কলকাতা: জীবাণু বলতেই অনেকে খারাপ জীব বোঝেন। কিন্তু সবসময় তা নয়। বরং আমাদের শরীরে প্রচুর ভাল জীবও রয়েছে। তারা যে শুধু খাচ্ছে দাচ্ছে বড় হচ্ছে, তা নয়। আমাদের নানা উপকারও করছে। এই ধরনের ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে অন্যতম হল পেটের ব্যাকটেরিয়া। আমাদের কোলনে এমন অজস্র ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, যা আদতে আমাদেরই কাজে লাগে। ব্যাকটেরিয়াগুলি মিলে তৈরি করেছে একটি সুস্থ বাস্তুতন্ত্র। খাবার হজম থেকে পেট সাফ রাখা সহ নানা কাজে সাহায্য করে ব্যাকটেরিয়াগুলি। সম্প্রতি এক গবেষণা জানাচ্ছে, ব্যাকটেরিয়াগুলি পরবর্তী প্রজন্মেরও উপকার করে। আগামী প্রজন্মের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করছে এই ব্যাকটেরিয়া। এখন প্রশ্ন কীভাবে তা হচ্ছে ?
শিশুর পেটে কী করে এই ব্যাকটেরিয়া ?
সায়েন্স ইমিউনোলজি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটি বলছে, শিশু জন্মের পরেই সবরকম খাবার খেতে পারে না। যে খাবার সবাই খায়, সেগুলি শিশুকে দিলে তার অ্যালার্জির সমস্য়া হয়। অ্যালার্জি আদতে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অদ্ভুত আচরণ। যে জিনিসে আমাদের তেমন বিপদ নেই, সে জিনিস শরীরে প্রবেশ করলেও প্রতিক্রিয়া জানায়। যেমন কারও চিংড়ি মাছে অ্যালার্জি, কারও বেগুনে, কারও আবার সামুদ্রিক খাবারে। কিন্তু শিশুদের প্রাথমিকভাবে সব খাবারেই অ্যালার্জি থাকে। এর কারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তখনও ঠিকভাবে তৈরি হয় না। যা গড়ে তোলে এই ব্যাকটেরিয়া।
কীভাবে শিশুদের ইমিউনিটি বাড়ায় ব্যাকটেরিয়াগুলি ?
চিকিৎসকদের কথায়, ব্যাকটেরিয়াগুলি পেটে গিয়ে প্রথমে সেরোটোনিন নামে একটি নিউরো ট্রান্সমিটার ক্ষরণ করে। এর পর সেই নিউরো ট্রান্সমিটারই ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে দেয়। টি রেগুলেটরি সেলকে গঠন করে সেরোটোনিন। এই সেরোটোনিনই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে ঘটা রোগগুলিকে ঠেকায়। প্রসঙ্গত অটোইমিউন রোগের হার শিশুদেরও থাকে। সেই রোগের ঝুঁকিও কমায় নিউরো ট্রান্সমিটার।
কী বলছেন গবেষক?
সংবাদমাধ্যম এএনআই-কে গেল আ্যান্ড ইরা ড্রাকিয়ার ইনস্টিটিউটের ইমিউনোলজির সহ সহ অধ্যাপক মেলোডিজিং বলেন পেট হচ্ছে আমাদের দ্বিতীয় মস্তিষ্ক। পেটের মধ্যে শরীরের নব্বই শতাংশ নিউরো ট্রান্সমিটার তৈরি হয় সাধারণত মস্তিষ্কে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। শিশুদের ক্ষেত্রেও এভাবেই কাজ করে সেরোটোনিন। যার ক্ষরণের পিছনে বড় ভূমিকা রয়েছে ব্যাকটেরিয়ার।
ডিসক্লেইমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন - Health Tips: হার্ট ছাড়াও সুস্থ রাখে স্নায়ু, ভিটামিন K পাবেন কোন কোন খাবারে ?