কলকাতা: মস্তিষ্কের বিরল ক্য়ানসার। যা থেকে সেরে ওঠার আশা ক্ষীণ থেকেও ক্ষীণতর। সেই ক্যানসারকেই হারিয়ে দিল এক কিশোর। মাত্র ১৩ বছর বয়স বেলজিয়ামের লুকাস। ছয় বছর বয়সে তার মস্তিষ্কে টিউমার দেখা দেয়। টিউমারটি স্ক্যান করে চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন এটি ক্যানসার কোশ থেকে তৈরি। তবে যে সে ক্যানসার মোটেই নয়। এটি ছিল একটি মারণ ক্যানসার। যার নাম ডিআইপিজি। পুরো নাম ডিফিউজ ইনট্রিনসিক পনটিন গ্লায়োমা। এই ক্যানসার খুব দ্রুত বাড়তে থাকে শরীরে। পাশাপাশি এর জন্য এখনও কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা আবিষ্কার করতে পারেনি বিজ্ঞান। সেই ক্যানসারকেই হারিয়ে দিল ১৩ বছরের লুকাস।


কেন ভয়ানক এই ক্যানসার


সাধারণ ছোটদেরই এই ক্যানসার হয়ে থাকে। তাই চিকিৎসকদের পরিভাষায় একে চাইল্ডহুড ক্যানসারও বলা হয়। তবে এই ধরনের ক্যানসার একেবারেই বিরল। তাই চিকিৎসাবিজ্ঞান নির্দিষ্ট চিকিৎসাও কম। সব ক্যানসার কোশেরই একটি স্টেম কোশ অর্থাৎ জনক কোশ থাকে। এই ক্যানসারের স্টেম কোশ মস্তিষ্কের মধ্যেই থাকে।


লুকাসকে বলা যায় মিরাকল


এই বিশেষ ধরনের ক্যানসার নিয়ে সমীক্ষাও খুব আশাপ্রদ নয়। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্যানসার ধরা পড়ার এক বছর পর রোগীর মৃত্যু হয়। মাত্র দশ শতাংশ শিশু দুই বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। সেখানে লুকাসের ঘটনাকে একরকম মিরাকল বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। কারণ দীর্ঘ সাত বছর ধরে এই চিকিৎসার মধ্যে ছিল সে। নিয়মিত তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে তাঁর মস্তিষ্কে আর কোনও টিউমার নেই। অর্থাৎ সে সুস্থ।


ট্রায়ালেই সাফল্য


তবে এই চিকিৎসা হাসপাতালের ঘেরাটোপে হয়নি। বরং হয়েছিল গবেষণাগারে। আসলে ডিআইপিজি ক্যানসার নিয়ে বায়োমেড-এ গবেষণা চালাচ্ছিলেন বিজ্ঞানীরা। লুকাসকে নিয়ে সেখানেই হাজির হন তার বাবা-মা। এর পর ছয় বছরের লুকাসের উপর ওষুধের ট্রায়াল অর্থাৎ পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেন গবেষকরা। ওষুধটি কাজ করবে এই ব্যাপারে বিজ্ঞানীরাও নিশ্চিত ছিলেন না। অন্যদিকে ক্যানসারে বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তাই লুকাসের বাবা-মাও এই পথ বেছে নেন। অবশেষে সেই ট্রায়ালেই এল সাফল্য। সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠল লুকাস। বিশ্বে এই প্রথম কেউ এই ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হয়ে উঠল। একই সঙ্গে ওষুধের ট্রায়াল প্রথমবারেই এত বড় সাফল্য পেল।


আরও পড়ুন - Bad Smell From Mouth: ব্রাশ করেও মুখের দুর্গন্ধ যাচ্ছে না ? কী করবেন