Ayan Seal Black Money: নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করতেই আত্মীয়দের নামে সম্পত্তি কিনেছিলেন অয়ন?
ঠিক তার আগের বছর, ২০১৯-এ ভাঙড়ের ব্যাওতা মৌজায় নিজের সংস্থার ABS ইনফোজোনের কর্মী রীতেশ জয়সোয়ালের নামে ৫ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা দিয়ে জমি কেনেন অয়ন।
সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) কায়দাতেই কি কালো টাকা সাদা করতে আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের নামে সম্পত্তি কিনেছিলেন অয়ন শীল (Ayan Seal)? নিয়োগ-দুর্নীতিকাণ্ডে (Recruitment Corruption) ইডি-র (Enforcement Directiorate) হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইডি-র দাবি, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (South 24 Pargana) বেশ কিছু সম্পত্তি কিনেছিলেন অয়ন। এর মধ্যে ২০২০-তে লকডাউন-পর্বে গুড়াপের ঘোশলা মৌজায় ছেলে অভিষেক ও ছেলের ঘনিষ্ঠ ইমন গঙ্গোপাধ্যায়ের নামে অয়ন ১ কোটি টাকার সম্পত্তি কেনেন। ঠিক তার আগের বছর, ২০১৯-এ ভাঙড়ের ব্যাওতা মৌজায় নিজের সংস্থার ABS ইনফোজোনের কর্মী রীতেশ জয়সোয়ালের নামে ৫ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা দিয়ে জমি কেনেন অয়ন। এর আগে, ২০১৬ সালে একই দিনে ভাঙড়ের ব্যাওতা মৌজায় সংস্থার কর্মী ও আত্মীয়দের নামে তিন-তিনটি জমি কেনেন অয়ন শীল। নিয়োগ-দুর্নীতির টাকাতেই এই সম্পত্তি-ক্রয় বলে মনে করছে ইডি।
কালো টাকা সাদা করার ছক: অনুব্রতর কায়দায় কালো টাকাকে সাদা করার ছক কষেছিলেন অয়ন শীল? কারণ, ED সূত্রে দাবি, বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির মতোই, নিজের স্ত্রী-পুত্র, ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, অফিসের কর্মী, পরিচারক এবং ড্রাইভারের অ্য়াকাউন্টে মোটা অঙ্কের লেনদেন করেছিলেন অয়ন। মাত্র ৭ বছরেই ফুলে ফেঁপে উঠেছিল অয়নের সাম্রাজ্য়।
রাঁধুনী, পরিচারকদের নামেো সম্পত্তি: শুধু নিজের নামে নয়, ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্বজনদের নামে একাধিক ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্ট, রাঁধুনী, পরিচারকদের নামে সম্পত্তি ক্রয়। এমনকী ড্রাইভারের নামেও সম্পত্তি! এভাবেই নামে-বেনামে একাধিক সম্পত্তি ও ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্ট ব্য়বহার করে গরু পাচারের কালো টাকা সাদা করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। এমনটাই অভিযোগ বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে। এবার একইরকম অভিযোগ উঠল, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত প্রোমোটার অয়ন শীলের বিরুদ্ধে!
ইডি সূত্রে দাবি, নিজের স্ত্রী-পুত্র, ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, অফিসের কর্মী, পরিচারক, ড্রাইভারের অ্য়াকাউন্ট থেকে বিপুল অঙ্কের লেনদেন করেছেন অয়ন শীল। এই অ্য়াকাউন্টগুলো ব্য়বহার করে অন্য়ত্র টাকা সরিয়েছেন ধৃত প্রোমোটার। ED সূত্রে দাবি, সল্টলেকের FD ব্লকে হানা দিয়ে যে প্রচুর ডকুমেন্ট পাওয়া গেছে, তাতে রয়েছে বেশ কিছু ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্টের ডিটেলস। সেখানে দেখা যাচ্ছে, অয়নের কর্মচারীদের অ্য়াকাউন্টে যে লেনদেন, তার সঙ্গে কোনও মিল নেই স্য়ালারি স্ট্রাকচারের। অর্থাৎ, বেতনের অঙ্কের সঙ্গে আকাশ পাতাল তফাত অ্য়াকাউন্টের লেনদেনের।
প্রচুর জমি, ফ্ল্য়াট ক্রয়: ED সূত্রে দাবি,২০১৪ থেকে ২০২১- এই সময়কালে প্রচুর সম্পত্তি ক্রয় করেন অয়ন শীল। কেনেন প্রচুর জমি, ফ্ল্য়াট। যৌথ মালিকানাতেও কেনা হয় অনেক সম্পত্তি। তৈরি করেন ফার্ম হাউস। অনুব্রতর ছকে একইভাবে দুর্নীতির কালো টাকাকে সাদা করতেন অয়ন শীল। প্রাথমিকভাবে এমনটাই অনুমান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। এদিকে যিনি এই বিপুল সম্পত্তির মালিক, তিনিই কিনা টাকা মেটাননি এক ক্য়াটারিং ব্য়বসায়ীর!চুঁচুড়ার বাসিন্দা, এই ব্য়বসায়ীর দাবি, অয়নের বাড়িতে ক্য়াটারিংয়ের কাজ করলেও, পুরো টাকা মেলেনি।
ব্য়বসায়ী বলরাম দাস বলছেন, অয়নের ছেলের আঠারো বছরের জন্মদিনে ক্যাটারিং করেছিলেন ১ লাখ ১2 হাজার টাকার মধ্যে কুড়ি হাজার টাকা পেয়েছিলেন কিন্তু বাকি টাকা ফেরত পাননি। বছরের ১০-১২ টা অনুষ্ঠান করতো অয়ন বহু লোককে ডেকে মাছ-মাংস সব খাওয়াতো। এলাকার অনেক মানুষের টাকা মেরে দিয়েছিল। বছরের বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠান হত। কিছু গণ্ডগোল হয়। অয়ন ফ্ল্য়াট ছেড়ে চলে যায়। টাকা পায়নি। আর কোথায় কোথায় লুকিয়ে অয়নের সম্পত্তি? সেদিকে নজর ইডি আধিকারিকদের। সুকান্ত মুখোপাধ্য়ায় ও অর্ণব মুখোপাধ্য়ায়। এবিপি আনন্দ।