SujayKrishna Bhadra : বেহালার অম্বিকাচরণ রায়ের পরিবারের জমিও দখল করেছিলেন 'কালীঘাটের কাকু' ?
Kalighater Kaku : কালীঘাটের কাকুর কানেকশন ঠিক কতদূর অবধি ? কার মাথায় হাত ? কার প্রভাবে এত প্রভাবশালী ?
কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় (Recruitment Scam Case) গ্রেফতার হওয়ার পর, 'কালীঘাটের কাকু'র বিরুদ্ধে সামনে এল জমি দখলের অভিযোগও। তা-ও যে সে পরিবারের জমি নয়, বেহালার রায়বাহাদুর রোড যে অম্বিকাচরণ রায়ের নামে, তাঁর পরিবারের জমি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র দখল করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।
'দুই বিঘা জমি' কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, এ জগতে, হায়, সেই বেশি চায়, আছে যার ভূরি ভূরি।
'কালীঘাটের কাকু' ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর ক্ষেত্রেও কি এটাই সত্য়ি ? নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ইডি (Enforcement Directorate) তাঁকে গ্রেফতার করেছে। আগেই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র-র দাদা অজয়কৃষ্ণ ভদ্র জানিয়েছেন, 'ওর ছোট্ট একটা দোকান ছিল রান্নাঘর ভেঙে।'
সামান্য় মুদির দোকান থেকে কীভাবে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে উঠলেন 'কালীঘাটের কাকু' ? তা নিয়ে চাঞ্চল্য়কর সব তথ্য় সামনে আসতে শুরু করেছে ইডি সূত্রে। যার মধ্য়ে রয়েছে- জমি দখলের মতো অভিযোগ অবধি ! তা-ও আবার সেই রায় পরিবারের জমি, যে রায়দের নামে বেহালার রায় বাহাদুর রোড !
রায় পরিবারের সদস্য়দের অভিযোগ, ২০২০ সালে তাঁদের মালিকানাধীন একটি জমি দখল করে নেয় কালীঘাটের কাকুর NGO ! রায় পরিবারের দাবি, স্বাধীনতার আগে থেকে জমিটি তাঁদের পরিবারের মালিকানায় ছিল। খেলাধূলোর জন্য় জমিটি খালিই রেখেছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ এবং দুষ্কৃতী নিয়ে ওই জমি দখল করতে আসে বাংলার বন্ধু নামে একটি NGO। রায় পরিবারের দাবি, ওই NGO-র সেক্রেটারি ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু।
অভিযোগকারী রায় পরিবারের সদস্য় নীলাঞ্জনা রায় বলেন, 'বাংলার বন্ধুর কী অ্যাক্টিভিটি আছে ? কোথাও তো কোনও দিন কোনও নামও দেখিনি, কাজও দেখিনি। তাহলে কী অ্যাক্টিভিটি আছে ? হঠাৎ রাতারাতি এসে বাচ্চাদের খেলা বন্ধ করে, তাদের হুমকি দিয়ে, রাতারাতি পাঁচিল দিয়ে জমি দখল ! আমার মনে হয়, এটা আর কিছুই না, কালো টাকা সাদা করার একটা পদ্ধতি মাত্র !'
রায় পরিবারের দাবি, বিষয়টা নিয়ে তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। বেহালা থানারও দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নীলাঞ্জনা রায় বলেন, "তখন 'দিদিকে বলো' বলে একটা প্রক্রিয়া চলত। আমি সেখানে নিজে ফোন করেছিলাম। তারা সেখানে একটা নম্বরও দিয়েছিল। কিন্তু, সেই দিদিকে বলো থেকে দ্বিতীয়বার কোনও ফোন আসেনি, তদন্ত করতেও আসেনি। ফিরহাদ হাকিমের কাছেও আমরা গিয়েছিলাম। তাঁকেও সমস্ত কিছু বলেছিলাম। কিন্তু, পরবর্তীকালে সেখান থেকেও কোনও ফলোআপ করা হয়নি। অরাজকতা যদি সারা পশ্চিমবঙ্গকে গ্রাস করে এবং তার শিকার আমরাও হই, স্বাভাবিকভাবেই হতাশা আসবে।"
এই অভিযোগ ঘিরেই প্রশ্ন উঠছে, রায়বাহাদুর রোড যে পরিবারের সদস্য়ের নামে, তাদের জমি কি প্রভাবশালী ছাড়া কেউ দখল করতে পারে? কতটা দাপট থাকলে এমন অভিযোগের পরও ব্য়বস্থা নেওয়া হয় না? যদিও, এখন NGO-র তরফে জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। NGO-র সদস্য সমরভূষণ সরকার জানান, সব কাগজপত্র আছে। আমরা মালিকদের কাছ থেকে গিফট পেয়েছি। তার কাগজপত্র আছে।
সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর গ্রেফতারের পর থেকেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, কালীঘাটের কাকুর কানেকশন ঠিক কতদূর অবধি ? কার মাথায় হাত ? কার প্রভাবে এত প্রভাবশালী ? শেষমেশ তা কি জানা যাবে ?