পথে বিরোধী শিবির, আইন অমান্য কর্মসূচি ঘিরে দফায় দফায় বিক্ষোভ
পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘাতে বাঁধল ধুন্ধুমার। ধস্তাধস্তি, লাঠিচার্জ, জলকামান, কাঁদানে গ্যাস, বাদ রইল না কিছুই!

সমীরণ পাল, বিটন চক্রবর্তী, বারাসাত, নিমতৌড়ি: বারাসাতে (Barasat) বিজেপি (BJP)। নিমতৌড়িতে বামেরা (CPM)। বিরোধী শিবিরের আইন অমান্য কর্মসূচি ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল রাজ্যের (West Bengal) দুই প্রান্ত। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘাতে বাঁধল ধুন্ধুমার। ধস্তাধস্তি, লাঠিচার্জ, জলকামান, কাঁদানে গ্যাস, বাদ রইল না কিছুই!
দুর্নীতি ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এবং তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলে মঙ্গলবার রাজপথ কাঁপাল বিরোধীরা। বিজেপি এবং বামেদের আইন-অমান্য কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল রাজ্যের একাধিক জায়গায়।
ধস্তাধস্তি, লাঠিচার্জ, এমনই ছবি উঠে এসেছে নানা প্রান্ত থেকে। চোর ধরো জেল ভরো স্লোগান তুলে, বিজেপি এবং বাম, দুই শিবিরের তরফেই আইন অমান্য কর্মসূচি নেওয়া হয় এদিন।
নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে গরুপাচার, কয়লা পাচার, একাধিক ইস্যুতে শাসক তৃণমূলকে বিঁধে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতের হরিতলা থেকে শুরু হয় বিজেপির প্রতিবাদ মিছিল। নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদিকা ও বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল।
কেএনসি রোড, বারাসাত থানা, চাঁপাডালি মোড় হয়ে জেলাশাসকের দফতরের কাছে মিছিল পৌঁছতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিজেপি কর্মীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পুলিশের লাঠিতে তাঁদের বেশ কয়েকজন মহিলা কর্মী জখম হয়েছেন, এই অভিযোগ তুলে সরব হন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল।
হুগলিতেও প্রতিবাদে সোচ্চার বিজেপি। মাহেশে মাসির বাড়ির সামনে থেকে শুরু হয় গেরুয়া শিবিরের বিক্ষোভ মিছিল। জিটি রোড ধরে বটতলা হয়ে তা পৌঁছয় শ্রীরামপুর মহকুমা শাসকের অফিসের সামনে। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
বামেদের বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে তুলকালাম পূর্ব মেদিনীপুরের নিমতৌড়িতে। সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে চোর ধরো জেল ভরো স্লোগান তুলে মিছিল জেলাশাসকের অফিসের কাছে পৌঁছতেই তেতে ওঠে পরিস্থিতি। পুলিশ ব্যারিকেড করে আটকে দিতেই শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ।
ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ বাধা দিলে বাম কর্মী-কর্মী সমর্থকরা তাঁদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন বলে অভিযোগ। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে ও জলকামান ব্যবহার করে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। দু’পক্ষেরই অভিযোগ, অশান্তিতে আহত হয়েছেন তাঁদের কয়েকজন।
অনুদান বিতর্ক: অন্যদিকে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহের কথায়, এতগুলো ক্লাবকে অনুদান দেওয়া হচ্ছে, অথচ আমাদের বকেয়া ডিএ দিচ্ছে না। রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA বকেয়া। তারই মধ্যে সরকারের পুজোর অনুদান ৫০ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। অনুদান পাবে ৪৩ হাজার পুজো কমিটি।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তাদের প্রশ্ন, সরকার যেখানে কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দিতে পারছে না, সেখানে এই খয়রাতি কেন? এই প্রেক্ষিতে এবার ধর্মঘটের রাস্তায় হাঁটার হুঁশিয়ারি দিল কংগ্রেসের কর্মচারী সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লিয়িজ।
কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লিয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের কথায়, আমরা তো নোটিস দিয়েছি. আমরা কোর্টে যাব। ৭ দিন সময় দিয়েছি... আগামীকাল ঠিক হবে আন্দোলের রূপ ঠিক হবে। মিটিং, মিছিল পুজোর আগেই বড় আন্দোলন। ধর্মঘটের পথেও যেতে পারি। প্রতিবাদে সরব হয়েছে বাম, বিজেপিও। মঙ্গলবার জাজেস কোর্ট রোডে বকেয়া ডিএর দাবিতে বিক্ষোভ অবস্থান করে কো-অর্ডিনেশন কমিটি।






















