কলকাতা: যতদিন যাচ্ছে তত দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে হৃদরোগ সংক্রান্ত ব্যধি। অল্পবয়সী থেকে প্রৌঢ়-সব বয়সের ব্যক্তিদেরই দেখা দিচ্ছে হার্ট অ্য়াটাক (heart attack) বা হৃদযন্ত্র বিকল (cardiac arrest) হওয়ার সম্ভাবনা। 


অফিসে বা কাজের জায়গায় কিংবা বাড়িতে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা শোনা যায়। অনেকসময়েই বুঝে উঠতে দেরি হয় বলে প্রাণসংশয় হতে পারে রোগীর। কিন্তু একটু সচেতন থাকলে বা সামান্য কিছু আপৎকালীন প্রক্রিয়া শিখে রাখলে এই সময় ওই রোগীকে সাহায্য করা যায়। এই কাজের জন্য হয়তো প্রাণেও বেঁচে যেতে পারেন ওই রোগী।


হার্ট অ্যাটাক বোঝা যাবে কী করে?
বেশ কিছু উপসর্গ রয়েছে এই রোগের। আক্রান্ত ব্যক্তি  হঠাৎ ঘামতে (sweat) শুরু করতে পারেন। স্বাভাবিক অবস্থাতেও প্রচণ্ড বেশি ঘাম হতে পারে। শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর হঠাৎ ছেড়ে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে মাখা ঘুরে পড়ে যাওয়া বা জ্ঞান হারানো বা হঠাৎ চোখে অন্ধকার দেখার মতো অভিজ্ঞতা হতে পারে।  এছাড়াও, হার্ট অ্য়াটাক (heart attack) হলে বুকে অসহ্য যন্ত্রণা হয়ে থাকে। বুকের মাঝখান, কোনও একপাশে, ঘাড়ে, পিঠে যন্ত্রণা হয়। অনেকসময় হাত বা কাঁধে বা চোয়ালে আচমকা প্রবল যন্ত্রণাও হার্ঠ অ্যাটাকের লক্ষ্ণণ হতে পারে। 


সবার আগে:
যত দ্রুত সম্ভব কাছের কোনও উপযুক্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে (hospital) নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তৎক্ষণাৎ গাড়ি বা অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করতে হবে।


আর কী সতর্কতা:
অ্যাম্বুল্যান্স (ambulance) আসার আগে বা হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথে বেশ কিছু দিকে নজর রাখতে হবে। রোগীকে কোথাও হেলান দিয়ে বসিয়ে দেওয়া যায়, অথবা শুইয়ে দেওয়া যায়। রোগীর জ্ঞান থাকলে তাঁর কাছে যেটা সবচেয়ে সুবিধেজনক সেভাবেই রাখতে হবে। রোগীর ভয় পাওয়া স্বাভাবিক, এই সময়ে লাগাতার সাহস জুগিয়ে যেতে হবে। মানসিক ভাবে সাহসী থাকলে তা আদতে রোগীকে সুস্থ হতে সাহায্য করে। যদি রোগী কোনও ওষুধ খেয়ে থাকেন, তাঁকে সেটাই দিতে হবে।


সিপিআর:
সিপিআর বা cardiopulmonary resuscitation. এই পদ্ধতি ঠিকমতো প্রয়োগ করলে অনেকক্ষেত্রে রোগীর প্রাণসংশয় কমে যায় বলে জানিয়ে থাকেন চিকিৎসকদের একাংশ। এটি কীভাবে করতে হয়?


১. রোগীকে প্রথমে শুইয়ে দিতে হবে। রোগীর পালস, শ্বাসপ্রক্রিযা পরীক্ষা করতে হবে।


২. তারপর দুটি হাতের আঙুল একে অপরের সঙ্গে লক করে এমন করতে হবে যাতে একটি হাতের উপর আরেকটি হাত থাকে, হাতের নীচের দিকে তালু থাকে।


৩. এবার দুটি হাত দিয়ে এক সঙ্গে পাজরের ঠিক নীচে বুকের মাঝবরাবর সেকেন্ডে ২ বার করে পাম্প করার মতো করে জোরে চাপ দিতে হবে। এটা করার সময় কনুই ভাঙবে না।


৪. প্রয়োজনে রোগীর মুখ খুলে শ্বাস (mouth to mouth) দিতে হবে।    


সিপিআর-এরে গোটা প্রক্রিয়া ডাক্তারের কাছে না যাওয়া পর্যন্ত চালানো যেতে পারে। হৃৎযন্ত্র কাজ না করলেও এর মাধ্যমে শরীরে রক্ত সংবহন মোটামুটি চালু রাখা যায়। এই পদ্ধতি কোনও চিকিৎসকের কাছ থেকে হাতেকলমে শিখে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।

আরও পড়ুন: ঝুঁকি নিতে কতটা তৈরি? বলে দেবে ঘুম