কলকাতা: বিভিন্ন রকম ক্যানসারের মধ্যে মারাত্মক একটি ক্যানসার মেসোথেলিয়োমা। এবার তারই ওষুধ আবিষ্কার হল ব্রিটেনে। লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির গবেষকরা যৌথভাবে ওই ওষুধের খোঁজ পেলেন। নতুন ওই ওষুধ আবিষ্কারের ফলে ক্যানসার চিকিৎসা অনেকটাই পাল্টে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।


মেসোথেলিয়োমা ফুসফুসের একটি বিশেষ ধরনের ক্যানসার। সাধারণত,যারা দীর্ঘদিন অ্যাসবেস্টসের মধ্যে কাজ করেন, তাদের এই ক্যানসার হয়। মূলত নির্মাণ শ্রমিকদের মধ্যে এটি দেখা যায়। বর্তমানে এই ক্যানসারে রোগীর বেঁচে ফেরার হার একেবারেই কম। প্রতি বছর সারা বিশ্বে হাজার হাজার ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শুধু ব্রিটেনেই প্রতি বছর ২৭০০ জন মেসোথেলিয়োমাতে আক্রান্ত হন।


নতুন ওষুধ কেন যুগান্তকারী ?


মেসোথেলিয়োমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা চালাচ্ছেন চিকিৎসকরা। রোগীদের বাঁচানোর ও আয়ু বাড়ানোর প্রচেষ্টাই গবেষণাগুলির মূল লক্ষ্য। সম্প্রতি আবিষ্কৃত ওষুধটি গত ২০ বছরের ইতিহাসে একটি বিরল আবিষ্কার বলেই মনে করা হচ্ছে। দেখা গিয়েছে, ওই ওষুধ শরীরকে ক্যানসার কোশে খাবার জোগান দিতে দেয় না। ক্যানসার কোশ বাঁচার জন্য পুষ্টি দরকার। এই পুষ্টি শরীর থেকেই আসে। সেই পথটিই বন্ধ করে দিচ্ছে ওষুধটি। এর ফলে রোগীর বেঁচে থাকার হারও বাড়বে। গবেষকরা জানিয়েছেন, চার গুণ বাড়বে রোগীর বেঁচে থাকার হার। পাশাপাশি গড়ে দেড় মাস মতো আয়ুও বেড়েছে বলে দাবি গবেষকদের।


পাঁচ দেশ জুড়ে গবেষণা


শুধু ব্রিটেন নয়, এই গবেষণার জন্য আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি ও তাইওয়ান থেকে রোগীদের পরীক্ষা করা হয়। রোগীদের প্রত্যেকে কেমোথেরাপি চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রতি তিন সপ্তাহ কেমো নিতে হত। মোট ছয়বার এই কেমো নিতে হয়।  তাদের কমবেশি বয়স ছিল ৭০-এর কাছাকাছি। চূড়ান্ত পর্যায়ের বিশ্লেষণে মোট ২৪৯ জনকে বেছে নেওয়া হয়।এই রোগীদের দুটি দলে ভাগ করা হয়। প্রথম দলটিকে ওই বিশেষ ওষুধ ADI-PEG20 (pegargiminase) দেওয়া হয়। অন্য দলটির উপর প্রচলিত চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া হয়। দুই বছর ধরে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল। দেখা যায়, কেমোর সঙ্গে নয়া ওষুধটি দেওয়ায় ক্যানসার মুক্ত অবস্থায় কিছু রোগী ৬.২ মাস ছিলেন। অন্যদিকে সাধারণ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা রোগীদের ক্যানসার মুক্ত অবস্থা ৫.৬ মাস স্থায়ী হয়। এর ভিত্তিতেই দেখা গিয়েছে, ওষুধের কার্যকারিতা।


আরও পড়ুন - Depression Remedies: অল্প ব্যায়ামই কি অবসাদ থেকে অনেকটা রেহাই দেয় ?