গুয়াহাটি: আইপিএলের (IPL) ১১তম ম্যাচে বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে রাজস্থান রয়্যালসের মুখোমুখি হয়েছিল দিল্লি ক্য়াপিটালস (RR vs DC)। এই ম্যাচেই দিল্লির হয়ে নিজের অভিষেক ঘটান মণীশ পাণ্ডে (Manish Pandey)। দিল্লি জার্সিতে ব্যাটে নেমেই বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের বিশেষ তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেললেন কর্ণাটকের তারকা ব্যাটার।
এবারের নিলামে মণীশকে ২.৪০ কোটি টাকায় দলে নিয়েছে রাজধানীর ফ্র্যাঞ্চাইজি। আইপিএলের একেবারে প্রথম মরসুম থেকেই খেলে আসছেন ৩৩ বছর বয়সি মণীশ পাণ্ডে। আজকের ম্যাচে মাঠে নামায় ১৬তম মরসুমেও খেলে ফেললেন মণীশ। তিনি মাত্র সপ্তম খেলোয়াড় হিসাবে প্রতিটি আইপিএলে অন্তত একটি ম্যাচ খেলার কৃতিত্ব নিজের নামে করলেন। এই তালিকায় বিরাট কোহলি, ধোনি, রোহিত শর্মারাও রয়েছেন। মণীশ এখনও পর্যন্ত আইপিএলে মোট ১৬০টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। তিনি টুর্নামেন্টের সর্বকালীন ইতিহাসে রান করার বিচারে ১৬ নম্বরে রয়েছে। আইপিএলে এখনও পর্যন্ত মণীশ মোট ৩৬৪৮ রান করেছেন। অবশ্য এদিন তিনি এক রানও যোগ করতে পারেননি। ট্রেন্ট বোল্টের বলে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন মণীশ।
ম্যাচের বিবরণ
এদিন টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। সকলকে খানিকটা চমকে দিয়েই দিল্লি একাদশ থেকে বাদ দেওয়া হয় পৃথ্বী শকে। ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে দুই রাজস্থান ওপেনার যশস্বী জয়সবাল ও জস বাটলার শুরুটা দারুণভাবে করেন। খলিল আমেদের প্রথম ওভারেই পাঁচ পাঁচটি চার হাঁকান যশস্বী। পাওয়ার প্লেতেই বিনা উইকেটে ৬৮ রান তুলে ফেলে রাজস্থান। যশস্বীই বেশি আক্রমক ভঙ্গিমায় ব্যাট করছিলেন। মাত্র ২৫ বলে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন তিনি।
দুই ওপেনারের দুরন্ত ব্যাটিংয়ে তরতরিয়ে এগিয়ে যাওয়া রাজস্থান ইনিংসে লাগাম লাগান মুকেশ কুমার। ৬০ রানে যশস্বীকে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি। ৯৮ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপ ভাঙে। যশস্বী আউট হওয়ার পরেই নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে ম্যাচ প্রত্যাবর্তন ঘটায় দিল্লি। সঞ্জু স্যামসন (০), রিয়ান পরাগ (৭) বড় রান করতে ব্যর্থ হন। তবে যখনই মনে হচ্ছিল দিল্লি ম্যাচের রাশ সম্পূর্ণভাবে নিজেদের দখলে নিয়ে নেবে, তখনই আক্রমণ শুরু করেন বাটলার।
গত মরসুমে ওয়াংখেড়ে দিল্লির বিরুদ্ধে ১১৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ইংল্যান্ড তারকা বাটলার। এদিন আবারও নিজের শতরানের দিকে এগোচ্ছিলেন তিনি। তবে এবারও দিল্লির ত্রাতা হয়ে উঠেন মুকেশ। ৭৯ রানে বাটলরাকে বাংলার ফাস্ট বোলারই সাজঘরে ফেরত পাঠান। শিমরন হেটমায়ার অবশ্য ৩৯ রানের ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। তবে দু'শোর গণ্ডি পার করতে পারেনি রাজস্থান। এদিন দুই উইকেট নেওয়া মুকেশই দিল্লির সফলতম বোলার। তিনি ছাড়া কুলদীপ যাদব ও রভম্যান পাওয়েল একটি করে উইকেট নেন।
রাজস্থান ওপেনার জয়সবাল নিজেদের ব্যাটিং ইনিংসের প্রথম ওভারে পাঁচটি চার মেরেছিলেন। দিল্লির ব্য়াটিং ইনিংসে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছবি। ট্রেন্ট বোল্ট বল হাতে আগুন ঝরালেন। বোল্টের সুইংয়ে পরাস্ত হয়ে খাতার খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন পৃথ্বী ও মণীশ পাণ্ডে। পাওয়া প্লে শেষ হওয়ার আগেই রাইলি রুসোও সাজঘরে ফেরেন। ৩৬ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে দিল্লি ক্যাপিটালস। শুরুতেই পরপর ধাক্কা খেলেও ডেভিড ওয়ার্নার ও ললিত যাদব চতুর্থ উইকেটে অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ গড়ে দিল্লিকে লড়াইয়ে ফেরান।
ভয়ঙ্কর হয়ে উঠা চতুর্থ উইকেট ভাঙতে রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন ফের একবার ট্রেন্ট বোল্টকে বোলিংয়ে ডেকে নেন। তিনি কিন্তু অধিনায়ককে হতাশ করেননি। ললিত যাদবকে ৩৮ রানে ফেরান বোল্ট। ললিত আউট হতেই দিল্লি খেই হারিয়ে ফেলে। ডেভিড ওয়ার্নার অর্ধশতরান করলেও, তাঁকে কেউই যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। বাংলার অভিষেক পোড়েলও মাত্র সাত রানে সাজঘরে ফেরেন। ওয়ার্নার জীবনদান পেলেও, ৬৮ রানে সাজঘরে ফেরেন। শেষমেশ দিল্লি ১৪২ রানের বেশি করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: ৪০ পেরিয়েও বল হাতে নজরকাড়া পারফরম্যান্স, নিজের সাফল্য রহস্য খোলসা করলেন অমিত মিশ্র