Dev in Ghatal: এখনও জলবন্দি ঘাটাল, ফের এলাকায় দেব, মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বললেন...

Ghatal Flood Situation: রবিবার স্পিড বোটে চেপে জলবন্দি এলাকাগুলি ঘুরে দেখেন দেব।

Continues below advertisement

ঘাটাল: বন্যা পরিস্থিতিতে গোড়াতেই ছুটে এসেছিলেন তিনি। রবিবার ফের ঘাটালে দেখা গেল দেবকে। বোটে চেপে পরিস্থিতি পরিদর্শন করলেন তিনি। জলবন্দি এলাকাগুলি ঘুরে দেখলেন তিনি। এখনও ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন রয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, মিলছে না পানীয় জল। বিশেষ করে ঘাটাল পুরসভার অন্তর্গত ৭ নং ওয়ার্ডের। সেই পরিস্থিতিতে ফের নিজের কেন্দ্রে পৌঁছলেন দেব। জানিয়ে দিলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত না হলে, ২০২৬ সালে দলের হয়ে প্রচারে যাবেন না তিনি।(Dev in Ghatal)

Continues below advertisement

রবিবার প্রথমে স্পিড বোটে চেপে জলবন্দি এলাকাগুলি ঘুরে দেখেন দেব। তার পর ভটভটিতে চেপেও ঘোরেন। কচুরিপানা কাটিয়ে এগিয়ে চলে ভটভটি। সেখানকার একটি মাঠে এত জল জমে গিয়েছে, যে তা নদীর আকার ধারণ করেছে। সেই মাঠের পিছনের এলাকা, অজতনগর ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েত পরিদর্শনে যান দেব। মন্ত্রী জাভেদ খানকেও দেখা যায় দেবের সঙ্গে। পাশাপাশি, নৌকাবোঝাই করে ত্রাণসামগ্রীও নিয়ে যাওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকরাও। (Ghatal Flood Situation)

বছর বছর বন্যা হলেও, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। লোকসভায় দেব নিজে বিষয়টি বার বার তুলে ধরেছেন। কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের মধ্যে এর পর রাজ্য জানায়, নিজেদের খরচেই মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করা হবে। এদিন সেই নিয়ে প্রশ্ন করলে দেব বলেন, "ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু না হলে ২০২৬-এ প্রচারে যাব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা দিলে কথা রাখেন। মানুষ অনেক সমস্যার মধ্যে আছেন, সবাই মিলে পাশে থাকতে হবে। সব ঠিক থাকলে জানুয়ারি-বা ফেব্রুয়ারি মাসে নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারব আশাকরি।" দেব আরও বলেন, "মাস্টার প্ল্যানের যে সুপারিশ করেছিল মান সিংহ কমিটি, তা যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে ঘাটালের অর্ধেক অংশ নদী হয়ে যাবে। বেশ কিছু জায়গাকে নদীতে পরিণত করতে হবে। সেটা সম্ভব নয়। তাই নতুন প্ল্যান অনুযায়ী, চার কিলোমিটার জমিকে বাঁধে পরিণত করে দু'টি নদীকে মেলাতে হবে। কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে, জমি অধিগ্রহণ চলছে।" 

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কবে বাস্তবায়িত হবে, সেই প্রসঙ্গে দেব বলেন, "ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান তিন মাসে সম্ভব নয়। জুন মাসে জিতেছি। জুন থেকে ধরলে তিন মাসে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান হয় না। রাজ্য সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করছে কাজটা দ্রুত গতিতে শুরু করার। জমি অধিগ্রহণ এবং জমি পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে। বেশ কিছু জমিতে দোকান তৈরি হয়ে গিয়েছে। রাস্তা দিয়ে বড় মেশিন ঢুকতে পারবে না। তাদের সঙ্গে কথা চলছে। প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।"  ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে যে লাগাতার কটাক্ষ উড়ে আসছে, সেই নিয়ে দেব জানান, পাঁচ বছরের আগে সম্পূর্ণ হওয়া সম্ভবই নয় এর বাস্তবায়ন।

এবারের বন্যা পরিস্থিতির জন্য রাজ্যের তরফে DVC-কে দায়ী করা হয়েছে। না জানিয়ে অত্যধিক জল ছাড়াতেই এমন পরিস্থিতি বলে দাবি করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন একই সুর শোনা যায় দেবের গলায়। তিনি বলেন, "ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত হলেও এই বন্যা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেত কি না, সেই নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। অনেকগুলি জেলা, হুগলি, ২৪ পরগনা জলের তলায় চলে গিয়েছে। ৫ লক্ষ কিউবিক জল ছাড়া হয়েছে। এত পরিমাণ জল ধরে রাখার ক্ষমতা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানেও সম্ভব নয় বলে মনে হয়। বৃষ্টির বন্যা থেকে রক্ষা মিলতে পারে তাতে।"

দেব এদিন বলেন, "ভোটের আগে আমাদের সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণ হবে। আমি দায়িত্ব নিচ্ছি কারণ আমার এখানে এসে দিদি কথা দিয়েছিলেন। এই একটা শর্তের জন্যই আমি রাজনীতিতে ফিরেছি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রাজ্য সরকার করবে বলে দিদি এবং অভিষেক দু'জনই কথা দিয়েছিলেন। তার জন্যই রাজনীতিতে এসেছি আমি। এখনও বিশ্বাস, আমাদের নেত্রী এটা শুরু করবেন।" বন্যা পরিস্থিতিতে দিন পাঁচেক আগেও ঘাটাল পৌঁছে যান দেব। ত্রাণসামগ্রী বণ্টনের পাশাপাশি, জেলার শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন সেখানে। ত্রিপল, ত্রাণ পেয়েছেন কি না, খতিয়ে দেখেন। এদিন ফের ঘাটালে দেখা গেল তাঁকে। 

চার দশক আগেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের সুপারিশ এসেছিল। কিন্তু আজও তার বাস্তবায়ন হয়নি। বন্যা পরিস্থিতি এলে এবং নির্বাচনের সময় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কথা মুখে মুখে ফেরে। গত লোকসভা নির্বাচনে ঘাটাল থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হিরণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ঘাটালের মানুষ যাঁরা ওঁর উপর বিশ্বাস রেখেছিলেন, যাঁরা এখন জলে তলায় আছেন, তাঁরা বিচার করুন। আমার যতটা সাধ্য আমি করব। আসলে ওঁর সরকার তো আর জি কর কাণ্ড কী ভাবে চাপা দেওয়া যায়, কপিল সিবল প্রায় ২১ জন আইনজীবীকে নিয়ে একটি অসহায় মেয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ওখানে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। এখানে কী করে খরচ করবেন? আমার মনে হয় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের টাকা দিয়েই হয়ত আর জি করের মামলা চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। জনসমক্ষে তো আর বলতে পারবেন না। সাংসদ তাই অসহায়, নিরুপায়। কী বলবেন বুঝতে পারছেন না। তাই বিভিন্ন রকম কথা বলছেন. কষ্ট হয়, দুঃখ হয় ঘাটাল, পাঁশকুড়ার মানুষের জন্য। ভোট দিয়ে ওঁকে জিতিয়েছেন। কিন্তু এখন জলের তলায়। ঘাটালবাসীর জন্য হৃদয় থেকে কষ্ট হয়।"

Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola