জুরিখ: ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালে টাইব্রেকারের নায়ক তিনি। আর্জেন্তিনাকে চ্যাম্পিয়ন করার নেপথ্যে অন্যতম প্রধান ভূমিকা ছিল গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজের (Emiliano Martinez)। প্রথমে কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডস ও পরে ফাইনালে ফ্রান্সকে হারাতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। তেকাঠির নীচে কার্যত অপ্রতিরোধ্য ছিলেন। তবে বিতর্কও হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, প্রতিপক্ষ ফুটবলারের মনোযোগ নষ্ট করার জন্য অন্যায্য কাজ করেছেন তিনি।
মার্তিনেজের জন্য এ বার বদলে যেতে পারে পেনাল্টির নিয়ম! ফিফা সূত্রে সেরকমই খবর। এ ব্যাপারে ফিফা ইতিমধ্যেই ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে।
কী হতে পারে নতুন নিয়ম?
শোনা যাচ্ছে, পেনাল্টি নেওয়ার সময় গোলরক্ষকদের নড়াচড়ায় আরও বিধিনিষেধ আসতে পারে। এতে আরও কঠিন হবে গোলরক্ষকদের পরিস্থিতি। কারণ, সেই নিয়ম চালু হয়ে গেলে স্ট্রাইকারকে বিরক্ত করা যাবে না। অযথা দেরি করাতে পারবেন না গোলকিপাররা। এই সংক্রান্ত নতুন নিয়মের খসড়া করে মার্চ মাসে লন্ডনে অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভার বৈঠকে তা পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে নান অঙ্গভঙ্গিতে বিপক্ষের পেনাল্টি নিতে আসা ফুটবলারকে বারবার বিভ্রান্ত করেছেন মার্তিনেজ। এমনকী, ফ্রান্সের ফুটবলারদের পেনাল্টি শ্যুট আউটের শট নেওয়ার আগে যাতে বল কিছুটা দূরে গিয়ে নিয়ে আসতে হয়, সেটা নিশ্চিত করতে বারবার বল দূরে পাঠানোর অভিযোগও উঠেছিল মার্তিনেজের বিরুদ্ধে।
অনেকেই মনে করেন, ফাইনালে ফরাসি ফুটবলারদের মনঃসংযোগ ভাঙতে মার্তিনেজের এই অঙ্গভঙ্গির ভূমিকা ছিল। ভবিষ্যতে যাতে আর্জেন্তিনীয় গোলকিপারের মতো কাজ কেউ করতে না পারেন, সেই জন্য এখন থেকেই সচেষ্ট হয়েছে ফিফা।
প্রসঙ্গত চলতি বছরের মার্চেই লন্ডনে বোর্ড মিটিং রয়েছে আন্তর্জাতিক এফএ বোর্ডের। সেখানে লিখিতভাবে ফিফার নিয়মে বদল আনা হতে পারে। যাতে ছলচাতুরি করে গোলকিপার পেনাল্টি-টেকারকে বিভ্রান্ত না করতে পারেন, সেই বিষয়টি মাথায় রাখা হবে। বিশ্বকাপের ফাইনালে টাইব্রেকারের সময় মার্তিনেজ ফ্রান্সের কিংসলে ক্যোমানের মনঃসংযোগ নষ্টের জন্য তাঁকে অপেক্ষা করান। রেফারির সঙ্গে কথা চালিয়ে যান। বারবার রেফারিকে বলেন কোম্যান বল ঠিকমতো জায়গায় বসাচ্ছেন কি না, তা যেন খেয়াল রাখেন। অন্যদিকে চুয়ামেনি শট নেওয়ার ঠিক আগেই মার্তিনেজ বল তুলে দূরে ছুড়ে ফেলেন। তিনিও এরপর পেনাল্টি মিস করেন। ফলে কাতারে ফাইনালে ফ্রান্সের হয়ে পেনাল্টি নিতে এসে চুয়ামেনি ও কিংসলে ক্যোমান দুজনেই মিস করে বসেন। পেনাল্টিতে শেষমেশ আর্জেন্তিনা ৪-২ গোলে জিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়।