সন্দীপ সরকার, কলকাতা: আশঙ্কা ছিল, যদি স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে? সিএবি জানিয়ে দিয়েছিল, বেঙ্গল প্রো টি-২০ লিগে কোনও দলের কোচ বা মেন্টর হিসাবে দায়িত্ব নিলে অবিলম্বে বাংলার কোচের পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে। এক সঙ্গে দুই দলের দায়িত্বে থাকা যাবে না, ঘোষণা করেছিল বঙ্গ ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা। কোচেদের ইস্তফা দেওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল সিএবি-তে। বেঙ্গল প্রো টি-২০ লিগের লোভনীয় প্রস্তাব ফেরাতে পারেননি অনেকেই।
শুক্রবার শেষ হয়েছে বেঙ্গল প্রো টি-২০ লিগ (Bengal Pro T20)। ইডেনে (Eden Gardens) মহিলাদের ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে লাক্স শ্যাম কলকাতা টাইগার্স। পুরুষদের ফাইনাল বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়েছে। মুর্শিদাবাদ কিংস ও সোবিস্কো স্ম্যাশার্স মালদা দলকে যুগ্মজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
আর তার পরের দিনই কোচেদের চাকরি ফেরাতে তৎপর হয়ে পড়ল সিএবি। পুরুষদের সিনিয়র দল, অনূর্ধ্ব ২৩ দল, অনূর্ধ্ব ১৯ ও অনূর্ধ্ব ১৬ দলের কোচের পদে আবেদনপত্র চেয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল। সেই সঙ্গে মহিলাদেরও সিনিয়র, অনূর্ধ্ব ২৩, অনূর্ধ্ব ১৯ ও অনূর্ধ্ব ১৫ দলের কোচ চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিল সিএবি। সঙ্গে বলা হল, পুরুষ দলের দায়িত্ব নিতে হলে অন্তত ১৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলতে হবে এবং অন্তত ৩ বছর আগে ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে হবে। মহিলা দলের কোচ হতে গেলে রাজ্যের সিনিয়র মহিলা দলের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে ও অন্তত ৩ বছর আগে ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে হবে।
সিএবি-র বিজ্ঞপ্তি দেখেই বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা বলাবলি শুরু করেন, তাহলে কি সব দলের কোচিং প্যানেল আমূল বদলে ফেলতে চলেছে সিএবি? পুরুষদের সিনিয়র দলের হেড কোচ হিসাবে লক্ষ্মীরতন শুক্ল বা কোচ হিসাবে সৌরাশিস লাহিড়ীকে, কিংবা বোলিং কোচ হিসাবে শিবশঙ্কর পাল, মহিলাদের সিনিয়র দলের কোচ হিসাবে প্রবাল দত্তকে কি আর দেখা যাবে না? নতুন মুখ চাইছে সিএবি?
যদিও খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পুরোটাই হচ্ছে শুধু নিয়মমাফিক। যাতে কোথাও কোনও গরমিলের অভিযোগ না ওঠে, সেটার জন্যই। আসলে নাকি ঠিকই হয়ে আছে যে, যাঁরা যে দলের দায়িত্বে ছিলেন, সেই দলেই ফিরবেন। গত মরশুমে বাংলার সিনিয়র পুরুষ দলের দায়িত্বে ছিলেন লক্ষ্মীরতন শুক্ল। সঙ্গে কোচ হিসাবে সৌরাশিস ও শিবশঙ্কর। জয়ন্ত ঘোষ দস্তিদার ছিলেন অনূর্ধ্ব ২৩ দলের কোচ। সঞ্জীব সান্যাল ছিলেন অনূর্ধ্ব ১৯ দলের কোচ। সৌরভ সরকার ও অরিন্দম দাস ছিলেন অনূর্ধ্ব ১৬ দলের কোচ। মহিলাদের সিনিয়র দলের কোচ ছিলেন প্রবাল দত্ত। অনূর্ধ্ব ১৯ দলের কোচ ছিলেন চরণজিৎ সিংহ। এঁরা সকলেই বেঙ্গল প্রো টি-২০ লিগে কোনও না কোনও দলে যুক্ত ছিলেন। কেউ হারবার ডায়মন্ডসের সঙ্গে, তো কেউ মুর্শিদাবাদ কিংস, মেদিনীপুর উইজার্ডস, কলকাতা টাইগার্স দলের সঙ্গে।
কোচেদের ইস্তফা দেওয়ার সময় থেকেই প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়ে ছিল যে, প্রত্যেককেই নিজ দায়িত্বে ফেরানো হবে। তবে প্রশ্ন থাকছে অন্য জায়গায়। গত মরশুমে পুরুষদের অনূর্ধ্ব ২৩ দলের কোচ করা হয়েছিল পার্থসারথী ভট্টাচার্যকে। তিনি খেলেছেন পাঁচটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। প্রবাল দত্ত খেলেছেন ১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। ১৫ ম্যাচ খেলার যোগ্যতামান মানা হলে তাঁদের কি ছেঁটে ফেলা হবে? অনেকেই দেখতে কৌতূহলী।
এদিকে, ভিশন ২০২০-র পর ভিশন ২০২৮ প্রকল্প শুরু করতে চলেছে সিএবি। সেখানে পেসারদের কোচ করা হয়েছে বেঙ্কটেশ প্রসাদকে। ব্যাটারদের কোচ মনোজ তিওয়ারি। স্পিনারদের কোচ নরেন্দ্র হিরওয়ানি। ৩০ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত চলবে ভিশন ২০২৮ প্রকল্পের প্রথম দফার শিবির।
আরও পড়ুন: বিপজ্জনক বুমরার ২৪ বলই ম্যাচের রং পাল্টে দিতে পারে, দ্রাবিড়ের জন্য কাপ জিতুক ভারত
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।