Science News: সাগর পেরিয়ে অতর্কিতে হানা দিল ঝাঁক ঝাঁক জেলিফিশ, বন্ধ হয়ে গেল গোটা পরমাণু কেন্দ্র
Jellyfish Shuts Nuclear Plant Down: ফ্রান্সের উত্তরের উপকূলে অবস্থিত গ্রেভলাইন্স পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

নয়াদিল্লি: জেলিফিশের উৎপাতে বন্ধ করে দিতে হল ফ্রান্সের অন্যতম বৃহত্তম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র। ওই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছয়টি চুল্লি ৫০ লক্ষ বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম। কিন্তু জলের ট্যাঙ্কে ঝাঁকে ঝাঁকে জেলিফিশ ঢুকে পড়ায়, আপনা থেকেই বন্ধ হয়ে যায় পরমাণু চুল্লিগুলি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে আপাতত পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রাখারই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কবে, এখনও পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না। (Science News)
ফ্রান্সের উত্তরের উপকূলে অবস্থিত গ্রেভলাইন্স পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। রবিবার রাতে অতর্কিতেই সেখানে হানা দেয় ঝাঁক ঝাঁক জেলিফিশ। পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় যে জায়গায়, তার থেকে কিছুটা তফাতে পাম্পিং স্টেশন রয়েছে সেখানে। যাতে জলের সাহায্যে চুল্লি ঠান্ডা করা যায়। কিন্তু রবিবার গভীর রাতে আচমকাই বিপত্তি দেখা যায়। ঝাঁক ঝাঁক জেলিফিশ আটকে যায় ফিল্টারে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আপনা হতেই বন্ধ যায় পারমাণবিক চুল্লিগুলি। (Jellyfish Shuts Nuclear Plant Down)
গ্রেভলাইন্স পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দেশের মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম। উত্তর সাগরের সঙ্গে একটি খালের মাধ্যমে সংযুক্ত সেটি। ওই জল ব্যবহার করেই ঠান্ডা রাখা হয় চুল্লি। ওই পরমাণু কেন্দ্রের ছয়টি ইউনিটের প্রত্যেকটি ৯০০ মেগাওয়াট করে মোট ৫.৪ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সক্ষম। কিন্তু জেলিফিশের উৎপাতে সব বন্ধ রাখতে হয়েছে।
ডানকার্ক এবং ক্যালে শহরের মাঝামাঝি জায়গায়, সমুদ্রসৈকতের ধারেই অবস্থিত গ্রেভলাইন্স পরমাণু কেন্দ্রটি। সেটি পরিচালনা করে EDF সংস্থা। তারা জানিয়েছে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, যাতে নিরাপদে, পুনরায় চুল্লিগুলি চালু করা যায়। জানা গিয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দু’টি চুল্লি আগে থেকেই বন্ধ ছিল। জেলিফিশের হানায় বাকি চারটি আপনা থেকে বন্ধ হয়ে যায়। আপাতত সব বন্ধই রাখা হয়েছে। তবে জেলিফিশের অতর্কিত হানায় অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি বলে জানিয়েছে EDF. ফ্রান্সের ওই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ব্রিটেনেও বিদ্যুৎ যায়।
এই পরিস্থিতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করা হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে গত কয়েক বছরে ফ্রান্সের উপকূল অঞ্চলের জল উষ্ণ থেকে উষ্ণতর হয়ে উঠেছে। উষ্ণ জলে দ্রুত বংশবৃদ্ধি হয় জেলিফিশের। এক্ষেত্রেও শীতল থেকে উষ্ণ জলে সরে আসছে জেলিফিশের দল। সেখানে উত্তরোত্তর বংশবৃদ্ধি ঘটছে তাদের। পরিস্থিতি এমন হয়ে উঠেছে যে, জাহাজের ট্যাঙ্কারেও প্রায়শ জেলিফিশ ঢুকে পড়ছে। এর ফলে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্যত্র পৌঁছে যাচ্ছে জেলিফিশের দল।
ফ্রান্সে যে জেলিফিশের বংশবৃদ্ধি ঘটছে, তাদের Asian Moon Jellyfish বলা হয়। এগুলি বিষাক্ত নয়। সাধারণত প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমেই এদের খোঁজ মেলে। উত্তর সাগরে এদের প্রথম দেখা যায় ২০২০ সালে। সেই থেকে যত সময় এগিয়েছে, ততই বেড়েছে উৎপাত। এর আগে চিন, জাপান এমনকি ভারতের বন্দর এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রেও জেলিফিশের উৎপাত দেখা গিয়েছে। পরমাণু কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন তুলনামূলক নিরাপদ বলেই ধরা হয়। কিন্তু তা থেকে যে পরিমাণ তাপ উৎপন্ন হচ্ছে, তার প্রভাব মারাত্মক হতে পারে বলে মত মেরিন বায়োলজিস্ট ডেরেক রাইট।























