কলকাতা : কৌশিকী অমাবস্যা তিথিতে তারাপীঠে প্রতিবছর বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। বিগত দেড় দশকে এই কৌশিকী অমাবস্যায় কার্যত বাঁধ ভাঙা মানুষের ভিড় হয় তারাপীঠে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ পর্যন্ত আসেন পুজো দিতে। তারাপীঠ মহাশ্মশানে দূর দূরান্ত থেকে ভিড় করেন তন্ত্রসাধকররা। তাঁদের দেখতে ভিড় করেন ভক্তরা। সব মিলিয়ে কৌশিকী অমাবস্যার রাত তারাপীঠে একদম অন্যরকম। তবে এর মাহাত্ম্য জানলে শিহরিত হবেন যে-কেউ ! তারাপীঠ এই দিন হয়ে ওঠে তন্ত্রসাধনার কেন্দ্র। বহু তান্ত্রিকরা এই দিনটিকেই বাছেন সাধনা সিদ্ধির জন্য । কিন্তু কেন, কী লুকিয়ে আছে এই তিথিতে ? 


হিন্দু তন্ত্রমতে, এই তিথিতে কঠোর তপস্যায় আশাতীত ফল মেলে। সাধক কুলকুণ্ডলিনী চক্রকে জয় করতে পারে। আবার এই তিথিতেই সাধনা করেন বৌদ্ধ তান্ত্রিকরাও।  তন্ত্র মতে এই রাতকে 'তারা রাত্রি'ও বলা হয়৷ তান্ত্রিকরা মনে করেন, এক বিশেষ মুহূর্তে স্বর্গ ও নরক দুইয়ের দরজা মুহূর্তের জন্য খুলে যায় এদিন।  সাধক নিজের ইচ্ছা মতো ধনাত্মক অথবা ঋণাত্মক শক্তি সাধনার মধ্যে আত্মস্থ করেন ও সিদ্ধি লাভ করেন ৷ তাই এই রাত কঠিন তপস্যার দিন। সাধনার লক্ষ্যপূরণের দিন। কৌশিকী অমাবস্যা, অন্য সব অমাবস্যার থেকে একটু আলাদা। তন্ত্র ও শাস্ত্র মতে, ভাদ্র মাসের এই তিথিতে অনেক কঠিন সাধনায় সিদ্ধিলাভ করা সম্ভব।


কথিত আছে, এই তিথিতেই তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করেন সাধক বামাখ্যাপা। তারাপীঠ মহাশ্মশানের শ্বেত শিমূল গাছের নিচে বসে সাধনা করেছিলেন সাধক বামদেব। মায়ের একনিষ্ঠ ভক্তকে নিরাশ করেননি মা তারা। দেখা দেন বামদেবকে। তাই ভক্তদের ধারণা, এদিন মা-কে ডাকলে তিনি সাড়া দেন, খালি হাতে ফেরান না।  তাই তো এত ভিড় হয় দেবী দর্শনের জন্য । 


কৌশিকী শব্দের আভিধানিক অর্থ, আদ্যাশক্তির রূপ বিশেষ। পুরাণ মতে, কৌশিকী রূপেই শুম্ভ নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন আদ্যাশক্তি। তাই এই দিনটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় তারাপীঠে। 


ডিসক্লেমার : ধর্মীয় বিশ্বাস নিজস্ব। এ ব্যাপারে কোনও মতামত এবিপি লাইভের নেই। এবিপি লাইভ ধর্ম সম্পর্কিত কোনো সম্পাদকীয় / সম্পাদক-নিয়ন্ত্রিত তথ্য, পরামর্শ প্রদান করে না। প্রদত্ত পরামর্শ ও তথ্য প্রয়োগের আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।  


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।