নয়াদিল্লি: বিরোধীদের একছাতার নিচে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে বিরোধী শিবিরের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবেও দেখতে শুরু করেছিলেন অনেকে। কিন্তু দিল্লিতে I.N.D.I.A জোটের বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের নাম ওঠার পর থেকেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা সংযুক্ত জনতা দলের প্রধান নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) মুষড়ে পড়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। খোদ রাহুল গাঁধী ফোন করে তাঁর মন বোঝার চেষ্টা করেন বলেও খবর। (I.N.D.I.A Alliance)


২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাকি আর মাত্র কয়েক মাস। তার আগে শাসক এবং বিরোধী, দুই শিবিরেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। পাকা কথা সেরে নিতে সম্প্রতিই দিল্লিতে বৈঠক করেন বিরোধী শিবির I.N.D.I.A-র শরিকরা। কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধী, দলের সাংসদ রাহুল গাঁধী, খড়্গে, আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের-সঙ্গে নীতীশও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।


আর সেই বৈঠকেই কংগ্রেস সভাপতি খড়্গেকে সভাপতি করার প্রস্তাব দেন মমতা। তাঁর প্রস্তাবে সায় দেন কেজরিওয়ালও। বিরোধী শিবিরের অন্য শরিকরাও খড়্গের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন বলে খবর। বিষটি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হলে, পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন খোদ খড়্গে। জানান, আগে লোকসভা নির্বাচনে জিততে হবে I.N.D.I.A-কে,তার পর প্রধানমন্ত্রীর মুখ কে হবেন, ভাবা যাবে। তিনি নিজের জন্য কিছু চান না বলেও জানান খড়্গে। 


আরও পড়ুন: Agnimitra Paul: প্রিয়ঙ্কা কেন? বারাণসীতে মোদির বিরুদ্ধে লড়ুন মমতা, চ্যালেঞ্জ অগ্নিমিত্রার, পেলেন পাল্টা জবাব


কিন্তু খড়্গে বিষয়টিকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করলেও, শরিকদের সুপারিশে নীতীশ মুষড়ে পড়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে।  I.N.D.I.A জোটের বৈঠক চলাকালীন সংসদ থেকে বিরোধী সাংসদদের সাসপেন্ড করা নিয়েও পরিস্থিতি উত্তাল ছিল। তাই বৈঠক চলাকালীন আলাদা করে নীতীশের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি রাহুল। কিন্তু জোটের বৈঠকের পর থেকে নীতীশ মুষড়ে পড়েছেন বলে যে কানাঘুষো চলছে, তাতে শুক্রবার রাতে নীতীশকে রাহুল ফোন করেন বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর। 


বিহারে বিজেপি-র সঙ্গ ত্যাগ করার পর থেকেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে মাঠে নেমে পড়েছিলেন নীতীশ। বিরোধীদের একছাতার তলায় নিয়ে আসতে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেন তিনি। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার নিরিখে বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রীর মুখ হওয়ার দৌড়ে নীতীশকে এগিয়ে রেখেছিলেন অনেকেই। সম্প্রতি I.N.D.I.A জোটের আহ্বায়ক হওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয় নীতীশকে। কিন্তু তিনি আহ্বায়ক হতে রাজি হননি। 


এর আগে যদিও, একাধিক বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বাসনা নেই বলে জানিয়েছিলেন নীতীশ। গতবছর সিপিএম-এর সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে বৈঠকের পর এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নীতীশকে বলতে শোনা যায়, "আমরা সকলে একজোট হয়েছিল। সব আঞ্চলিক দলগুলিকে একজোট করাই আমাদের লক্ষ্য। আর এসব ভুল জল্পনা, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনও বাসনা নেই আমার।" কিন্তু যে I.N.D.I.A জোটের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন নীতীশ, সেখানে তাঁর পরিবর্তে খড়্গের নাম উঠে আসা নীতীশের মনঃপুত হয়নি বলে খবর। 


এ নিয়ে নীতীশের দলের তরফে কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি যদিও। তবে I.N.D.I.A জোটের বৈঠকে বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে খড়্গের নাম উঠে আসার পর পরই নীতীশকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ করার দাবিতে পোস্টার লাগানো হয় একাধিক জায়গায়। বিহারে  নীতীশের ডেপুটি, লালুপুত্র তেজস্বী যাদব যদিও অসন্তোষের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, জোটে কোথাও কোনও সমস্যা নেই। এক সপ্তাহের মধ্যে আসন রফা হয়ে যাবে। এসব ইচ্ছাকৃত ভাবে ছড়ানো হচ্ছে।