রক্তল্পতা। মানবদেহের এমন একটি সমস্যা যা ভয়াবহভাবে অসুস্থ করতে পারে রোগীকে। ভারতে বহু গর্ভবতী, প্রসূতি এই রোগে ভুগে থাকেন। রক্তাল্পতার জন্য প্রসবের সময় প্রাণসংশয় পর্যন্ত ঘটতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হয় শিশুরাও। কী এই রোগ? কী কী সমস্যা হতে পারে? 


রক্তাল্পতা কী?
অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা এমন একটি অবস্থা যখন দেহে রক্ত বা হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি দেখা যায়। লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা কমে যায় এই রোগে। লোহিত রক্তকণিকা দেহের কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। ফলে রক্তকণিকা কমে গেলে সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন রোগী। 


একাধিক ধরনের অ্যানিমিয়া:
বিভিন্ন ধরনে অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা হতে পারে।  দেখে নেওয়া যাক সেগুলি।    


আয়রন ডেফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়া (Iron-deficiency anemia):এটা সবচেয়ে বেশি পরিমাণে দেখা যায়। যখন রক্তে পর্যাপ্ত লৌহ থাকে না, পর্যাপ্ত হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় না। অপুষ্টির কারণে এই রোগ হয়ে থাকে।


অ্যাপলাস্টিক অ্যানিমিয়া (aplastic anemia): অস্থিমজ্জার সমস্যায় এই ধরনের অ্যানিমিয়া ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে অস্থিমজ্জা (bone marrow) পর্যাপ্ত পরিমাণে লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে পারে না। যদিও এটি খুবই বিরল।


সিকল সেল অ্যানিমিয়া (sickle cell anemia): এটি একটি জিনগত সমস্যা। জিনের কোনও মিউটেশনজনিত সমস্যায় এই রোগ হয়। লোহিত রক্তকণিকার আকার পরিবর্তন হয়ে যায় এতে। তবে এটিও খুবই বিরল রোগ।


পার্নিসিয়াস অ্যানিমিয়া (pernicious anemia): শরীরে B-12 ভিটামিনের ঘাটতির সঙ্গে এই রোগ সম্পর্কিত।  শরীর যখন B-12 ভিটামিন গ্রহণ করতে পারে না, তখন এই রোগ হতে পারে। এটি একটি অটোইমিউন রোগ (autoimmune disease)।      


দেখে নেওয়া যাক, আয়রন ডেফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়ার কী কী উপসর্গ হতে পারে


অস্বাভাবিক ক্লান্তি
চামড়ার রং ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
মাথাব্যথা, ঝিমুনি ভাব
অনেকসময় বুকে ব্যথা, অল্প শ্বাসকষ্টও হয়ে থাকে
জিভে ঘা হতে পারে
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে খিদে কমে যাওয়া বা ওজন কমে যাওয়া


চিকিৎসা
আয়রন ডেফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়ার চিকিৎসা সহজেই সম্ভব। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চললে। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও খাবার খেলে সহজেই সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন আক্রান্তরা।  


ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।


আরও পড়ুন: লালারসের নমুনা নয়, শ্বাস-প্রশ্বাসেই চেনা যাবে করোনা, সহজ উপায় বার করলেন বিজ্ঞানীরা