East Burdwan News: ১৩ দিন ধরে বিদ্যুত্হীন পূর্বস্থলীর গ্রাম, দুর্ভোগে বাসিন্দারা
এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুত্ না থাকায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে। গ্রামে প্রায় আড়াইশো পরিবার রয়েছে। ওই পরিবারগুলির বেশ কয়েকজন সদস্য অসুস্থ।
পূর্ব বর্ধমান: পূর্বস্থলীর কাদাপাড়া গ্রামে ১৩ দিন ধরে বিদ্যুত্ নেই। গত কয়েকদিন এই এলাকার গড় তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুত্ না থাকায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে। গ্রামে প্রায় আড়াইশো পরিবার রয়েছে। ওই পরিবারগুলির বেশ কয়েকজন সদস্য অসুস্থ। তাঁরা আরও বিপদে পড়েছেন। গ্রামবাসীদের দাবি, বিদ্যুত্ দফতরকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বিদ্যুত্ দফতরের দাবি, সপ্তাহ খানেক আগে একটি নতুন ট্রান্সফর্মার বসানো হয়েছিল। কিন্তু বিদ্যুত দফতরের কর্মীদের আগেই গ্রামের কয়েকজন সেই ট্রান্সফর্মার চালু করতে যান। তাতে ট্রান্সফর্মার পুড়ে গিয়েই এই বিপর্যয় হয়েছে।
পূর্ব ভারতের বড় অঞ্চলজুড়ে বিদ্যুত্ সঙ্কট: অন্যদিকে পূর্ব ভারতের বড় অঞ্চল জুড়ে চলছে বিদ্যুত্ সঙ্কট ( power supply crisis ) দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে তাপদাহে পুড়ছে রাজ্যের পর রাজ্য। পঞ্জাব-হরিয়ানা থেকে দিল্লি-মধ্যপ্রদেশ, তাপপ্রবাহে বিধ্বস্ত জীবন। আর গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে বিদ্যুতের ব্যবহার। শহরাঞ্চলে এসি ও কুলারের ব্যবহারও বেড়েছে । এর ফলে এক লাফে অনেকটা বেড়েছে বিদ্যুত্-এর চাহিদা। কিন্তু ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে তাল রাখতে পারেনি ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহারের মতো রাজ্য।
শহর এবং গ্রামাঞ্চলে দেখা দিয়েছে তীব্র বিদ্যুত্ সঙ্কট। এই সব এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের অনেকটা উপরে। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন জানিয়েছেন, বিদ্যুত্-এর চাহিদা মেটাতে তিনি খোলা বাজার থেকে বিদ্যুত্ কিনতে আগ্রহী। তবে সেখানেও চাহিদা তুঙ্গে বলে জানিয়েছেন তিনি। শুধু ঝাড়খণ্ড নয়, অনেক রাজ্যই এই সমস্যায় ভুগছে বলে জানিয়েছেন সোরেন।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির কড়া সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘মারাত্মক বিদ্যুত্ সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশ। বহু রাজ্যে মানুষকে ৮ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা সইতে হচ্ছে। মজুত কয়লা কমে আসায় বিদ্যুত্-এর চাহিদা বাড়লে এই পরিস্থিতি হবে। মোদি সরকারকে আগেই এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। সমস্যা মোকাবিলার বদলে, তা অস্বীকার করেছিল সরকার। সত্য নিজে থেকেই কথা বলে।' ফেসবুকে এইভাবেই মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন রাহুল গাঁধী।
রাজ্যের আবহাওয়া: তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে দহন জ্বালা চলবে মনেই জানিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শনিবার থেকে আবহাওয়া পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
যদিও আজ হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, আগামিকাল থেকেই আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে চলেছে। রবিবার থেকে রাজ্যে তৈরি হবে কালবৈশাখীর পরিস্থিতি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আগামীকাল থেকে আংশিক মেঘলা আকাশ। বিক্ষিপ্তভাবে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম সহ পশ্চিমের জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুত্ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ জেলায় রবিবার থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে বজ্রবিদ্যুত্ সহ বৃষ্টি ও ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, আজ থেকে পূবালি হাওয়ার দাপট বাড়বে। পূবালি হাওয়ায় ভর করে জলীয় বাষ্প ঢুকবে রাজ্যে। এই জলীয় বাষ্প ঝাড়খণ্ড, বিহার ও ছোটনাগপুর এলাকায় বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করবে। সেই মেঘ এসে বাংলায় তৈরি করবে কালবৈশাখীর পরিস্থিতি।
উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি চলবে বলে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে বজ্রবিদ্যুত্ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা। বজ্রবিদ্যুত্ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা মালদা ও দুই দিনাজপুরেও।