অমিত জানা, নারায়ণগড় (পশ্চিম মেদিনীপুর) : করোনাকালে দুয়ারে শিক্ষক। পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। পড়াচ্ছেন। পরীক্ষা নিচ্ছেন। কোথাও সমস্যা হলে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এমনই উদ্যোগের ছবি ধরা পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের নারাণগড় ব্লকে। শিক্ষক বলতে যে কথাটা সবার আগে মনে আসে, তা হল মানুষ গড়ার কারিগর। করোনা মহামারীর আঁধারে যেন মানবিকতার আলো জ্বালাচ্ছেন নারায়ণগড় রাজা হৃষিকেশ লাহা উচ্চ শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষকরা। ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকরা খুশি। ব্লকের সব স্কুলে এমন মডেল চালুর কথা ভাবছে প্রশাসন। সাধারণ মানুষের কাছে, নানা সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দিতে চালু হয়েছে দুয়ারে সরকার প্রকল্প। সেই ধাঁচেই দুয়ারে শিক্ষক অভিযান চলছে পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকে। করোনাকালে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ। ঘরে থেকে পড়াশোনা করছে ছাত্রছাত্রীরা। তাদের পড়াশোনার হালহকিকত জানতে পড়ুয়াদের বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন শিক্ষকরা।


নারায়ণগড় রাজা হৃষিকেশ লাহা উচ্চ শিক্ষা নিকেতনের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্র নিয়ে পড়ুয়াদের বাড়িতে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। বাড়ি থেকেই উত্তরপত্র সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। গাইড করছেন সিলেবাস সম্পর্কে। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এই স্কুলে এগারোশো জন পড়ুয়া রয়েছে।সম্প্রতি অনলাইন ক্লাস চালু হয়েছে তাদের জন্য। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড ফোন না থাকায় অনেকেই সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যাদের অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই, তাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। আর শিক্ষকদের এভাবে পেয়ে আপ্লুত পড়ুয়ারা। নারায়ণগড় রাজা হৃষিকেশ লাহা উচ্চ শিক্ষা নিকেতনের নবম শ্রেণির ছাত্র অমৃতাংশু সামন্ত বলেছেন, 'স্যারেরা বাড়িতে এসে একটা গাইডলাইন দিলেন কীভাবে বাড়িতে ভালোভাবে পড়তে হবে। সিলেবাস সম্পর্কে অবগত করালেন। এর জন্য ধন্যবাদ।'


নারায়ণগড় রাজা হৃষিকেশ লাহা উচ্চ শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক হরেকৃষ্ণ বারিক বলেছেন, 'অনলাইন ক্লাস চালু করেছি। সেখানে টেন পার্সেন্ট অনলাইন ক্লাস করছে। তাই বাড়িতে আসার উদ্যোগ। পরীক্ষা হল না, অথচ মার্কশিট তুলে দিলাম, এটা কাঙ্খিত নয়। তাই এখন পরীক্ষা নিচ্ছি দুয়ারে দুয়ারে। মিড-ডে-মিল থেকে স্কলারশিপ বিষয়ে কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা, তাও জানতে চাওয়া হচ্ছে।' স্থানীয় স্কুলের যে উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে প্রশাসন। নারায়ণগড়ের বিডিও শুভম আগরওয়াল বলেছেন, 'স্কুল ভাল উদ্যোগ নিয়েছে। চেষ্টা করব ডি আই এর সঙ্গে ডিস্ট্রিক লেভেল এ কথা বলে এই উদ্যোগ ব্লকে যদি নেওয়া যায় তাহলে ভাল হবে। কিছু কিছু ছাত্রের কাছে স্মার্টফোন নেই। শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গেলে ছাত্রদের পড়ার জন্য খুবই ভাল। জেলা থেকে অনুমতি পেলে ব্লকের সমস্ত স্কুলে চালু হবে।'


আরও পড়ুন- সাড়ে ৫০০ পাঠ্যক্রমের সুলুকসন্ধান, পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ পোর্টালের ভাবনা শিক্ষা দফতরের


আরও পড়ুন- বাংলায় কি ভাল নম্বর পাওয়া সম্ভব? WBCS-এ কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি?


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI