পৃথক বাক্স তৈরির নির্দেশ, যে কোনও অভিযোগ সরাসরি তাঁকে জানানোর আহ্বান করলেন সেনাপ্রধান
নয়াদিল্লি: দেশে একের পর এক সামরিক ও আধা-সামরিক জওয়ানের তরফে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওঠা দেশজুড়ে বিতর্কের প্রেক্ষিতে সমাধানের চেষ্টায় অবতীর্ণ হলেন খোদ সেনাধ্যক্ষ। তাঁর পরামর্শ, যে কোনও অভিযোগ সরাসরি তাঁর কাছে জানাতে। এর জন্য পৃথক বাক্স থাকবে। এমনকী, অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
গতকালই, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পরিচারকের কাজ করানোর অভিযোগ তোলেন এক সেনা জওয়ান। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় দেহরাদুনের ৪২ নম্বর ইনফ্যান্ট্রি বিগ্রেডের ল্যান্সনায়েক যজ্ঞপ্রতাপ সিংহের দাবি করেন, তাঁকে দিয়ে পরিচারকের কাজ করানো হত। তিনি প্রশ্ন তোলেন, একজন সেনাকে কেন ঊর্ধ্বতন অফিসারের জুতো পলিশ করতে হবে?
এই প্রেক্ষিতে এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত পরিষ্কার করে দেন, বাহিনীতে অফিসারদের ‘সহায়ক’ প্রথা ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও তিনি যোগ করেন, শান্তিপূর্ণ জায়গাগুলিতেই যাতে এই প্রথা সীমাবদ্ধ থাকে, সেই ব্যাপারে তিনি সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন।
পাশাপাশি, কোনও সামরিক কর্মীর যদি কিছু অভিযোগ থেকে থাকে, তাহলে তা সর্বসমক্ষে প্রকাশ না করে ব্যক্তগতভাবে তাঁকে জানানোর পরামর্শও দেন রাওয়াত। তিনি বলেন, এর জন্য প্রত্যেক সেনা কম্যান্ড সদর দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে একটি পৃথক সেনাপ্রধানকে অভিযোগ বা পরামর্শ দেওয়ার বাক্স বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়।
রাওয়াতের আহ্বান, কেউ অভিযোগ জানাতে চাইলে, তিনি যেন তাঁর পুরো নাম ও র.. লেখেন। সেনাপ্রধানের আশ্বাস, ওই চিঠি সরাসরি তাঁর কাছেই পৌঁছবে এবং অভিযোগকারীর নাম একেবারে গোপন রাখা হবে। এমনকী, ব্যবস্থাগ্রহণের সময় সেই নাম উল্লেখ করা হবে না। এই প্রসঙ্গে তিনি জওয়ানদের অনুরোধ করেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ওপর ভরসা রাখতে।
গতকাল নিজের ভিডিওতে যজ্ঞপ্রতাপ বলেন, গত বছরের জুন মাসে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগপত্র পাঠান। যার প্রেক্ষিতে তদন্তের নির্দেশ দেয় প্রধানমন্ত্রীর দফতর। তবে, যজ্ঞপ্রতাপের দাবি, অভিযোগ করায় তাঁর উপর অত্যাচারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন ব্রিগেডিয়ার পদমর্যাদার সেনা অফিসার।
জওয়ান আরও জানান, অত্যাচার এমন পর্যায়ে পৌঁছয়, যে একসময় আত্মহত্যা করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। যদিও তিনি সেই পথে হাঁটেননি। যজ্ঞপ্রতাপ যোগ করেন, এসবের মধ্যে তাঁর কোর্ট মার্শাল হয়েছে। জওয়ানের প্রশ্ন, কী দোষ করেছেন, যার জন্য তাঁর কোর্ট মার্শাল হল?