সন্দীপ সরকার, কলকাতা: একটা সময় ইডেন গার্ডেন্স (Eden Gardens) ছিল তাঁর ঘরের মাঠ। বাংলার হয়ে অনবদ্য সমস্ত ম্যাচ খেলেছেন এই মাঠে। ব্যাট হাতে, উইকেটের পিছনে গ্লাভস পরেও দলের রক্ষাকর্তা হয়ে হাজির হয়েছেন বারবার। আইপিএলে তাঁর কেরিয়ার শুরু হয়েছিল ঘরের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের (Kolkata Knight Riders) জার্সিতেই। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শাহরুখ খান-জুহি চাওলার দলে খেলেছেন।
সেই ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha) এখন নিজের মাঠেও অতিথি। কারণ, আইপিএলে তাঁকে কেকেআর কবেই ব্রাত্যজনের দলে ফেলে দিয়েছিল। গত দুই মরসুম ধরে তিনি খেলছেন গুজরাত টাইটান্সে। পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটেও আর বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেন না তিনি। সিএবি-র এক পদাধিকারী তাঁর দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। অভিমানে বাংলা ছেড়ে ত্রিপুরায় যোগ দেন বঙ্গ উইকেটকিপার-ব্যাটার।
তবু শুক্রবার-শনিবার দিনগুলি তাঁর কাছে একটু আলাদা। বিশেষ তাৎপর্যের। কারণ, 'ঘরের মাঠে' ফিরেছেন ঋদ্ধিমান। যে মাঠ থেকে তাঁর সুপারম্যান হওয়ার যাত্রা শুরু হয়েছিল, ভারতীয় ক্রিকেটেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সূচনা হয়েছিল, সেই মাঠেই ম্যাচ খেলবেন। শিলিগুড়ির ক্রিকেটার অবশ্য ইডেনকে আর নিজের হোমগ্রাউন্ড বলতে চান না। কিছুটা অভিমানেই কি?
শনিবার ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচ কেকেআরের। তার আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে ঋদ্ধি বললেন, 'ইডেন এখন আমার হোমগ্রাউন্ড নয়। আইপিএলে গুজরাতের হয়ে খেলি। মোতেরা এখন আমার ঘরের মাঠ। ইডেনে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে এসেছি। তবে কলকাতা আমার শহর। প্রচুর ম্যাচ খেলেছি এই মাঠে। কেকেআরের বিরুদ্ধে জিততে মরিয়া থাকব।'
গতবারের চ্যাম্পিয়ন। এবারের টুর্নামেন্টেও ভাল জায়গায়। খেতাব রক্ষার লড়াইয়ে নিজেদের মোটিভেট করেন কীভাবে? ঋদ্ধি বলছেন, 'গতবার আমরা ভাবিনি চ্যাম্পিয়ন হব। ম্যাচ ধরে ধরে এগিয়েছি। প্রত্যেক ম্যাচে ধারাবাহিকভাবে ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করেছিলাম। সফলও হয়েছি। এবার আমাদের মূল দলটা একই রয়েছে। খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। একই পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলছি।'
আরও পড়ুন: গুণের 'খনি', কিন্তু কখন স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর কমলা লেবু ?
গুজরাতের কোন শক্তির কথা ভেবে চিন্তায় থাকতে পারে কেকেআর? ঋদ্ধিমান পরিণত গলায় জানাচ্ছেন, কোনও দলকেই ছোট করতে চান না। বলছেন, 'লিগ টেবিলের দিকে যদি দেখেন, আমরা হয়তো ওপরের দিকে আছি। তবে কোনও দলই ছোট নয়। যে কোনও দল যে কোনও দলকে হারাতে পারে। ওদের দলকে যথেষ্ট সমীহ করছি। যে কোনও দলই ম্যাচ জিততে পারে।'
তিনি এই আইপিএলে একটাও হাফসেঞ্চুরি করেননি। সর্বোচ্চ ৪৭। তবে ঝোড়ো ইনিংস খেলছেন। শুভমন গিলের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করে দ্রুত গতিতে রান তুলছেন। নিজের হাফসেঞ্চুরি, নাকি দলের জন্য ঝোড়ো ব্যাটিং? ঋদ্ধিমান বলছেন, 'অবশ্যই দলকে ভাল শুরু দেওয়াটা আমার প্রধান লক্ষ্য। হাফসেঞ্চুরি নয়, স্ট্রাইক রেট ভাল রেখে দ্রুত রান তুলতে চাই। তাতে যদি আমি ৩০ রান করি আর দল জেতে, তাতেই আমি খুশি।'