নয়াদিল্লি: প্যারিস অলিম্পিক্সে (Paris Olympics) দেশের হয়ে পদক নিশ্চিত করে ফেলেছিলেন তিনি। মহিলাদের কুস্তিতে ৫০ কেজি ফ্রি স্টাইল বিভাগের ফাইনালে উঠেছিলেন। কিন্তু ফাইনালের দিন সকালে আছড়ে পড়ে চরম দুঃসংবাদ। জানা যায়, নির্দিষ্ট পরিমাপের চেয়ে মাত্র ১০০ গ্রাম ওজন বেশি হওয়ায় বাতিল হয়ে গিয়েছেন বিনেশ ফোগত (Vinesh Phogat)। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে আবেদন করেও লাভ হয়নি। নাকচ হয়ে গিয়েছে বিনেশের দাবি।


সেই ঘটনার পর প্রথমবার প্রতিক্রিয়া দিলেন ভারতের তারকা কুস্তিগীর। শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন বিনেশ। তিনি লেখেন, 'ছোটবেলা জানতাম না অলিম্পিক্স রিংয়ের অর্থ কী। বাচ্চা বয়সে আমি শুধু ভাবতাম, লম্বা চুল রাখব। হাতে মোবাইল ফোন নিয়ে থাকব। যেরকম আর পাঁচটা মেয়ে সেই বয়সে ভেবে থাকে আর কী।'


বিনেশ আরও লিখেছেন, 'আমার বাবা সাধারণ বাস ড্রাইভার ছিলেন। স্বপ্ন দেখতেন, আমি বিমান চালাব আর একদিন এমন আসবে যখন বাবা রাস্তায় বাস চালাবেন আর আমি তাঁরই মাথার ওপর দিয়ে বিমান নিয়ে উড়ে যাব। বাবার মৃত্যুর পর মায়ের ক্যান্সার স্টেজ থ্রি ধরা পড়ে। সেখান থেকে একাকী মায়ের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের তিন বাচ্চার লড়াই শুরু হয়।' বিনেশ যোগ করেছেন, 'মায়ের নাছোড় মানসিকতা দেখে, পরিশ্রম দেখে অনেক কিছু শিখেছি। তাঁর থেকেই এত লড়াই করতে শিখেছি। মা সব সময় বিশ্বাস করতেন, ঈশ্বর যা করেন ভালর জন্যই। সেই জন্যই হয়তো সোমবীরকে স্বামী হিসাবে পাওয়া। যে আমার জন্য নিজের সব স্বার্থ ত্যাগ করতে প্রস্তুত থেকেছে সব সময়।'


বিনেশের বিবৃতিতে উঠে এসেছে চোটের সঙ্গে লড়াই, যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে কুস্তিগীরদের প্রতিবাদের কথাও। তিনি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন চিকিৎসক দীনশ পার্ডিওয়ালা, কোচ ওলার অ্যাকোস, সাপোর্ট স্টাফ ওয়েন প্যাট্রিক, অশ্বিনী জীবন পাটিল, তজিন্দর কৌর, গগন নারাঙ্গ, অলিম্পিক্স গোল্ড কোয়েস্টের সদস্যদের।


 






প্যারিস অলিম্পিক্সের পরই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিনেশ। সেই সিদ্ধান্ত কি পাল্টাবেন? বিনেশ লিখেছেন, 'হয়তো অন্য পরিস্থিতিতে ২০৩২ সাল পর্যন্ত নিজেকে কুস্তি করতে দেখব। কারণ আমার মধ্যের লড়াই, আমার কুস্তি সব সময় থেকে যাবে। জানি না ভবিষ্যতে আমার জন্য কী অপেক্ষা করে রয়েছে। তবে আমি নিশ্চিত সত্যের জন্য সব সময় লড়াই করে যাব।'


আরও পড়ুন: মেন উইল বি মেন, তাই না? আর জি কর কাণ্ডে গর্জে উঠলেন মহম্মদ সিরাজ়