কলকাতা: চলতি মরশুমে মোহনবাগান সুপারজায়ান্টস (Mohun Bagan Supergiants) তাদের ঘর গোছানো শুরু করল ভারতীয় দলের হয়ে খেলা মিডফিল্ডার অনিরুদ্ধ থাপাকে দিয়ে। গতবারের হিরো আইএসএল নক আউট চ্যাম্পিয়নদের যে জায়গায় কিছুটা হলেও খামতি ছিল, এ বার সেই জায়গা মেরামত দিয়েই দলবদল শুরু করল তারা।


কৌশলের ব্যাপারে যে তিনি ‘মায়েস্ত্রো’, তার প্রমাণ আগেও দিয়েছেন মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ হুয়ান ফেরান্দো। নিজের কৌশল মাথায় রেখেই প্রতিবার দল গঠন করেন তিনি। কোথায় কাকে রাখবেন, কী ভাবে খেলাবেন, তা ভেবে নিয়েই মরশুমের আগে থেকে দলগঠনের পরিকল্পনা ছকে ফেলেন তিনি। তাই তাঁর দলগঠন নিয়ে সচরাচর প্রশ্ন ওঠে না।


গতবারই শুধু একজন প্রকৃত স্ট্রাইকার তাঁর দলে না থাকা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছিল। কিন্তু দিমিত্রিয়স পেট্রাটসের মতো একজন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারকে দলের প্রধান স্ট্রাইকারে রূপান্তরিত করে হিরো আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়ে তিনি সব সমালোচকদের চুপ করিয়ে দেন।


গত মরশুমে ফেরান্দো এটিকে মোহনবাগানকে (তখন এই নামই ছিল) বিভিন্ন ফর্মেশনে খেলিয়েছেন। প্রতিটি ফর্মেশনে সবুজ-মেরুন শিবির একাধিকবার খেলেছে। ৪-২-৩-১-ই সবচেয়ে প্রিয় ফর্মেশন ছিল তাঁর কাছে। যার ফলে ২৪টি ম্যাচের মধ্যে ১৩বারই তিনি দলকে এই ফর্মেশনে খেলান। এ ছাড়াও ছ’বার কলকাতার দলকে ৪-৩-৩-য়ে খেলিয়েছেন এবং তিন ব্যাকে খেলিয়েছেন পাঁচবার।


থাপা তাঁর ফুটবলজীবনে বেশিরভাগ ম্যাচই খেলেছেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হিসেবে। কারণ, চাপের মধ্যেও মাঝমাঠে বল নিয়ন্ত্রণের কাজটা তিনি বেশ ভাল ভাবে করে থাকেন। তবে কিছু কিছু ম্যাচে যেমন তাঁকে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলতে দেখা গিয়েছে, তেমনই উইং দিয়ে আক্রমণ তৈরি করতেও দেখা গিয়েছে। কম জায়গার মধ্যেও কী ভাবে বল ধরে রাখতে হয় এবং আক্রমণকে সচল রাখা যায়, তা খুব ভাল করেই জানেন ২৫ বছর বয়সের এই ফুটবলার।


ভারতীয় দলে কোচ ইগর স্টিমাচ যেমন তাঁকে মূলত আক্রমণের অস্ত্র হিসেবেই ব্যবহার করে থাকেন, তেমনই কয়েকটি ম্যাচে তাঁকে ফলস্ নাইনের ভূমিকাতেও ব্যবহার করেছেন। শারীরিক সক্ষমতার দিক থেকে দুর্দান্ত জায়গায় না থাকাটা তাঁর কাছে সমস্যার বটে। কিন্তু নিজের দক্ষতা দিয়ে সেই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠেছেন তিনি। অনিরুদ্ধ থাপা কোনও শিবিরে চলে আসা মানেই দলের কোচের সামনে একাধিক ‘অপশন’ খুলে যাওয়া। মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের ক্ষেত্রেও সেটাই হতে চলেছে। যেখানে সমস্যা দেখা দেবে, তার সমাধানে থাপাকে চোখ বুজে ব্যবহার করতে পারবেন ফেরান্দো। সে জন্যই সময় নষ্ট না করে তাঁকে পাওয়ার কথাই সবার আগে ঘোষণা করে দেয় গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। আন্তর্জাতিক ফুটবলে চারটি গোল ও তিনটি অ্যাসিস্ট করেছেন এই তারকা ফুটবলার এ রকম একজন মিডফিল্ডার দলে আসায় মোহনবাগান মাঝমাঠের শক্তি যে অনেকটাই বাড়বে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।  


                                                                                                                                                                                                  তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল