লেকটাউনে প্রৌঢ়া খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ; কী কী করেছিলেন, তদন্তকারীদের দেখান অভিযুক্ত
ধৃতকে এ দিন মহিলার ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়। কীভাবে খুন করা হয় মহিলাকে, এদিন তা দেখান অভিযুক্ত।
আবির দত্ত, কলকাতা: লেকটাউনে প্রৌঢ়া খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে দাবি, ঘটনার দিন তিনি কী কী করেছিলেন, তা তদন্তকারীদের দেখান অভিযুক্ত। মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁ থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে।
লেকটাউনে ৬২ বছরের মহিলাকে খুনের কিনারা করা হয় ১০ দিনের মধ্যে। উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁ থেকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় পরিচারক দীনেশ প্রসাদকে। যে দীনেশ মুম্বই থেকে এসে পরিচারকের কাজ নেন মহিলার বাড়িতে। রবিবার সকালে সেই দীনেশ প্রসাদকে নিয়েই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করাল পুলিশ।
ধৃতকে এ দিন মহিলার ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়। কীভাবে খুন করা হয় মহিলাকে, এদিন তা দেখান অভিযুক্ত। ধৃতকে জেরা করেই বাড়ির কাছে খালের ধার থেকে এদিন উদ্ধার হয় একটি লাল প্যাকেট।
পুলিশ সূত্রে দাবি, ঘটনার দিন এই প্যাকেটটি ফেলে যাওয়া হয়। প্যাকেট থেকে মিলেছে গয়নার খালি বাক্স। জেরায় ধৃত জানান, ওই দিন অটো ধরে প্রথমে বাস স্ট্যান্ডে যান তিনি। বাসে হাওড়ায় পৌঁছে ট্রেন চড়ে প্রথমে বারাণসী, সেখান থেকে ট্রেন বদল করে পৌঁছন বদায়ুঁর বাড়িতে। এমনটাই পুলিশ সূত্রে দাবি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, স্বামীর মৃত্যুর পর বাঙুরের বি ব্লকের ফ্ল্যাটে একা থাকতেন ৬২ বছরের দীপা মুখোপাধ্যায়। ২০১৯-এ তিনি মুম্বইয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় হোটেল কর্মী দীনেশ প্রসাদের। পরিচারকের কাজ করতে চান বলে গত ১৮ জুলাই সেই দীনেশ মহিলার ফ্ল্যাটে হাজির হন। দীনেশকে কাজ দেন মহিলা। তারপরেই সুযোগ বুঝে এই কাজ করে অভিযুক্ত।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছিলেন মৃত্যুর আগের কয়েক দিন ধরে দীপা মুখোপাধ্যায়ের কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজ নিতে এ দিন পরিবারের সদস্যরা ফ্ল্যাটে আসতেই চক্ষু চড়ক গাছ। দেখা যায় ঘরের মেঝেয় মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওই মহিলা।
গলায় গামছার ফাঁস লাগানো ছিল। পরিবারের দাবি, মহিলার সোনার গয়না লুঠ করা হয়েছে। মৃতার ছেলে তাপস মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'ফোন অফ ছিল, খবর পেয়ে এসেছি, লুঠ চালিয়েছে।' মৃতার প্রতিবেশী অনিতা নাথ নামে এক মহিলার কথায়, 'বাইরে থেকে এক পরিচারক এনে রেখেছিলেন।' ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে মহিলাকে।
অভিযোগ ওঠে, আশ্রয়দাত্রী মহিলাকেই খুন করে চম্পট দেন দীনেশ। তবে শেষরক্ষা হয়নি। ১০ দিন পরেই ধরা পড়েন অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় দীনেশের সহযোগী আরও একজনকে খোঁজা হচ্ছে।