কলকাতা: আইপিএলের শেষ সপ্তাহ হাজির। মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে ট্রফির জন্য চূড়ান্ত যুদ্ধ। কোয়ালিফায়ার ওয়ানে মুখোমুখি চেন্নাই সুপার কিংস ও গুজরাত টাইটান্স (CSK vs GT)। আইপিএলের সেরা পাঁচ খবর এক ঝলকে।
ধোনি-হার্দিক দ্বৈরথ
হার্দিক পাণ্ড্য (Hardik Pandya) নিজে বলেন, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির (MS Dhoni) কাছেই তিনি নেতৃত্বের পাঠ পেয়েছেন। সেই ধোনির দলের বিরুদ্ধেই পরীক্ষা দিতে নামছেন ক্যাপ্টেন হার্দিক। আইপিএলের কোয়ালিফায়ার ওয়ানে। যে ম্যাচে যুযুধান গুজরাত টাইটান্স ও চেন্নাই সুপার কিংস। জিতলেই ফাইনালে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ। পয়েন্ট টেবিলে প্রথম দুইয়ে শেষ করার পুরস্কারও পাবে দুই দল। যারাই হারুক না কেন, ফাইনালে ওঠার আরও একটি সুযোগ পাবে।
ধোনির অধিনায়কত্বের সঙ্গে অনেকে হার্দিকের নেতৃত্ব দেওয়ার ধরনের মিল পাচ্ছেন। সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর ভরসা দেখানো, জুনিয়র ক্রিকেটারদের দায়িত্ব দেওয়া, গোটা দলকে মানসিকভাবে তরতাজা রাখা... হার্দিক যে ক্যাপ্টেন কুলের ছায়া। পুরস্কারও পেয়েছেন। গত মরসুমে প্রথমবার নেমেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে গুজরাত টাইটান্স। হার্দিকের নেতৃত্বে।
একটা সময় বিজয় শঙ্করকে জাতীয় দলে হার্দিকের প্রতিপক্ষ মনে করা হতো। সেই শঙ্করকেই দুর্দান্তভাবে কাজে লাগাচ্ছেন হার্দিক। নূর আমেদ, জশ লিটলের মতো তরুণদেরও দুর্দান্তভাবে কাজে লাগাচ্ছেন। ঠিক যেভাবে অজিঙ্ক রাহানের মতো সিনিয়রদের থেকে সেরাটা বার করে আনছেন ধোনি। বা তুষার দেশপাণ্ডে, মাথিশা পাথিরানার মতো তরুণের ভরসায় সিএসকে বোলিংকে টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা করে তুলেছেন ক্যাপ্টেন কুল। বেন স্টোকসের মতো মহাতারকার অভাব বুঝতেই পারা যাচ্ছে না ধোনির বিচক্ষণতায়।
শিবম দুবের মতো ধারাবাহিকতার অভাবে ভোগা ক্রিকেটারকে ছক্কার সম্রাট বানিয়ে দিয়েছেন ধোনি। যিনি ক্রিজে থাকা মানে একের পর এক বল উড়ে যাচ্ছে গ্যালারিতে। তুুষার দেশপাণ্ডের নো বলের সমস্যা কেটে গিয়ে তিনিই এখন সিএসকে-র সেরা উইকেটশিকারি। রাহানের মতো টেস্ট ব্যাটারের তকমা পেয়ে যাওয়া ক্রিকেটারের ব্যাটে চার-ছক্কার ফুলঝুরি।
দুই দলের তুল্যমূল্য লড়াইয়ে সিএসকে সামান্য সুবিধা পেতে পারে কারণ, খেলা ধোনিদের ঘরের মাঠে। চিপকে। যে মাঠে ধোনিদের ম্যাচ মানে হলুদ সমুদ্রে পরিণত হবে গ্যালারি। ম্যাচ জুড়ে চলবে হুইসল পোড়ু। যা মনে করিয়ে দেয় ভুভুজেলাকে।
গুজরাতের সবচেয়ে বড় কাঁটা ক্লান্তি। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলে বেঙ্গালুরু থেকে সোমবারই চেন্নাই উড়ে গিয়েছেন হার্দিকরা। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাঠে নেমে পড়তে হবে। তবে জিতলেই ঘরের মাঠে ফাইনালে খেলার সুযোগ পাবেন হার্দিকরা। ২০১১ ও ২০১২ সালে পরপর দুই মরসুম ঘরের মাঠে ফাইনাল খেলেছিল সিএসকে।
গিলের ছবি ভাইরাল
কোমরে জড়ানো সাদা তোয়ালে। সুঠাম শরীর। চোখধাঁধানো সিক্স প্যাক। নায়ক নেচে নেচে গেয়ে চলেছেন, 'জব সে তেরে নয়না, মেরে নয়নো সে...'
বলিউডে নায়কোচিত এন্ট্রি নিয়েছিলেন রণবীর কপূর (Ranvir Kapoor)। সঞ্জয় লীলা ভংশালীর সাওয়ারিয়া সিনেমায়। নারীহৃদয়ে তোলপাড় ফেলেছিল রণবীরের সেই রূপ।
সাওয়ারিয়ার রণবীরকে মনে পড়ালেন শুভমন গিল (Shubman Gill)। সেই একইরকম সুঠাম শরীর। সিক্স প্যাক। ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত। কোমরে জড়ানো শুধু তোয়ালে। নিজেই নিজের ছবি তুলে পোস্ট করেছেন শুভমন।
যে ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে। শুধু ইনস্টাগ্রামেই প্রায় ১১ লক্ষ মানুষ ছবিটি লাইক করেছেন। ফেসবুকেও প্রায় ১ লক্ষ মানুষ লাইক করেছেন ছবিটি। সঙ্গে কমেন্টের বন্যা।
কোহলির নতুন লুক
ষোড়শ আইপিএল (IPL 2023) দুর্দান্ত কেটেছে বিরাট কোহলির (Virat Kohli)। তাঁর দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের (RCB) ট্রফি খরা কাটেনি। ফের খালি হাতেই টুর্নামেন্ট শেষ হয়েছে আরসিবির। আইপিএল জয়ের স্বাদ থেকে বঞ্চিত কোহলিও। তবে ব্যাটার কোহলি ছিলেন অনবদ্য ছন্দে। জোড়া সেঞ্চুরি করেছেন টুর্নামেন্টে। পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন। সব মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে ৬৩৯ রান কিংগ কোহলির।
তবে ব্যাটার কোহলির পাশাপাশি চর্চা শুরু হয়েছে তাঁর নতুন লুক নিয়েও। বাঁ কানে পিয়ার্সিং করিয়েছেন কোহলি। পরেছেন দুলও। বিরাটের যে লুক দেখা গিয়েছে রবিবার আরসিবি বনাম গুজরাত টাইটান্স ম্যাচে। যে ম্যাচে সেঞ্চুরি করেও দলকে জেতাতে পারেননি কোহলি। তবে তাঁর কানে দুল পরা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
অভিযোগ ওড়াল কেকেআর
কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম লখনউ সুপার জায়ান্টস (KKR vs LSG) ম্যাচে মোহনবাগানপ্রেমীদের মাঠে এসে ক্রুণাল পাণ্ড্যদের সমর্থন করার ডাক দিয়েছিলেন এলএসজি-র কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। আইএসএল চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের সবুজ-মেরুন জার্সি পরে মাঠে নেমেছিলেন ক্রুণাল-মার্কাস স্টোইনিসরা।
কিন্তু সেই ম্যাচে সবুজ-মেরুন জার্সি পরে মাঠে ঢোকার সময় মোহনবাগান সমর্থকদের বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ওঠে। এমনকী, মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট কর্তা দেবাশিস দত্ত এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি পর্যন্ত দেন। যদিও সমস্ত অভিযোগ খারিজ করল কেকেআর। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হল, ইডেন জনতা তাঁদের গর্ব। ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঠে ঢোকার সময় আটকানোর কোনও প্রশ্নই নেই। যা খবর বেরিয়েছে, সবটাই ভুয়ো।
কোহলির বার্তা
জোড়া মরণ-বাঁচন ম্যাচ। আর দু'বারই ঝলসে উঠল রাজার অস্ত্র। জোড়া শতরান হাঁকিয়ে কিং কোহলি বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর ব্যাটে এখনও বারুদের অভাব নেই। শুভমন গিলের দুর্ধর্ষ পাল্টা শতরানে গুজরাট টাইটান্সের (Gujrat Titans) কাছে ম্যাচ হেরে আইপিএলের প্লে-অফের সমীকরণ থেকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে বিদায় নিতে হলেও বিশের মঞ্চে এখনও বিরাটের ব্যাটিং-বিক্রম যে একই উচ্চমার্গের, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন কোহলি। পাশাপাশি নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে জানাতে গিয়ে বিরাট কোহলির বার্তা, 'ফুরিয়ে যাইনি'।