কলকাতা: হিন্দু ধর্মাবলম্বী শৈব ভক্তদের কাছে তারকেশ্বর (Tarakeswar) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। শ্রাবণ মাসে লক্ষ লক্ষ ভক্তরা ছুটে আসেন বাবা তারকনাথের দর্শন এবং আশীর্বাদ পেতে। মনে করা হয় তারকনাথ নাম থেকে হুগলি জেলার এই এলাকার নামকরণ হয়েছে তারকেশ্বর। তারকনাথ এই অঞ্চলে স্বয়ম্ভূ, এমনটাই বিশ্বাস।                                       


তারকেশ্বর মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে নানা কাহিনী। মন্দিরের উত্তরদিকে রয়েছে দুধপুকুর। বলা হয়, শিবলিঙ্গে ভক্তদের অর্পণ করা দুধ মন্দিরের উত্তরদিকের জলাশয়ে পড়ে তাই এমন নাম। ভক্তদের মধ্যে প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী এই জলাশয়ে স্নান করলে শরীরে আরোগ্য লাভ হয়। কিংবদন্তি অনুসারে, রাজা ভরমল্ল তারকেশ্বরের কাছে জঙ্গলে একটি শিবলিঙ্গের স্বপ্ন দেখেন। এরপর তিনি এই স্বয়ম্ভু লিঙ্গটি খুঁজে বের করেন। ১৭২৯ সালে "বাবা তারকনাথ" নামে পরিচিত এই লিঙ্গের উপর মন্দির স্থাপন করা হয়।                                           


বিশেষ করে শ্রাবণমাস জুড়েই ভক্তদের শিবলিঙ্গের ওপর জল ঢালার প্রথা চলতে থাকে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পায়ে হেঁটে দূরদূরান্ত থেকে বাঁক কাঁধে নিয়ে মন্দিরে আসেন ভক্তগণ। বিশ্বাস যে, জলাভিষেকে সন্তুষ্ট হন তিনি। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, জল ভর্তি কলসির বাঁক কাঁধে নিয়ে যাত্রা শেষ করলে এবং মহাদেবকে জল অর্পণ করলে দেবাদিদেবের আশীর্বাদ পাওয়া যায়। ভক্তদের সমস্ত মনোস্কামনা পূরণ করেন তিনি। 


আরও পড়ুন, তারকেশ্বরের মন্দির কেন গুরুত্বপূর্ণ? কেন শ্রাবণ মাসে শিবকে জল নিবেদন করতে ছুটে আসেন ভক্তরা?


সারাবছরই এই মন্দিরে তীর্থযাত্রীরা আসেন। বিশেষত সোমবারে এই মন্দিরে বেশি তীর্থযাত্রী সমাগম হয়। ফাল্গুন মাসে (ফেব্রুয়ারি-মার্চ) শিবরাত্রি ও চৈত্র মাসে (মধ্য এপ্রিল) গাজন উৎসবে প্রচুর তীর্থযাত্রী তারকেশ্বরে আসেন। শ্রাবণ মাস (জুলাই-অগস্ট) শৈবদের কাছে বিশেষ পবিত্র মাস। এই মাসের সোমবারগুলিতেও তারকেশ্বরে প্রচুর তীর্থযাত্রী আসেন।


মহাশিবরাত্রি ও চৈত্র সংক্রান্তিতে তারকেশ্বর মন্দিরে বিশেষ উৎসব হয়। প্রতি সোমবার হয় বিশেষ পূজা। তবে শ্রাবণের সোমবারগুলিতে তারকনাথকে গঙ্গোদকে স্নান করানোর উদ্দেশ্যে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে।             


 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন