সন্দীপ সরকার, কলকাতা: একবার নয়। দুবার নয়। এমনকী, তিনবারও নয়। চার-চারটি রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) ফাইনাল খেলেছেন। কিন্তু ট্রফি কখনওই তাঁর নাগালে আসেনি। প্রত্যেকবারই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। মনোজ তিওয়ারি (Manoj Tiwary) এতটাই হতাশ যে, বলে দিচ্ছেন, ওপরওয়ালার সঙ্গে একবার সরাসরি যোগাযোগ করার চেষ্টা করব। জিজ্ঞেস করব, কী এমন হচ্ছে যে, বারবার ফাইনালে উঠেও হারতে হচ্ছে!
তবে তিনি, মনোজ তিওয়ারি, এখনও তাঁর রঞ্জি জয়ের স্বপ্নে ইতি টানছেন না। বরং সেই স্বপ্ন আঁকড়ে আরও খেলতে চান।
২০১৯-২০ মরসুমে রাজকোটে গিয়ে রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে সৌরাষ্ট্রের কাছে হেরেছিল বাংলা। এবার বাংলার ঘরের মাঠে বাংলাকে দুরমুশ করে দিয়ে গেল জয়দেব উনাদকটের দল। অধিনায়ক হিসাবে ট্রফি হাতে তোলার সুযোগ ছিল মনোজের সামনে। পারেননি তিনি। পারেনি তাঁর দল। রবিবার ম্যাচ শেষ হওয়ার পরই মনোজের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, খেলা চালিয়ে যাবেন? নাকি ইতি এখানেই? মনোজ অবসরের কথা ঘোষণা করে কোনও চমক দেন কি না, জানতে উদগ্রীব ছিলেন সকলে।
মনোজ অবশ্য সাফ জানিয়ে দিলেন, তিনি খেলা ছাড়ছেন না। বললেন, 'খেলা চালিয়ে যাব কি না, পরে বলব। চিন্তাভাবনা করি। রঞ্জি জেতা আমার বরাবরের স্বপ্ন। সেটা এখনও অধরা। সবাই চালিয়ে যেতে বলছে। নির্বাচক ও কোচরাও সেটাই বলছে। দেখি।'
রবিবার বাংলার দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর মনোজের উপলব্ধি, 'আজ কুয়াশা ছিল বলে পিচে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব ছিল।' যোগ করছেন, 'এখন যদি ভাবতে বসি, কোন সিদ্ধান্ত ঠিক আর কোনটা ভুল, তাহলে তো অনেক কথা বলা যায়। তবে এই ছেলেদের নিয়েই ফাইনালে পৌঁছেছি। লড়াই করতে চেয়েছিলাম। কোনওভাবে দেড়শো-দুশো রানের লিড নিতে চাইছিলাম। আমার ভুলে রান আউট হল শাহবাজ আমেদ। বলটা কতদূর গিয়েছিল, দেখতে পাইনি। এই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে হলে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভি ভি এস লক্ষ্মণ-রাহুল দ্রাবিড় যেমন ইনিংস খেলেছিল, সেরকমই ইনিংস দরকার ছিল। আমাদের কোনও লক্ষ্মণ-দ্রাবিড় পেলাম না।'
শুধু রঞ্জি জিতবেন বলে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ও রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হয়েও মাঠে নেমেছেন। প্র্যাক্টিস করেছেন নিয়মিত। স্বপ্ন ধরার জন্য আরও এক মরসুম মাঠে নামার ইঙ্গিত দিচ্ছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দশ হাজার রানের মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মনোজ।