কলকাতা: হঠাৎই হাত থেকে পিছলে গেল ফোন। মাটিতে পড়ে একেবারে চুরমারকাণ্ড। ডিসপ্লে ভেঙে তছনছ। মাথায় হাত, চোখের কোণে জল। কিন্তু এবার মুখে হাসি ফুটবে। ম্যাজিকের মতো ভাঙা ফোনই জুড়ে যাবে নিজের থেকে। শুনতে অবাক লাগলেও এমনই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন IISER এবং IIT খড়গপুরের একদল বিজ্ঞানীরা। 


আইআইটি খড়্গপুর এবং আইআইএসইআর-এর একদল বিজ্ঞানী এমনই একটি অটোমেটিক হিলিং (Automatic Healing) উপাদান আবিষ্কার করেছেন। এটি এক ধরনের ক্রিস্টাল। মজার বিষয় হল ক্রিস্টালের নিজের একটি গুণ আছে তা হল এই-স্ব মেরামতির প্রক্রিয়া। আর এই গুণটিকেই কাজে লাগিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি এই আবিষ্কারকে স্বীকৃতি দিয়েছে আমেরিকার বিখ্যাত "সায়েন্স" পত্রিকা।


বিজ্ঞানীদের দলে রয়েছেন- তিনজন প্রধান বিজ্ঞানী ও তাঁদের ৩ জন গবেষক-বিজ্ঞানী ছাত্র। আইআইএসইআর কলকাতার আর সি. মাল্লা রেড্ডি, নির্মাল্য ঘোষ এবং আইআইটি খড়্গপুরের ভানু ভূষণ খাটুয়া। গবেষকরা বলছেন যে স্ব-নিরাময়ের উপাদান এয়ারোস্পেস, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অটোমেশনে ব্যবহৃত হয়। তবে সেই উপাদানকে এবার একটু উন্নত করা হয়েছে। যা আগের উপাদানের থেকে প্রায় ১০ গুণ শক্ত। 


বল প্রয়োগ করে কোনও ক্রিস্টালকে ভাঙা বা চিড় ধরানো হলে তা ফের নিজে নিজে জুড়ে যাচ্ছে, এমনটাই দেখা গিইয়েছে গবেষণায়। যেভাবে মানব দেহে নিজস্ব মেরামতি ক্ষমতা আছে, অনেকটা তেমনই। এই ক্রস্টালগুলি যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতেও রূপান্তর করতে পারে। এর অবশ্য একটি বৈজ্ঞানিক নামও আছে- Piezoelectricity।


রোবট এবং মহাকাশযানের ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার রয়েছে। এর আগে টিস্যু এবং হাড়ের ক্ষত নিরাময়ে -নিরাময় পলিমার, জেল এবং অন্যান্য পদার্থ ব্যবহার হয়েছে। যদিও এই ক্রিস্টাল তাদের সকলের থেকেই কাজের ক্ষেত্রে একদম 'আধুনিক'।  মোবাইল ফোন, এল ই ডি স্ক্রিন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিন সরঞ্জামে ফাটল হলে স্ফটিক কঠিন পদার্থটি ফাটল বা ক্ষত মেরামত করে দেবে, এমনটাই দাবি করেছেন বিজ্ঞানী-গবেষকদের দল। এই আবিষ্কারেই এখন অবাক বিশ্ব।