কলকাতা : করমণ্ডল এক্সপ্রেসের (Coromandel Express Derailed) বিপর্যয়ের ক্ষত এখনও দগদগে। কাজ, চিকিৎসার প্রয়োজনে বাইরের রাজ্যে যাওয়ার পথে প্রাণ হারিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে অনেকে। এখনও জারি রয়েছে উদ্ধারকাজ। দুর্ভাগ্যবশত বঙ্গের যে বাসিন্দাদের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার বলি হতে হয়েছে, তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। অনেকেই আবার তাঁদের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। এই অবস্থায় আর্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Chief Minister Mamata Banerjee)। রাজ্য সরকারের তরফে আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি পরিবারের কারোর জন্য চাকরি ব্যবস্থার বার্তাও দিয়েছেন। এবার দিলেন সেইসমস্ত পরিবারের পড়ুয়াদের শিক্ষার দায়িত্বও।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে করমণ্ডল বিপর্যয়ে হত-আহত দুর্ভাগ্যদের পরিবারের ১০০ জন শিশুর পড়াশোনার সমস্ত দায়িত্ব ও খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা ও আর্থিক সাহায্যের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'যারা পড়াশোনা করতে চায় এমন ৫০টি মেয়ে, ৫০ টি ছেলের ফ্রি এডুকেশনের দায়িত্ব নেওয়া হবে।'
পাশাপাশি চাকরি দেওয়ার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'যারা বাইরে যেতে চাইছিলেন, অনেকে জরি, রাজমিস্ত্রীর কাজ ভাল করেন। পুলিশের সিস্টেম আছে, এলাকায় এলাকায় নিজের কিছু লোক রাখা। এটা কম মাইনে কিন্তু বাড়ির সামনে কাজটা হয়। বাইরে গেলে থাকা খাওয়ার খরচ হত। সেটা বাঁচবে। বিশেষ ব্যবস্থা করে-, কিছু স্পেশাল সিচুয়েশনে স্পেশাল আশা বা আইসিডিএস করতে পার কি না দেখো শশী পাঁজা। তাহলে মেয়েরাও ঘরে সামনে কাজ পাবে।'
এদিকে, দুর্ঘটনাগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য নিয়েও এবার শুরু হয়েছে রাজনীতি। ট্রেন দুর্ঘটনায় আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের টাকা খরচ করে। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। ট্যুইটে নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ দফতরের একটি নথি পোস্ট করে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা লেখেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফটোশেসনে নিজেকে মানবিক হিসেবে দেখানোর জন্য নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের টাকা ছিনিয়ে নিচ্ছেন। বগটুইয়েও তিনি একই কাজ করেছিলেন। তাঁর নিজের দলের লোকেরাই মহিলা এবং শিশুদের পুড়িয়ে মেরেছিল। সেই বীরভূম হত্যাকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য করতে মিড ডে মিলের ফান্ড ব্যবহার করেছিলেন।'
আরও পড়ুন- রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সরিয়ে মোদিকে উপহার পাঠালেন মমতা, বাংলার আম গেল রাষ্ট্রপতির কাছেও
সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বালেশ্বরের রেল বিপর্যয় এবং দুর্ঘটনাগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি।