কলকাতা: কী হবে যদি হঠাৎ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ এখনকার থেকে কয়েক লক্ষগুণ (Million Times Oxygen Depletion In Earth Atmosphere) কমে যায়? আকাশ-কুসুম ভাবনা নয়, ২০২১ সালে 'নেচার' জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে (Science News) এমনই পূর্বাভাস করা হয়েছিল যা নিয়ে ফের শুরু হয়েছে চর্চা। 


কেন চর্চা?
পৃথিবী ও প্রাণ। এতটাই মিলেমিশে গিয়েছে যে আলাদা করে আমাদের অনেকেই হয়তো এ নিয়ে ভেবে দেখি না। তবে বিজ্ঞানীরা মনে করাচ্ছেন, প্রাণের বিকাশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় শর্তের অন্যতম, অক্সিজেনের মাত্রা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় রয়েছে বলেই এককোষী থেকে বহুকোষী, এমনকি মানুষের অস্তিত্ব সম্ভব হয়েছে। যদিও ছবিটা অতীতে এরকম ছিল না। 'নেচার' জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটিতে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে বদলে যেতে পারে এই ছবিটি।

এখন যা এবং যা হতে পারে...
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ২১ শতাংশই অক্সিজেন। এই গ্রহে যে একাধিক প্রজাতি বেঁচে রয়েছে, তার অন্যতম প্রধান কারণ এটি। কিন্তু বহু যুগ আগে এমন ছিল না। নির্দিষ্ট করে বললে, সাড়ে চারশো কোটি বছর আগেকার পৃথিবী আর আজকের পৃথিবী একেবারেই একরকম নয়। সে সময় কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন এবং জলীয় বাষ্পের আধিক্য বেশি ছিল পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে।গবেষকদের একাংশের ধারণা, ভবিষ্য়তেও আমাদের গ্রহের বায়ুমণ্ডল এমন একটা জায়গায় পৌঁছবে যেখানে অক্সিজেনের মাত্রা কমবে। বাড়বে অন্যান্য উপাদানের বাড়বে।এই নিয়ে একটি গবেষণাপত্র বছরদুয়েক আগে 'নেচার' জার্নালে প্রকাশিত হয়। তবে গবেষণাপত্রটিতে জানানো হয়েছে, এখনই ভয়ের কারণ নেই। এই পরিস্থিতি আসতে এখনও কয়েকশো কোটি বছর বাকি।কিন্তু যখন এমন হতে শুরু করবে, তখন বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন খুব দ্রুত হতে থাকবে। বলা হয়েছে ওই গবেষণাপত্রে। ঠিক কী হবে তখন?জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির বিজ্ঞানী ক্রিস রাইনহার্ড বলেন, 'অক্সিজেনের মাত্রা চরম ভাবে কমে যাবে। ধরা যেতে পারে, এখন যা মাত্রা রয়েছে, তার থেকে কয়েক লক্ষ গুণ কমে যাবে।'সোজা কথায়, আজ থেকে প্রায় ২৪০ কোটি বছর আগে এই পৃথিবী যে 'গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্ট'-র মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল, তার আগের পর্যায়ে ফিরে যাবে গ্রহ। বছরদুয়েক আগেকার এই গবেষণাপত্রটি নিয়ে ফের নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে বিজ্ঞানীমহলে। কারণ, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশ ইতিমধ্যেই পৃথিবীর বাইরে মানুষের বসবাসের যোগ্য গ্রহের সন্ধান করতে শুরু করেছেন। সেক্ষেত্রে এই গবেষণা গুরুত্ব পাচ্ছেই।


আরও পড়ুন:জলের ফোঁটা নয়, এই গ্রহে বালির কণাই বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে