ইম্ফল : রাজ্যে সফররত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) কাছে আবেদন জানানোর পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন মণিপুরের ক্রীড়াবিদরা। অশান্ত মণিপুরে (Manipur Violence) দ্রুত শান্তি ফেরানোর আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। যদি রাজ্যে শান্তি না ফেরে, তাহলে তাঁরা তাঁদের পদক ফেরাতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন অলিম্পিকে পদকজয়ীরা।


কুকি জঙ্গিরা মণিপুর রাজ্যবাসীদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে, দ্রুত ব্যবস্থা নিন। রাজ্যে শান্তি ফেরান। এই মর্মেই অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছেন মণিপুরের ১৩ জন ক্রীড়াবিদ। অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত ভারত্তোলক কুঞ্জরানি দেবী, ভারতীয় মহিলা দলের অধিনায়ক ঔনাম বেম বেম বেদী, বক্সার সরিতা দেবী, ধ্যানচাঁদ পুরস্কারপ্রাপক অনিতা চানু, অলিম্পিয়ান জুডো খেলোয়াড় লিকমাবাম সুশীলা দেবী, অলিম্পিক পদকজয়ী মীরাবাঈ চানু ও দ্রোণাচার্য পুরস্কারপ্রাপ্ত বক্সার ইবোমচা সিংহ যে চিঠি দিয়েছেন। কুকিদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের চুক্তি যাতে শেষ হয়, সেই দাবিও তাঁরা রেখেছেন। 


কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মনিপুর সফরের আগেই নতুন করে অশান্তি ছড়ায় ইম্ফলে। জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে মৃত্যু হয়- আরও ২ জনের। আহত হন নিরাপত্তা বাহিনীর এক জওয়ান-সহ ১২ জন। উরিপকে বিজেপি বিধায়কের অফিস ভাঙচুর করা হয়। গত কয়েকদিন ধরেই জনজাতি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে মণিপুর। ৭৫ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ জানিয়েছিলেন, পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে অন্তত ৪০ জন কুকি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন খানিকটা পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও ফের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একাধিক গ্রামে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। কুকিরা প্রকাশ্যে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 


আরও পড়ুন- ১১ হাজার প্রাথমিক, ১৪ হাজার ৫০০ উচ্চপ্রাথমিকে নিয়োগের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর


কী কারণে এমন ক্ষোভ:
মণিপুরের বাসিন্দাদের বড় অংশই মেইতেই জনগোষ্ঠীর। তাঁরা মূলত ইম্ফল ও লাগোয়া সমতল এলাকায় বাস করেন। পাহাড়ি এলাকায় থকেন কুকিরা। মেইতেইরা জনজাতি গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় তাঁরা পাহাড়ি এলাকায় জমি কিনতে পারেন না। কিন্তু কুকিরা সমতল এলাকায় জমি কিনতে পারেন। এবার মেইতেই জনগোষ্ঠী তফসিলি জনজাতিভুক্ত হয়ে গেলে তাঁরাও পাহাড়ি এলাকায় জমি কিনতে পারবেন, সেটাই কুকিদের অসন্তোষের কারণ। কুকিদের দাবি, এন বীরেন সিংহের সরকার তাঁদের ক্রমশ কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে। শুধু মেইতেইদের তফসিলি জনজাতিভুক্ত হওয়ার দাবির বিরোধিতা নয়। আরও একটি কারণে চড়েছে ক্ষোভের পারদ। মণিপুরের পাহাড়ি এলাকায় কুকি জনগোষ্ঠীদের বাস। সেই পাহাড়ি এলাকায় সংরক্ষিত অরণ্য থেকে কুকি জনগোষ্ঠীভুক্ত বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তার জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আর সেটা নিয়েই চড়েছে ক্ষোভের পারদ। একাধিকবার বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। নিরাপত্তা আটোসাঁটো করা হয়েছে। সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী নামানো হয়েছে।


আরও পড়ুন: ব্যাড কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর জন্য কী কী খেতে পারেন? রইল তারই তালিকা