কলকাতা: ফাস্টবোলারের কাছে মাঠের সবচেয়ে প্রিয় দৃশ্য কী?
যে কোনও ক্রিকেটারকে জিজ্ঞেস করলে একই উত্তর পাওয়া যাবে। ব্যাটারের স্টাম্প উপড়ে দেওয়ার মুহূর্ত। ব্যাটার যেন বিশ্বাসই করতে পারবেন না যে, কীভাবে কী হয়ে গেল। ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দেখবেন, উইকেট মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। বেল ছিটকে গিয়ে পড়েছে কয়েক হাত দূরে। ফাস্টবোলারের কাছে গর্বের ছবি।
৩৬০ দিন পর মাঠে ফিরে প্রথম দিন ১০ ওভার বল করে উইকেটহীন ছিলেন মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। দ্বিতীয় দিন নিলেন ৪ উইকেট। যার মধ্যে তিনটি বোল্ড। একটি কট বিহাইন্ড। যে কোনও পেসারের কাছে মহাতৃপ্তির ছবি। বাংলা বনাম মধ্য প্রদেশ ম্যাচে প্রথম দিন শামির বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ১০-১-৩৪-০। বৃহস্পতিবার, ম্যাচের দ্বিতীয় দিন সেই শামিই আরও ৯ ওভার বল করে তিনটি মেডেন-সহ আর মাত্র ২০ রান খরচ করে নিলেন ৪ উইকেট। বাংলার প্রথম ইনিংসে তোলা ২২৮ রানের জবাবে মধ্য প্রদেশের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গেল মাত্র ১৬৭ রানে। জবাবে দ্বিতীয় দিনের শেষে বাংলার স্কোর ১৭০/৫। মধ্য প্রদেশের চেয়ে ২৩১ রানে এগিয়ে বাংলা।
কেমন দেখলেন শামিকে? রঞ্জি ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের খেলার শেষে ইনদওর থেকে মোবাইল ফোনে বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল এবিপি আনন্দকে বললেন, 'ঠিক ১৭ বছর আগে ওকে যেরকম দেখেছিলাম। সাফল্যের অসম্ভব খিদে ছিল যার। বল হাতে সেই জেদ, সংকল্প। চোখের দৃষ্টিতে সেই ছটফটানি। বল হাতে একইরকম আগুন। বুধবার ১০ ওভার বল করলেও একটু ছন্দের অভাব ছিল। আজ সব খামতি মিটিয়ে দিয়েছে। দুরন্ত ছন্দে রয়েছে।'
ক্রিকেটের টানে যিনি উত্তর প্রদেশ থেকে কলকাতায় এসেছিলেন। সিএবি-র ক্লাব ক্রিকেটে খেলে প্রথমে নজরে পড়া। তারপর বাংলা দলে সুযোগ। সেখান থেকে ভারতীয় দলের পেস অস্ত্র হয়ে ওঠা। শামির পুরো সফরই সামনে থেকে দেখেছেন লক্ষ্মীরতন। একসঙ্গে খেলেওছেন দীর্ঘদিন। বলছিলেন, 'শামির নতুন করে প্রমাণ করার কিছু নেই। ওর জীবনযাত্রা ভীষণ সাধারণ। মাটির মানুষ। সেই জন্যই ক্রিকেটার হিসাবে এই উচ্চতা স্পর্শ করেছে। শামি সকলের কাছে উদাহরণ। তরুণ ছেলেদের বলেছি ওর দায়বদ্ধতা দেখে শিখতে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত সাফল্যের পরেও বাংলার জার্সিতে নিজেকে নিংড়ে দিতে দুবার ভাবে না।'
ম্যাচে সুবিধাজনক জায়গায় বাংলা। তবে লিড অন্তত সাড়ে তিনশো রানের না হলে স্বস্তি নেই লক্ষ্মীর। বলছিলেন, 'দ্বিতীয় ইনিংসে আমাদের ব্যাটাররা ক্রিজে সেট হয়ে গিয়েও আউট হয়েছে। সেটা মোটেও খুশি হওয়ার মতো বিষয় নয়। আমাদের শুক্রবার যতটা বেশি সম্ভব রান তুলতে হবে। অন্তত দুটো সেশন ব্যাট করতে হবে। পিচ সহজ হয়ে আসছে। তবে আমরা ৬ পয়েন্টের জন্যই ঝাঁপাব।'
সরাসরি ম্যাচ জিততে বাংলা শিবিরের সবচেয়ে বড় ভরসা সেই শামিই।
আরও পড়ুন: এশিয়া কাপের ভারতীয় দলে সুযোগ, পা মাটিতে রেখে চলতে চান বাংলার পেসার যুধাজিৎ
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।