ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : এ যেন এক আশ্চর্য সমাপতন। মহালয়ায় চক্ষুদান হল দেবী প্রতিমার। তার পরের দিনই দৃষ্টিদান হল তিন বছরের এক শিশুর, জন্মের পর থেকে যার কাছে এতদিন সব কিছুই ছিল একেবারে ঝাপসা। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর খুশির বাঁধ ভেঙেছিল বাবা-মায়ের। কিন্তু অচিরেই মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছিল একরত্তি সন্তানের জন্মগত চোখের  ব্যাধি। ছোট্ট শিশুর কাছে সব কিছুই ছিল ঝাপসা। সেই ঘোলাটে পর্দা সরিয়ে নবীন প্রাণকে দৃষ্টির আলোয় ফেরালেন এই শহরেরই চিকিৎসকরা। এবারই প্রথম পুজোর রোশনাই দেখবে নিজের চোখে। মা-বাবার কোলে চড়ে। 


ছোট থেকেই ভালোভাবে দেখতে পেত না খুদেটি। যা দেখে মা -বাবার সন্দেহ হয়। একটু বড় হওয়ার পর যখন কোনও কিছু দেখার জন্য চোখের খুব কাছে আনত। দেখা যায় চোখে জন্মগত ছানি - চিকিৎসার পরিভাষায় Congenital cataract। রোগ নির্ণয় হতেই নীলরতন সরকার মেডিক্যালে শুরু হয় শিশুর চিকিৎসা। সব রকম পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে লেন্স বসানোর সিদ্ধান্ত নেন। গত অগাস্ট ও সেপ্টেম্বরে শিশুর দুটি চোখে অস্ত্রোপচার হয়। বৃহস্পতিবার চেকআপের পর শিশুর পরিবারকে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে।  


নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিভাগ প্রধান সমীর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'অপারেশন ঠিকঠাক ভাবে হয়েছিল। Congenital cataract অনেক কারণে হতে পারে। গর্ভাবস্থায় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার প্রভাবে হতে পারে। অন্য রোগের পার্শ্বপ্রবাবে হতে পারে। ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে চিহ্নিত করা গেলে দ্রুত ঠিক করা যায়।' অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অর্কেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'চোখে লেন্স বসানো হয়েছে, চশমাও দেওয়া হয়েছে। পরে আর চশমা লাগবে না। স্বাভাবিক ভাবেই সব কাজ করতে পারবে।' পুজোর মুখে একরত্তি সন্তান দৃষ্টি ফিরে পাওয়ায় স্বস্তিতে বাবা-মা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই শিশু বড় হয়ে আর পাঁচজনের মতোই স্বাভাবিক ভাবে সব কাজ করতে পারবে। 


আরও পড়ুন- এসএসকেএমে জটিল অস্ত্রোপচার, সদ্যোজাতর খাদ্যনালি থেকে বের করা হল ধাতব হুক


আরও পড়ুন- জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য, শ্রমিকের পেট থেকে বের করা হল ৭.৫ কেজি ওজনের মাংসপিণ্ড