কলকাতা: ৩ মার্চ বিশ্ব শ্রবণ দিবস। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিন নানা কর্মসূচি আয়োজিত হয়। প্রতি বছর এই দিনটি আলাদা আলাদা থিম নির্বাচিত হয়। চলতি বছরও তেমনই একটি থিম নির্বাচন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থা। ২০২৪ সালে নির্বাচন করা হয়েছে ‘মানসিকতার পরিবর্তন: সকলের জন্য কান  ও শ্রবণশক্তির সঠিক যত্ন বাস্তবায়িত হোক’ থিমটি। অর্থাৎ সকলের জন্য একটি সু্ন্দর জীবনের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করা হোক। অনেক ক্ষেত্রে শৈশব থেকে একটি শিশুর শ্রবণক্ষমতা থাকে না। সেটি ঠিক সময় বোঝা গেলে কি সারিয়ে ফেলা যায় ? কোন কোন লক্ষণ দেখলে বোঝা যায় একটি শিশু ঠিকমতো শুনতে পাচ্ছে না ? এই বিষয়গুলি নিয়েই এবিপি লাইভের সঙ্গে বিশদে আলোচনা করলেন সিএমআরআই হাসপাতালের ইএনটি সার্জেন অর্জুন দাশগুপ্ত।


‘বেশিরভাগ শিশুর অল্পবিস্তর শ্রবণক্ষমতা থাকে’


বধির শিশুদের নিয়ে অন্বেষা কলকাতা তরফে একটি অনুষ্ঠানের আয়জন করা হয়। সেখানে আমন্ত্রিত অতিথি চিকিৎসক অর্জুন এবিপি আনন্দকে জানালেন, ‘শিশুরা একেবারেই শুনতে পায় না অর্থাৎ পুরোপুরি বধির - এমনটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হয় না। বেশিরভাগই  কিছুটা হলেও শুনতে পায়। কিন্তু কোনও কারণে কানে সমস্যা থাকলে আর ঠিক সময়ে তার চিকিৎসা না হলে শ্রবণশক্তি হারিয়ে যায়। একজন শিশু মূক হওয়ার পিছনে শ্রবণশক্তির অনেকটাই ভূমিকা থাকে। ঠিকমতো শুনতে পায় না বলেই মুখে ঠিকমতো বলতে পারে না তারা। কোনও শব্দ মস্তিষ্কে ইনপুট হিসেবে না গেলে আউটপুট হিসেবে মুখ থেকে শব্দ বেরোনোর কথা নয়।’ 


কী করে বুঝব সন্তান শুনতে পাচ্ছে কি না ?



  • কোনও শব্দের পরিপ্রেক্ষিতে শিশু উত্তর দিচ্ছে কি না সেটি প্রথমেই দেখা দরকার। 

  • অথবা আশেপাশে কোনও শব্দ হলে খুদে তাকাচ্ছে কি না সেটিও দেখতে হবে।

  • যেকোনও শব্দের পরিপ্রেক্ষিতে শিশু কেমনভাবে সাড়া দিচ্ছে সেটি নজর করা জরুরি। তাহলেই খুদের সমস্যা হচ্ছে কি না বোঝা সম্ভব।


বাবা-মায়েদের দেরিতে বাড়ে জটিলতা


চিকিৎসকের কথায়, বাবা-মায়েদের প্রায়ই এটি বুঝতে দেরি হয়ে যায়। যখন তারা দেখেন, শিশু কথা ঠিকমতো বলছে না, তখন তারা এই বিষয়ে সচেতন হন। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। কিন্তু ততক্ষণে কানের সমস্যা বেড়ে যায় কিছুটা।


কোনও বিকল্প উপায় ?


চিকিৎসক অর্জুন দাশগুপ্তের কথায়, অটোঅ্যাকুয়াস্টিক এমিশন নামের একটি পরীক্ষা হয়। এই পরীক্ষাটি শিশুদের জন্মের সময় করিয়ে নেওয়া উচিত। তাতেই বোঝা সম্ভব কানে আদৌ কোনও সমস্যা আছে কি না যার থেকে পরে বধিরতা আসতে পারে।


OAE টেস্টেই আগাম খবর মেলে


এই পরীক্ষা পদ্ধতি অতি সহজ বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসক। বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসকরা মেশিন দিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন। ব্যক্তিগতভাবে কমবেশি ৫০০ টাকা নিয়ে থাকেন পরীক্ষার জন্য। তবে এখনও অনেক হাসপাতালে এই পরীক্ষা হয় না। ফলে শিশু জন্মের পর এই সুবিধাটা পায় না। পেলে অনায়াসে শিশুকে একটি সুন্দর জীবন দেওয়ার চেষ্টা করা যায়। ‘সারা দেশে যদি সবার জন্য এই পরীক্ষা বিনামূল্য়ে শুরু করা যায়, তবে মূক-বধিরতার সমস্যা অনেকটাই কম হবে’ - মত চিকিৎসকের।


আরও পড়ুন - Fatty Liver: ফ্যাটি লিভার হলে বাড়ে এই রোগগুলির ঝুঁকি, রাশ টানবেন কীভাবে ?