কলকাতা: তিনি যখন শেষবার বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফি (Ranji Trophy) খেলেছিলেন, করোনার অভিশাপ বিশ্বকে গ্রাস করেনি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বাঁধেনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসন। আফগানিস্তান ফের তালিবানদের কবলে চলে যায়নি।


২০১৬-১৭ মরসুমে নাগপুরে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে খেলার পরই যেন হারিয়ে গিয়েছিলেন সায়নশেখর মণ্ডল (Sayansekhar Mondal)। প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর রঞ্জি ট্রফিতে নাটকীয় প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে ক্রিজে সেট হয়ে গিয়েও আউট হয়ে গিয়েছিলেন। দুই ইনিংসে রান ছিল ৩৪ ও ১৭। সঙ্গে বল হাতে এক উইকেট। চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে তাই নিজের কাছেই নিজে শপথ করেছিলেন অলরাউন্ডার। আর যাই হোক, লড়াই ছাড়ব না। ব্যাট করতে নেমে উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসব না।


মরিয়া সেই সংকল্পের প্রতিফলন শুক্রবার দেখা গেল বাইশ গজে। চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে ৯৭ রান করে অপরাজিত রইলেন। মাত্র তিন রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া হলেও, বাংলাকে চালকের আসনে বসিয়ে দিলেন। পরে বল হাতেও নিলেন জোড়া উইকেট। ৮ ওভারে মাত্র ১০ রান খরচ করে।


নাটকীয় প্রত্যাবর্তন ঘটানোর নেপথ্যে রয়েছে কোন মন্ত্র? কটক থেকে মোবাইল ফোনে এবিপি লাইভকে সায়নশেখর বললেন, 'ঠিক করে নিয়েছিলাম, আর যাই হোক, উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসব না। ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে থাকব। বল দেখো, খেলো। এই মন্ত্র মেনেই ব্যাট করেছি।'


প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মাত্র তিন রানের জন্য দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হাতছাড়়া হয়েছে। সায়নশেখর বলছেন, 'আক্ষেপ থাকবে। আর ২-৩টে বল পেলে হয়ে যেত। সেঞ্চুরির সামনে থেমে যেতে হল।'


প্রথমে বাংলা দলে সুযোগ। তারপর আইপিএল। কলকাতা নাইট রাইডার্সে ছিলেন। কিন্তু তারপর ধারাবাহিকতা না দেখাতে পারায় বাদ পড়েন। চোট আর খারাপ ফর্মে যেন মাঠ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছিলেন। সেখান থেকে নাটকীয় প্রত্যাবর্তন। বাংলার জার্সিতে ফিরে নিজেকে কী বলেছিলেন? সায়নশেখর বলছেন, 'নিজেকে বলেছিলাম, খেলাটা যেন চাকরি করার মতো না হয়। উপভোগ করতে চেয়েছি। মন দিয়ে খেলব। প্র্যাক্টিস করব। পরিশ্রম করলে ফল পাবই। ভাল লাগছে দলের হয়ে অবদান রাখতে পেরে।'


চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে সরাসরি জয় নিয়েও আশাবাদী সায়ন। বলছেন, 'ম্যাচ হাতেই রয়েছে। শনিবার ওদের দ্রুত আউট করতে পারলে ফলো অন করানোর দিকে যাব।'


গুগলির অ্যাকশনে লেগস্পিন! প্রতিপক্ষ স্পিনারকেও নির্দ্বিধায় পরামর্শ দিতেন ওয়ার্ন