় চোখ নিয়েই সমস্যা পড়ে যায়? তার কেরিয়ার নিয়েই তো প্রশ্ন উঠে যাওয়ার কথা!


কিন্তু সকলকে ভুল প্রমাণ করে ছেড়েছে অঙ্কলিকা চক্রবর্তী (Ankalika Chakraborty)। চোখের সমস্যাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে টেবিল টেনিস বোর্ডে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নৈহাটির কন্যা।


সম্প্রতি ৮৩তম ক্যাডেট ও সাব জুনিয়র জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের অনূর্ধ্ব ১১ বিভাগে সোনা জিতেছে অঙ্কলিকা। প্রতিযোগিতায় ১টা সোনা, ১টা রুপো ও ৫টি ব্রোঞ্জ-সহ মোট সাতটি পদক পেয়েছে বাংলা। যার মধ্যে সোনা জিতেছে অঙ্কলিকা।


মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে সোনা জিতে শুক্রবারই রাজ্যে ফিরেছে অঙ্কলিকা। নৈহাটিতে প্রসেনজিৎ সরকার-তাপসী চক্রবর্তীর নিষ্ঠা টেবিল টেনিস অ্যাকাডেমিতে খেলে যার উত্থান। তার শৈশবের কোচ প্রসেনজিৎ এবিপি লাইভকে বললেন, 'ওর দু চোখেই মাইনাস পাওয়ার। চশমা ব্যবহার করতে হয়। ছোটবেলা চোখের সমস্যার চিকিৎসা করাতে চেন্নাইয়ের শঙ্কর নেত্রালয়েও গিয়েছিল।'


প্রসেনজিৎ যোগ করলেন, 'অনূর্ধ্ব ১১ ন্যাশনাল র‍্যাঙ্কিং টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন অঙ্কলিকা। স্টেট চ্যাম্পিয়নও। অনূর্ধ্ব ১৩ বাংলা দলে রয়েছে। জাতীয় স্তরে র‍্যাঙ্কিং ১১ নম্বর। অনূর্ধ্ব ১৩-তে তিন নম্বরে। বাংলাতেও অনূর্ধ্ব ১৫ বিভাগে রাজ্যে প্রথম আটের মধ্যে। অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে টিটি বোর্ডে ধারাবাহিক সাফল্য দেখাচ্ছে অঙ্কলিকা।'


অঙ্কলিকার টেবিল টেনিস শুরু মাত্র ১৮ মাস বয়সে! শুনলে চমকে উঠবেন হয়তো অনেকেই। তবুও, সেটাই বাস্তব। প্রসেনজিৎ বলছেন, 'মাত্র ১৮ মাস বয়সে টেবিল টেনিসের টেবিলে বসে খেলা শুরু করেছিল। সেই থেকে টিটির সঙ্গে সম্পর্ক।' প্রসেনজিৎ অঙ্কলিকার কোচ হওয়ার পাশাপাশি সম্পর্কে পিসেমশাইও। শোনালেন তাঁর নামকরণের দিনের একটি গল্প।


'নামকরণ অনুষ্ঠানের দিন ওর সামনে পেন, টাকা, খাতার পাশাপাশি টিটি ব্যাট ও বলও দেওয়া হয়েছিল। ও কিন্তি টিটি ব্যাট ও বল ধরেছিল। সেই থেকেই যেন টিটিকে আপন করে নেওয়া।'


ইনদওরে জাতীয় টুর্নামেন্টে সকলের প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে ১০ বছর ৩ মাসের কিশোরী। ক্লাস ফাইভের ছাত্রী। তবে কোচের আক্ষেপ, 'ভিসা সমস্যায় পর্তুগালে খেলতে যেতে পারেনি। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্যের জন্য মূল্যবান আধুনিক সরঞ্জামের প্রয়োজন। তাহলেই ওর খেলার ধার বাড়বে।'


আরও পড়ুন: ট্রেনে ভয়াবহ ডাকাতির শিকার বাংলার জিমন্যাস্টিক্স দল, ২৪ ঘণ্টা পরেও নেওয়া হল না FIR