কলকাতা: রবিবার জীবনাবসান হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সাধন পাণ্ডের। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। ফুসফুসের সংক্রমণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তবে অনেকদিন আগে থেকেই তিনি কিডনির অসুখেও আক্রান্ত ছিলেন। প্রায় এক দশক আগে কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছিল তাঁর। আমার-আপনার আশেপাশে অনেকেই ভুগছেন কিডনির অসুখে। কিন্তু কী এই অসুখ? কেন হয়?
দিনের পর দিন নানা কারণে বাড়ছে স্ট্রেস (stress)। শারীরিক হোক মানসিক- শরীরের উপর চাপ বাড়ছে নানা ভাবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিডনিও (kidney)। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে কিডনির সমস্যার পিছনে থাকে আমাদের প্রতিদিনের রুটিন (lifestyle)।
আগে জেনে নেওয়া যায় কী কী কাজ করে আমাদের এই অঙ্গ।
শরীরের বর্জ্য পদার্থ ছেঁকে বের করে দেয় কিডনি। শরীরের অতিরিক্ত জল, দূষিত পদার্থ বের করার হাতিয়ার কিডনি। মানবশরীরে পিএইচ মাত্রা (ph level),নুনের পরিমাণ, পটাশিয়ামের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে কিডনি। এছাড়াও বহু গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার কাজ করে কিডনি। তাই এই অঙ্গটিকে সুস্থ রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। কিডনি সুস্থ রাখতে নজর রাখতে হবে বেশ কিছু বিষয়ে।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
শুধু ওজন কমানো বা রোগা হওয়া নয়। রক্তচাপ (blood pressure) কমানো ও হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও ব্যায়াম করা প্রয়োজন। কারণ এই দুটি জিনিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে কিডনিও সুস্থ থাকে।
দূরে থাকুক মধুমেহ
রক্তে কোনওভাবেই শর্করার মাত্রা বাড়তে দেওয়া চলবে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মধুমেহ (diabetes) অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে গেলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিডনি। একবার কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলে তা মেরামত করার কোনও উপায় নেই। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকলে কিডনি নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন আপনি।
প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল
প্রতিদিন ঠিকমতো জল পান করা কিডনি ভাল রাখার অন্যতম প্রধান শর্ত। অনেকেই এসি রুমে বসে কাজ করেন। জলতেষ্টা পায় না, ফলে সময়মতো জলও পান করেন না। কিন্তু, তাতেই ক্ষতি হচ্ছে কিডনির। সারাদিন ধরে পরিমাণ মতো জল পান করুন।
নেশাদ্রব্যে না
যে কোনও নেশা কিডনির শত্রু। বিশেষ করে ধূমপান এবং মদ্যপান। শরীরে রক্তবাহী ধমনীর ক্ষতি করে নিকোটিন। যার প্রভাবে খারাপ হতে পারে কিডনি। ধূমপান বন্ধ করলে কমবে সেই ক্ষতির সম্ভাবনা।
যথেচ্ছ ওষুধ খাবেন না
প্রয়োজন হলে অবশ্যই ওষুধ খেতে হবে। কিন্তু সেটা একমাত্র ডাক্তারের পরামর্শ মেনে। অনেকেই নিজে থেকে ওষুধ খেয়ে রোগ কমানোর চেষ্টা করেন। সতর্ক থাকুন। এমন করলে উল্টে আপনি কিডনির রোগ ডেকে আনবেন।
কোনওরকম সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখান। সবক্ষেত্রেই কিডনি বদলানোর (kidney transplant) প্রয়োজন পড়ে না। সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে এবং নিয়ম মেনে চললে আপনিও দীর্ঘদিন স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, উপসর্গ কী, কখন দেখাবেন ডাক্তার, জেনে নিন এক ঝলকে