নয়াদিল্লি: অপেক্ষা, উদ্বেগের অবসান ঘটিয়ে পৃথিবীতে ফিরলেন সুনীতা উইলিয়ামস। দীর্ঘ সাড়ে ন'মাস পর পৃথিবীর মাটিতে ছুঁলেন সুনীতা, তাঁর সহযাত্রী ব্যারি বুচ উইলমোর। ফ্লোরিডা উপকূলে, আটলান্টিক মহাসাগরের উপর তাঁদের নিয়ে নামল SpaceX-এর Crew-9 মহাকাশযান। ওই মহাকাশযানে চেপে পৃথিবীতে ফিরলেন NASA-র নিক হেগ এবং রাশিয়ার ROSCOSMOS-এর অলেকডান্ডার গরবুনভ। (Sunita Williams Returns Home)
মঙ্গলবারই আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে পৃথিবীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন সুনীতারা। দীর্ঘ ১৭ ঘণ্টার যাত্রা শেষে মঙ্গল-বুধ ভোররাত ৩টে বেজে ২৭ মিনিটে পৃথিবীতে এসে পৌঁছন তাঁরা। ফ্লোরিডা উপকূলে, আটলান্টিক মহাসাগরে নামে Crew-9 মহাকাশযানের ক্যাপসুলটি। নিরাপদে অবতরণের জন্য নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে প্যারাশুট দিয়ে ঝুলিয়ে নামানো হয় সেটিকে। সরাসরি জলে অবতরণ করে ক্যাপসুলটি। (Science News)
আগে থেকেই সেখানে অপেক্ষা করছিল SpaceX-এর জাহাজ। তারাই মহাকাশচারীদের উদ্ধার করতে হাত বাড়িয়ে দেয়। সেই সময় সকলের নজর ক্যাপসুলের উপরই ছিল। কখন মহাকাশচারীরা বেরিয়ে আসেন, অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন সকলে। এমন পরিস্থিতিতে কার্যত পিছলেই ক্যাপসুল থেকে বেরিয়ে আসেন সুনীতে। হাসিমুখে উদ্ধারকারীদের হাত ধরেন তিনি। অনুরাগীদের উদ্দেশে থামসআপ দেখান।
গত বছর জুন মাসে Boeing Starliner মহাকাশযানে চেপে অভিযানে গিয়েছিলেন সুনীতা ও ব্যারি। অভিযান আট দিন চলার কথা ছিল। কিন্তু তার পর থেকে নয় নয় করে সাড়ে ন'মাস কেটে যায়। মহাকাশযানটি বিকল হওয়ায় মহাকাশে আটকে পড়েন সুনীতারা। পরে মহাকাশযানটিকে সারিয়ে পৃথিবীতে ফেরত আনা হলেও, ওই যানে সুনীতাদের ফেরোনার ঝুঁকি নেয়নি NASA. বরং ইলন মাস্কের সংস্থা SpaceX-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার পরও বার বার পিছিয়ে যায় সুনীতাদের ফেরানোর অভিযানে। তবে শেষ পর্যন্ত নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে এলেন সুনীতারা।
সুনীতার ফেরা নিয়ে কার্যত প্রহর গুনছিল গোটা পৃথিবী। তিনি নিরাপদে ফিরে আসায় ভারতেও খুশির আমেজ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একদিন আগেই সুনীতাকে নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, সুনীতাকে চিঠি লিখেছেন তিনি। মহাকাশযানে সুনীতার অনন্যকীর্তিতে ভারত যে গর্ববোধ করছে, তাও জানান। ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুনীতার প্রত্যাবর্তনে খুশির হাওয়া সর্বত্র। গুজরাতে আতসবাজি ফাটিয়ে সুনীতার প্রত্যাবর্তন উদযাপনের ছবি ও ভিডিও সামনে এসেছে। সুনীতাদের এই অভিযান আগামীতে মহাকাশ গবেষণার পথ আরও প্রশস্ত করবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।