নয়াদিল্লি: ঘুম কতটা প্রয়োজন? কেউ বলেন সাত ঘণ্টা, কারও আবার অন্তত ৯ ঘণ্টা ঘুম চাই। কিন্তু ঘুমোতে পারেন কতটা? সময়ের অভাব অথবা ঘুমের সমস্যা নানা কারণেই অনেকসময়েই খুব সামান্য ঘুম হয়। টানা এমন হতে হতে প্রভাব পড়ে স্বাস্থ্যে।


স্বাস্থ্যের উপর ঘুমের সময়ের প্রভাব কী, তা বুঝতেই একটি সমীক্ষা হয়েছিল। সেটা প্রকাশিত হয়েছিল PLOS Medicine-এই পত্রিকায়। সমীক্ষকরা ৭ হাজারেরও বেশি নারী ও পুরুষের উপর এই সমীক্ষা করেছেন। যাঁদের বয়স ৫০, ৬০ এবং ৭০-এর কোঠায়। Whitehall II cohort study-থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।


কী গবেষণা:
এক একজন ব্যক্তি কতটা সময় ঘুমিয়েছেন, তাঁর মৃত্যুর বয়স অথবা তাঁর একাধিক গুরুতর রোগ রয়েছে কিনা--এই তথ্যগুলি নিয়ে তার মধ্যেকার সম্পর্ক খোঁজার চেষ্টা হয়েছে।


ঝুঁকি কোথায়:
৫০ বছর বয়সে যাঁরা বলেছেন যে তাঁরা ৫ ঘণ্টা বা তারও কম ঘুমোন তাঁদের ক্ষেত্রে অন্তত একটি ক্রনিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্তত ২০ শতাংশ বেশি। একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও অনেকটা বেশি। একই বয়সে যাঁরা ৭ ঘণ্টা ঘুমোন তাঁদের সঙ্গে তুলনায় এই ফল পাওয়া গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ৫০, ৬০ এংব ৭০ বছরের ব্যক্তিদের যে যে তথ্য নেওয়া হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে ৭ ঘণ্টার ঘুমোনর দলের তুলনায় যাঁরা ৫ ঘণ্টা ঘুমোন তাঁদের দলের একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্তত ৩০-৪০ শতাংশ বেশি। দীর্ঘ সময় ধরে পাঁচ ঘণ্টা বা তার কম ঘুমোলে আয়ুও কমে আসে। মৃত্যুর ঝুঁকিও অন্তত ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়।  


কী বলছেন গবেষক:
গবেষক দলের প্রধান, ইউসিএল ইনস্টিটিউট অফ এপিডেমিওলজি অ্যান্ড হেলথ-এর ড. সেভেরিন সাবিয়া (Severine Sabia) জানিয়েছেন, উচ্চ আয়ের দেশগুলিতে একাধিক ক্রনিক রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। ওই দেশের বয়স্কদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ব্যক্তি ২ বা তারও বেশই ক্রনিক অসুখে ভুগছেন। এমন ঘটনা জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উপর চাপ ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। বয়স বৃদ্ধি পেলে ঘুমের সময়, গভীরতার বদল ঘটে। সুস্থ থাকতে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন বলে জানিয়েছে গবেষকরা।  


গবেষকরা জানাচ্ছেন, ঠিকমতো না ঘুমোলে, প্রয়োজনের চেয়ে কম সময় ঘুমোলে তার সঙ্গে রোগে আক্রান্ত হওয়ার সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে। সেই কারণেই ঘুমের প্রতি যত্ন নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। আধুনিক খাদ্যাভ্যাস, লাইফস্টাইলকেও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য দায়ী করা হয়েছে। ঠিকমতো ঘুমোনর জন্য শোওয়ার ঘরে আলো নেভানোর বা অত্যন্ত কম আলো রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাপমাত্রা আরামদায়ক রাখার কথা বলা হয়েছে। শোওয়ার ঠিক আগে টিভি বা মোবাই এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঘুমোনোর সময়  হাতের সামনে কোনওরকম বৈদ্যুতিন যন্ত্র, মোবাইল না রাখার পরামর্শও দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।   


আরও পড়ুন: বেতন কি মনের মতো? সহকর্মীকে বেতনের কথা বলেন ভারতীয়রা? চমক দিল সমীক্ষা