কলকাতা: মাত্র ১০০ টাকায় এবার ক্য়ানসারের ওষুধ পাওয়া যাবে। টাটা মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউটের ক্যানসার বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এমনটাই জানালেন। এনডিটিভিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রবীণ বিজ্ঞানী রাজেন্দ্র বাদভে বলেন, ভারতের ফুড সেফটি ও সিকিউরিটি অথরিটির কাছে ইতিমধ্যেই আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদন মঞ্জুর হলেই বাজারে আসবে ক্যানসারের এই ওষুধটি (Rs 100 Cancer Medicine)। পাওয়া যাবে মাত্র ১০০ টাকায়। বর্তমানে ক্যানসার চিকিৎসায় খরচ হয় লাখ লাখ টাকা। সেই খরচ একধাক্কায় অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি, ৫০ শতাংশ কমে যাবে এই দাম।


যুগান্তকারী গবেষণা


দীর্ঘ দশ বছর এই নিয়ে গবেষণা চলেছে টাটা মেমোরিয়াল ইন্সটিটিউটে (Tata Memorial Institute)। তার পরই এই ওষুধটির খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা। কিছু ক্ষেত্রে ক্যানসার একবার হলেও আবার ফিরে আসে। একে ক্যানসার রেকারেন্স বলা হয়। সেই কারণেই রোগীকে দীর্ঘ পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। একবার ক্যানসার হলে সাবধানে থাকতে হয় রোগী ও রোগীর পরিবারের সদস্যদেরও। ক্যানসার একবার সেরে গেলেও বারবার ফিরে আসলে বাড়ে চিকিৎসা খরচ। কেমোথেরাপি সহ যে যে চিকিৎসা বর্তমানে চালু রয়েছে, তাদের অধিকাংশের খরচ লাখ টাকার উপরে। নয়া ওষুধ (Rs 100 Cancer Medicine) এই খরচ ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেবে। কিন্তু কীভাবে শরীরের ভিতর কাজ করবে ওষুধটি ? তার আগে জেনে নেওয়া যাক, ক্যানসার কেন ফিরে আসে।


ক্যানসার কেন ফিরে আসে (Recurring Cancer Reason) ?


এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়েছেন গবেষকরা। ক্যানসার হলে তা সারাতে রেডিয়েশন, কেমোথেরাপি ও সার্জারির সাহায্য নেওয়া হয়। সবার ক্ষেত্রে এই তিনটি লাগে না। রোগী অনুযায়ী তা পাল্টায়।তবে ব্রেস্ট, কোলন ও অন্যান্য বেশ কিছু ক্যানসার বারবার রোগীর শরীরে ফিরে আসে। এর কারণ ক্যানসার কোশগুলি মরে গেলে অতিক্ষুদ্র কিছু কণায় বিভক্ত হয়ে যায়। এগুলিকে সেল ফ্রি ক্রোমাটিন পার্টিকল বা কণা বলা হয়। এই কণাগুলি শরীরের অন্যান্য জায়গায় পৌঁছে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, এগুলি সুস্থ কোশের ভিতর প্রবেশ করে। তার পর সেই কোশগুলিকে ক্যানসার কোশে পাল্টে ফেলে। যা থেকে ফের ক্যানসার ফিরে আসে।


কীভাবে কাজ করবে ওষুধ ?


১০০ টাকার নয়া ওষুধটি আদতে একটি প্রিঅক্সিডেন্ট ট্যাবলেট। রেসভেরাট্রল ও কপারের (R+Cu) যৌথ মিলনে তৈরি করা হয়েছে এই নয়া ওষুধ। বিজ্ঞানীদের কথায়, এই ওষুধটি খেলেই পেট সঙ্গে সঙ্গে এটি শোষণ করে নেয়। এর মধ্যে থেকে অক্সিজেনের মুক্তমুলকগুলি রক্তে মিশে যায়। তার পর ক্রোমাটিন পার্টিকলকে ধ্বংস করে দেয় সেই অক্সিজেন র‌্যাডিকেল। যা একই সঙ্গে কেমোথেরাপির টক্সিসিটিকেও ধ্বংস করে বলে জানান টাটা মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। গবেষকদের কথায়, এটি আদতে  (R+Cu)-এর ম্যাজিক। আপাতত মনে করা হচ্ছে জুন-জুলাই মাস থেকেই এটি বাজারে পাওয়া যাবে।


আরও পড়ুন - Cancer: পেটের ভাল জীবাণুই ঠেকাতে পারে ক্যানসার, কীভাবে ?