সমীরণ পাল, বারাসাত : এবার দোকানদারকে সম্মোহন করে লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না চুরির (Robbery) অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি ঘটেছে হৃদয়পুর স্টেশন (Hridaypur) সংলগ্ন একটি সোনার দোকানে। জানা যাচ্ছে, গ্রাহক সেজে দোকানে ঢুকে কথা বলার ফাঁকেই কায়দা করে দোকানদারকে সম্মাহন করে রাখে এক দুষ্কৃতী। এরপরই পাঁচ লক্ষেরও বেশি টাকার সোনার গয়না নিয়ে চম্পট দেয় সে। তেমনটাই দাবি করেছেন বিকাশ দত্ত নামে ওই ব্যবসায়ী। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। গোটা ঘটনাটা ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়।
ঘটনা সূত্রে জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার হৃদয়পুর স্টেশন সংলগ্ন একটি সোনার দোকানে আর পাঁচটা গ্রাহকের মতোই জিনিস কিনতে ঢুকেছিল ওই দুষ্কৃতী। নানারকম সোনার গয়না দেখার সময়ই দোকানদাররে সঙ্গে কথাবার্তা বলতে থাকে সে। প্রথমে মাদুলি, পরে লকেট। এভাবে একে একে একাধিক সোনার হার বের করতে বলে সে। সোনার গয়না দেখার সময়ে ওই ব্যক্তির হাতে চুরুট ছিল বলে জানা গিয়েছে। দোকানদারের দাবি, ওই চুরুটের ধোঁয়াতেই সম্মোহিত হয়ে পড়েন তিনি। জানা গিয়েছে, দোকানদারকে সোনার গয়না দেখাতে বলে দোকানের ক্যাশ কাউন্টারের নিচে সিন্দুকে রাখা অর্ডারি গহনার বাক্সও বের করে নেয় সে। যে গয়না অন্য কোনও অর্ডার পেয়ে ডেলিভারির জন্য বানিয়ে রেখেছিলেন দোকানদার। তিনি জানাচ্ছেন, ওই দুষ্কৃতীর কথায় এবং চুরুটের ধোঁয়ায় তিনি এতটাই আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন যে, তারপরও তাকে গ্রাহক মনে করে কথা বলে যাচ্ছিলেন। অর্ডারি গয়নার বাক্স বের করে ফের একটা সোনার হারের ওজন করতে বলে ওই দুষ্কৃতী। এরপরই দোকানদারকে ধোঁকা দিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে যায় সে। জানা যাচ্ছে, পাঁচ লক্ষেরও বেশি টাকার গয়না নিয়ে গায়েব হয়ে গিয়েছে সে।
North 24 Pargana: অর্জুন সিংহের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি, দিলীপের নিশানায় তৃণমূল
গোটা ঘটনাটাই ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। সূত্রের খবর, দোকানে থাকাকালীন পুরো সময়টাই হেলমেট পড়েছিল ওই দুষ্কৃতী। দোকানদারও তাকে একবারও হেলমেট খোলার জন্য বলেননি। সোনার গয়না নিয়ে দুষ্কৃতী চম্পট দেওয়ার পর সম্বিত ফেরে দোকানদারের। তিনি সঙ্গে সঙ্গে দোকান থেকে বেরিয়ে অন্য গাড়ি নিয়ে পিছু ধাওয়া করলেও ওই দুষ্কৃতীকে ধরতে পারেননি তিনি। এরপরই দোকান বন্ধ করে বারাসাত থানায় পুলিশের কাছে গোটা বিষয়টা জানান তিনি। যদিও বারাসাত থানার পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
বিকাশ দত্ত নামে হৃদয়পুরের ওই ব্যবসায়ী এরপর দ্বারস্থ হন স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির। খবর দেন সংবাদমাধ্যমেও। জানাচ্ছেন, গত ১৬ বছর ধরে গয়নার ব্যবসা করছেন তিনি। কিন্তু এর আগে কখনও এমন ঘটনার সম্মুখীন তিনি হননি। তাঁর বক্তব্য, ওই দুষ্কৃতী কথা বলার সময় তিনি এতটাই আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন যে, হেলমেট খুলতে বলার কথা তাঁর একবারও মনে হয়নি। এমনকি অর্ডারি গয়না বের করে নেওয়ার সময়ও তাঁর একবারও বাধা দেওয়ার কথা মনে হয়নি। দিনেদুপুরে দোকানের মধ্যে ঢুকে সম্মোহন করে ডাকাতির ঘটনার আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।