কে না চায় দীর্ঘ, পরিতৃপ্ত, সুখী, রোগমুক্ত জীবন লাভ করতে? আর তার একমাত্র সহজ উপায় হল স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে জীবন যাপন করা। শুধুমাত্র নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে সুষম আহার আর দৈনিক শরীরচর্চা করলে আপনি অনেকরকমের কঠিন ব্যাধি যেমন দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা- বেদনা, অ্যাস্থমা, হাই ব্লাড প্রেশার, হার্টের অসুখ, এমনকি কিডনি ফেলিয়র এবং ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও কমিয়ে আনতে পারেন। যদি আপনি সবরকম ভিটামিন আর মিনারেল আছে এইরকম পুষ্টিকর খাবার রোজ  খান, আর প্রতিদিন অন্ততপক্ষে 30 মিনিট শরীরচর্চা করেন তাহলে সেটা শুধু আপনার শারীরিক স্বাস্থ্য নয় আপনার মানসিক স্বাস্থ্যেরও যথেষ্ট উন্নতি করবে। নিজের ওজনের ব্যাপারে যদি সচেতন থাকেন তবে আপনার হার্ট, কিডনি, লিভার ইত্যাদি অর্গ্যান এবং হাড়ের জয়েন্ট সর্বোত্তমভাবে কাজ করতে পারবে।  আপনার উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন বজায় রাখার জন্য  আপনি নিয়মিত BMI calculator ব্যবহার করতে পারেন। যদি দেখেন খাবারের মধ্য দিয়ে প্রয়োজনীয় ভিটামিন মিনারেল গুলো আপনি যথেষ্ট পরিমাণে পাচ্ছেন না তাহলে নির্দিষ্ট কিছু  হেল্থ সাপ্লিমেন্টস খাওয়ার কথা ভেবে দেখতে পারেন।


এখানে আমরা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন মিনারেলগুলির গুণাগুণ আর যে সব খাবারে সেগুলো পাওয়া যায় সেগুলি নিয়ে আলোচনা করব যাতে আপনি আপনার নিজের জন্য একটি আদর্শ খাদ্যতালিকা তৈরি করে নিতে পারেন।


ভিটামিন এ


ভিটামিন একরকমের ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন, এটিকে রেটিনলও বলা হয়। ভিটামিন - দৈনিক আর ডি (রেকমেন্ডেড ডায়েটরি অ্যালাওয়েনসেস): মহিলাদের ক্ষেত্রে 700 মি. গ্রা. আর পুরুষদের ক্ষেত্রে 900 মি. গ্রা. 


যেসব খাবারে ভিটামিন এ পাওয়া যায়:



  • লিভার, মাছ, ডিম, দুগ্ধজাত খাবার

  • আম, পেঁপে, অ্যাপ্রিকট

  • পালং শাক, গাজর, মিষ্টি আলু, লাল লঙ্কা 


হলুদ, লাল আর সবুজ রঙের সবজিতে থাকা বিটা ক্যারোটিন আমাদের শরীরে গিয়ে রেটিনলে পরিবর্তিত হয়।


ভিটামিন এ-র উপকার:



  • ইনফেকশন সারাতে সাহায্য করে।

  • দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।

  • হার্ট, ফুসফুস, আর কিডনি ভালো রাখার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

  • ত্বককে টক্সিন (ফ্রি ্যাডিক্যালস) মুক্ত করে। ফলে ত্বক স্বাস্থ্যোজ্জল হয়ে ওঠে।

  • হাড় দাঁতকে  শক্ত, মজবুত করে।


ভিটামিন বি 12 


ভিটামিন বি12 কোবালামিন নামেও পরিচিত। এই ভিটামিনের আর ডি নারী  পুরুষ সবার ক্ষেত্রেই 2.4 মি. গ্রা. প্রতিদিন।


পুষ্টিকর খাবার সাপ্লিমেন্টে ভিটামিন বি 12 থাকে। এই ভিটামিন ফ্রি ফর্মে থাকে বলে আমাদের শরীর অনায়াসে শোষণ করে নিতে পারে। তাই খাবারের সঙ্গে  প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্ট হিসাবে আপনি   Vitamin B 12 tablets গ্রহণ করতে পারেন। 


যেসব খাবারে ভিটামিন বি 12 পাওয়া যায়:



  • মাছ, খোলসযুক্ত মাছ

  • লিভার

  • রেডমিট

  • ডিম

  • পোলট্রি

  • দুধ, চীজ, ইয়োগার্ট

  • ঈস্ট

  • জলখাবারের সিরিয়াল

  • সয়াবিন চালজাত খাদ্য


ভিটামিন বি 12 এর উপকার:



  • অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ভিটামিনগুলি আমাদের খাবারের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টগুলোকে (ফ্যাট, প্রোটিন, কার্বস) ভেঙে এনার্জি তৈরি করে। সেই এনার্জি আমাদের বেঁচে থাকার রসদ জোগায়।

  • লোহিত রক্ত কণিকা এবং  ডি এন   তৈরির জন্য প্রয়োজন।

  • মস্তিষ্ক এবং নার্ভের কোষগুলির গঠন কাজের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।


ভিটামিন সি 


ভিটামিন সি শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান। এটি ওয়াটার সলিউবল ভিটামিন বলে আমাদের শরীর এটিকে জমা করে রাখতে পারেনা। তাই ভিটামিন সি যুক্ত খাবার প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে খাওয়া উচিত।


ভিটামিন সি যুক্ত সিট্রাস ফল এবং সবজি:



  • আমলা, কমলালেবু, মৌসাম্বি, পেঁপে, পেয়ারা, পাতিলেবু, স্ট্রবেরি, আঙুর

  • লাল এবং সবুজ রঙের বেলপেপার


শরীরের অনেক কাজে ভিটামিন সি র দরকার হয়, উদাহরণ হিসাবে এখানে কয়েকটির উল্লেখ করা হল-



  • ভিটামিন সি হাড়, কার্টিলেজ, ত্বক, এবং ব্লাড ভেসলস তৈরি আর রক্ষনাবেক্ষণ করে।

  • আমাদের শরীরে কোলাজেন, এল-কার্নিটাইন আর কিছু  নিউরোট্রান্সমিটর তৈরি করতে সাহায্য করে।

  • ভিটামিন সি একটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, তাই শরীর থেকে রিঅ্যাকটিভ অক্সিডেটিভ স্পিশিজ (আর এস) নামের অবাঞ্ছিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।

  • শরীরকে আয়রন শোষণ করতে সাহায্য করে।

  • এটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট তাই শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে চাঙ্গা রাখে।

  • ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।


কারো কারো ক্ষেত্রে ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট হিসেবে খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।


ভিটামিন ডি 


ভিটামিন ডি ফ্যাট সলিউবল এবং এই ভিটামিন আল্ট্রাভায়োলেট লাইটে থাকে। সূর্যের আলো হল ভিটামিন ডি অফুরন্ত ভান্ডার। আমাদের প্রতিদিনের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি আমরা মিনিট পোনেরো রোদে থাকলেই পেতে পারি। ছোট থেকে বড়ো সকলেরই প্রতিদিন 15 মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ডি প্রয়োজন আর 70 বা তার থেকে বয়স্ক মানুষদের 20 মাইক্রোগ্রাম। কিছু খাবার 


থেকেও আমরা ভিটামিন ডি পেতে পারি, যেমন



  • কড লিভার অয়েল

  • ফ্যাটযুক্ত  মাছ

  • ফর্টিফায়েড খাবার যেমন দুধ, জুস, সিরিয়ালস

  • ডিমের কুসুম


ভিটামিন ডি এর উপকার:



  • ভিটামিন ডি হাড় দাঁত মজবুত রাখে, ভিটামিন ডি এর অভাবে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়। চুল পড়ে যায়।

  • শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণ করে ব্লাড ভেসলে ক্যালসিয়াম ফসফরাসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

  • নার্ভাস সিস্টেমের কাজে সাহায্য করে।

  • ইমিউন সেল এর কাজে সাহায্য করে।


ভিটামিন ই


আমাদের শরীরের অর্গ্যানগুলির কাজে ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এই ভিটামিন  প্রতিদিন অবশ্যই 15 মিলিগ্রাম করে খাওয়া উচিত। 


যেসব খাবার থেকে ভিটামিন ই পাওয়া যায়:



  • উদ্ভিজ্জ তেল বা ভেজিটেবল অয়েল

  • পালং শাক

  • শস্যবীজ এবং বাদাম

  • হোল গ্রেইনস

  • অ্যাভোক্যাডো


ভিটামিন ই শরীরের যেসব উপকার করে সেগুলি হল:



  • ভিটামিন আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী রাখে। 

  • ব্লাড ভেসলকে ফুলিয়ে রাখে, এবং  রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না।

  • শরীরের কোষগুলোকে টক্সিনের ক্ষতি থেকে বাঁচায়।

  • পেশির কাজে সাহায্য করে।

  • ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা কমায়।

  • হার্টের অসুখের সম্ভাবনা কমায়।

  • অ্যালজাইমার্স রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমায়।


ভিটামিন কে 


ভিটামিন কে কেটে ছড়ে গেলে রক্ত জমাট বাঁধার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। প্রতিদিন পুরুষদের 120 মাইক্রোগ্রাম আর মহিলাদের 90 মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন কে প্রয়োজন।


প্রোটিনসমৃদ্ধ এই ভিটামিন শাকজাতীয় খাবার থেকে পাওয়া যায়।


ভিটামিন কে ক্যালসিয়ামমের সঙ্গে মিলে হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখে। 


ভিটামিন কে র উপকারিতা:



  • ভিটামিন কে খুব দ্রুত ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।

  • হাড়কে শক্তিশালী করে।

  • হার্টের অসুখ প্রতিরোধে সাহায্য করে।


ম্যাগনেশিয়াম 


ম্যাগনেশিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান। হাড়ের স্বাস্থ্য এনার্জি তৈরিতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরের দৈনিক 300 থেকে 320 মি গ্রা ম্যাগনেশিয়ামের প্রয়োজন হয়।


ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারগুলি হল:



  • কুমড়ো

  • পালংশাক

  • সয়াবিন

  • বিনস

  • টোফু, ব্রাউন রাইস

  • বাদাম বিশেষ করে ব্রাজিল নাটস

  • কলা


ম্যাগনেশিয়ামের উপকারিতা:



  • ম্যাগনেশিয়াম নার্ভাস সিস্টেমকে শান্ত করে, স্ট্রেস কমায়।

  • ভালো ঘুমে সাহায্য করে।

  • পেশি এবং নার্ভের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।

  • ব্লাড সুগারের ভারসাম্য বজায় রাখে।

  • হাড়, প্রোটিন এবং ডি এন গঠনে সাহায্য করে।


দৈনিক 350 মি. গ্রা. এর বেশি ম্যাগনেশিয়াম গ্রহণ করা কখনই উচিত নয়।


জিঙ্ক 


বয়স্ক মানুষদের আর যারা খুব মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন তাদের শরীরে জিঙ্কের ঘাটতি দেখা যায়। আমাদের শরীরে প্রতিদিন 8 থেকে 11 মি. গ্রা. জিঙ্কের প্রয়োজন। মাল্টিভিটামিন থেকেও জিঙ্ক পাওয়া যায়।


জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার হল:



  • রেড মিট

  • কুমড়ো, তরমুজের বীজ

  • ছোট ছোলা

  • পালংশাক

  • সামুদ্রিক মাছ

  • বিনস

  • সবরকমের বাদাম

  • হোল গ্রেইনস

  • মুসুর মুগ ডাল

  • টোফু


জিঙ্ক সাহায্য করে:



  • ক্ষত নিরাময়ে।

  • ইমিউনিটি বাড়াতে।

  • মেটাবলিজমের হার বাড়াতে।


আয়রন 


মাল্টিভিটামিনের মাধ্যমে আমরা আয়রন পেয়ে থাকি। প্রতিদিন 18 মি. গ্রা. আয়রন আমাদের প্রয়োজন। 


ছোটদের ক্ষেত্রে শরীরের দ্রুত বৃদ্ধি বিকাশের সময় আয়রন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


আয়রন পাওয়া যায় এরকম খাবার



  • সিম, মটরশুঁটি জাতীয় খাবার

  • পালং শাক

  • বিনস

  • কিসমিস

  • সয়াবিন

  • রেড মিট

  • পোলট্রি

  • তরমুজ 

  • বেদানা

  • খেজুর


আয়রনের উপকার:



  • আয়রন এনার্জি বাড়ায়।

  • মস্তিষ্কের কাজে সাহায্য করে।

  • লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।

  • কোষে কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে।


ফোলেট 


ফোলেট ফিটাস বা ভ্রুনের বৃদ্ধি এবং জন্মগত ত্রুটি রোধ করে। এছাড়াও ফোলেট নখ তৈরিতে, ইনফ্লামেশন রোধ করতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।


এই খাবারগুলিতে ফোলেট পাওয়া যায়:



  • গাঢ় সবুজ সবজি

  • বিনস

  • সিট্রাস ফল


উপসংহার  


তাহলে এতক্ষণে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে যথাযথ পুষ্টিকর খাবারই হল ভালো স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি, আর ভালো স্বাস্থ্য প্রতিফলিত হবে আপনার প্রতিদিনের নির্বিঘ্ন জীবনযাত্রায়। তখন আপনার শরীর অসংযত খাওয়ার অভ্যাস থেকে উৎপন্ন হওয়া সবরকম ব্যাধিকে শতহস্ত দূরে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হবে। আপনাকে সুস্থ আনন্দময় জীবন যাপনে সাহায্য করবে। যদিও ফাস্টফুড আর প্রসেসড ফুড স্বাদে গন্ধে অত্যন্ত আকর্ষনীয় লাগে এবং আজকের দিনে এই ধরনের খাবার খুব সহজেই হাতের কাছে পাওয়া যায়, তাছাড়াও অনেক সময়ে মানসিক চাপ আর উদ্বেগপূর্ণ জীবনে কমফর্ট ফুড হিসাবে এগুলো খাওয়ার অভ্য্যাস আমরা করে ফেলি; তবে স্বাস্থ্যের ওপর এইসব খাবারের দীর্ঘমেয়াদি কুফল আছে। 


প্রাত্যহিক জীবনে আপনার খাদ্যতালিকায় সহজে হাতের কাছে পাওয়া যায় এইরকম শাক, ফলমূল, তরিতরকারি, বিভিন্ন রকমের ডাল, ডিম, মাছ ইত্যাদি শরীরের চাহিদা বুঝে পরিমিত পরিমানে খাবেন। কারণ এগুলি পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। পুষ্টিতে কোথাও কোনো ঘাটতি থেকে গেলে অর্গ্যানিক ফুড সাপ্লিমেন্টস খেতে পারেন, যেমন vitamin c capsules খেলে আপনার শরীরের ইমিউনিটি আরও উন্নত হয়ে উঠবে। সঙ্গে অবশ্যই পর্যাপ্ত জল পান করবেন আর যথাযথ দৈনিক শরীরচর্চা করবেন, তাহলেই আপনি একটা প্রাণচঞ্চল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দীর্ঘ জীবন উপভোগ করতে পারবেন।


ডিসক্লেইমার: এটি পেড আর্টিকল। এবিপি নেটওয়ার্ক বা এবিপি লাইভ কোনওভাবেই এই নিবন্ধে উল্লেখিত কোনওরকম বস্তু ব্যবহারের পরামর্শ দেয় না বা কারুর ব্যক্তিগত মতামতের দায়িত্ব নেয় না। দয়া করে এটি ব্যবহারের পূর্বে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন। বিচার বিবেচনা করে পাঠকরা এটি পড়ুন।


এটি ফিচার আর্টিকল। এবিপি নেটওয়ার্ক বা এবিপি লাইভ কোনওভাবেই এই নিবন্ধে উল্লেখিত কোনওরকম বস্তু ব্যবহারের পরামর্শ দেয় না বা কারুর ব্যক্তিগত মতামতের দায়িত্ব নেয় না। দয়া করে এটি ব্যবহারের পূর্বে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। বিচার বিবেচনা করে পাঠকরা এটি পড়ুন।