মুম্বই: লক্ষ্য ২১৯ রান। দুরন্ত সেঞ্চুরিতে ততক্ষণে ওয়াংখেড়ে মাতিয়ে দিয়েছেন স্কাই সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। তবু মাঠের নাম যখন ওয়াংখেড়ে, তখন গুজরাত টাইটান্সের (MI vs GT) সমর্থকেরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। এই মাঠে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ মানেই চার-ছক্কার বন্যা। ২১৯ রানও কি এই মাঠে খুব নিরাপদ?
তবে ব্যাট করতে নেমে বিপর্যয় হয় গুজরাতের। ৭.১ ওভারে স্কোর দাঁড়ায় ৫৫/১। গুজরাত সমর্থকেরা হাল ছেড়েই দিয়েছিলেন। সেখান থেকে পাল্টা লড়াই শুরু করলেন ডেভিড মিলার। ২৬ বলে ৪১ রান করলেন দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা। তবু, গেমচেঞ্জার হয়ে যাচ্ছিলেন রশিদ খান। আফগান লেগস্পিনার বিধ্বংসী ইনিংস খেললেন। একের পর এক হেলিকপ্টার শট আছড়ে পড়ল গ্যালারিতে। মাত্র ৩২ বলে ৭৯ রান করে অপরাজিত রইলেন রশিদ। তাঁর ইনিংসে মেরেছেন ১০ ছক্কা। আইপিএলে যা গুজরাত টাইটান্সের কোনও ক্রিকেটারের মারা সর্বোচ্চ সংখ্যক ছক্কা।
তবে ব্যর্থ হল রশিদের লড়াই। নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৯১/৮ স্কোরে আটকে গেল গুজরাত। মুম্বই ম্যাচ জিতল ২৭ রানে। ১২ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় তিন নম্বরে উঠে এলের রোহিত শর্মারা।
দীর্ঘদিন পর ছন্দে দেখাচ্ছিল রোহিত শর্মাকে। ব্যাটে-বলে হতে শুরু করেছিল ঈশান কিষাণের। মাত্র ৬ ওভারের মধ্যে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বোর্ডে তুলে ফেলেছিল বিনা উইকেটে ৬১ রান। সেখান থেকে প্রত্যাঘাত রশিদ খানের। সপ্তম ওভারে পরপর রোহিত শর্মা (১৮ বলে ২৯ রান) ও ঈশানকে (২০ বলে ৩১ রান) তুলে নিলেন আফগান লেগস্পিনার। মনে হচ্ছিল, হয়তো দলের সেরা স্পিনারের জাদুতে ভর করে ম্যাচে ফিরল গুজরাত টাইটান্স।
কিন্তু অন্যরকম ভেবেছিলেন সূর্যকুমার যাদব। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে পরপর তিন ম্যাচে শূন্যতে আউট হয়ে সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছিলেন স্কাই। আইপিএলের প্রথমার্ধেও তিনি ম্লান ছিলেন। কিন্ত টুর্নামেন্ট যত এগোচ্ছে, পরিচিত ছন্দে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। শুক্রবার ৪৮ বলে সেঞ্চুরি করলেন। আইপিএলে সূর্যকুমারের প্রথম সেঞ্চুরি। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ইনিংসের শেষ বলে আলজারি জোসেফকে স্যুইপ শটে ছক্কা মেরে সেঞ্চুরি করলেন। ৪৮ বলে ১০৩ রানে অপরাজিত রইলেন সূর্য।
সৌরঝড়ের দাপটে গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স তুলেছিল ২১৮/৫।
ওয়াংখেড়েতে এক ঘণ্টা ১৩ মিনিটের বিনোদনে ১১টি চার ও ৬টি ছক্কা মেরেছেন সূর্য। এ বি ডিভিলিয়ার্সের মতো উইকেটের চারপাশে শট খেলতে পারেন বলে সূর্যকুমারকে বলা হয় বিশ্ব ক্রিকেটের নতুন মিস্টার থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি। ২১০ স্ট্রাইক রেট রেখে বিধ্বংসী ইনিংস খেললেন তিনি। একমাত্র রশিদ খানকে কিছুটা সমীহ করলেন। ৪ ওভারে ৩০ রান খরচ করে ৪ উইকেট নিলেন রশিদ। পার্পল ক্যাপ ছিনিয়ে নিলেন যুজবেন্দ্র চাহালের কাছ থেকে। চলতি আইপিএলে ২৩টি উইকেট হয়ে গেল রশিদের। ব্যাটে-বলে অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সের পরেও অবশ্য খালি হাতেই মাঠ ছাড়তে হল আফগান তারকাকে।
আরও পড়ুন: ৩ ম্যাচে ৪০ রান করে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন, সেই যশস্বীর ব্যাটেই আইপিএলে রেকর্ড