Bappi Lahiri's Siliguri Connection : বছরে একবার হলেও ঘুরে যেতেন, শিলিগুড়ির আশুতোষ ভবনে মন পড়ে থাকত বাপি লাহিড়ির
Bappi Lahiri Demise : বাপি লাহিড়ির মৃত্যুর পর এখন শোকস্তব্ধ শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কের আশুতোষ ভবন...
বাচ্চু দাস, শিলিগুড়ি : বছরে অন্তত একবার হলেও শিলিগুড়িতে (Siliguri) মাসির বাড়িতে আসা মাস্ট ছিল বাপি লাহিড়ির। আর তিনি আসা মানেই গানের আসর, জমিয়ে আড্ডা, ঘুরতে যাওয়া। বাপি লাহিড়ির (Bappi Lahiri) মৃত্যুর পর এখন শোকস্তব্ধ শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কের আশুতোষ ভবন।
একের পর এক হিট গান। গান গেয়ে, সুর দিয়ে পৌঁছেছিলেন খ্যাতির শীর্ষে। কর্মসূত্রে জীবনের সিংহভাগ সময় মুম্বইয়ে কাটালেও নিজের জন্মভূমিকে কোনও সময় ভোলেননি বাপি লাহিড়ি।
১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্ম হয় অলোকেশ লাহিড়ির। বলিউড থেকে টলিউডে যিনি পরিচিত সকলের ‘বাপ্পি দা’ বলে। জলপাইগুড়ি থেকে খুব ছোটবেলায় চলে আসেন বাঁশদ্রোণীর বাড়িতে। তারপর একটা সময় মুম্বইয়ে পাড়ি। তারপর সেখানেই নাম খ্যাতি যশ...সবকিছুর শীর্ষে ওঠা। কিন্তু এত কিছুর পরেও বাংলায় এলেই বাপি লাহিড়ির মন পড়ে থাকত শিলিগুড়ির ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে, বাঘাযতীন পার্কের এই আশুতোষ ভবনে।
এটা বাপি লাহিড়ির মাসির বাড়ি। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, প্রতি বছর অন্তত একবার এখানে আসতেনই! কিন্তু কোভিডের কারণে শেষের কয়েকটা বছর আসতে পারেননি।
দোতলা এই মাসির বাড়িতে শেষবার এসেছিলেন ২০১৭ সালে মাসতুতো ভাইয়ের ছেলের পৈতের অনুষ্ঠানে। আর ঘরের ছেলে ঘরে ফিরতেই নাকি শুরু হয়ে যেত উত্সব! সারাদিন খাওয়া-দাওয়া, গানবাজনা, ঘুরতে যাওয়া....আরও কত কী।
বাপি লাহিড়ির আত্মীয় সূপর্ণা চৌধুরী বলেন, কাকাশ্বশুর যখনই আসত উত্সবের মতো লাগত। বাড়িতে হইহুল্লোড়...গানবাজনা। আমাকে গান শিখিয়েছে। একসঙ্গে গানও গেয়েছি। ঘুরতে ভালবাসতেন। আমরা ঘুরতে যেতাম।
মঙ্গলবার মুম্বইয়ের হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাপি লাহিড়ি। আর সেই খবর শিলিগুড়ির এই বাড়িতে পৌঁছনোর পর থেকেই শোকস্তব্ধ পরিবার! বিষাদের সুর গোটা এলাকায়। বাপি লাহিড়ির মাসতুতো দাদা ভবতোষ চৌধুরী বলেন, ২ বছরের ছোট। ছোটবেলা থেকে আসে। ভাবতেই পারছি না। কলকাতা থেকে একজন জানায়। বম্বে চলে গেলেও সম্পর্ক ভাল ছিল।
বাড়িতে বাপি লাহিড়ির জন্য একটি ঘরও নির্দিষ্ট করা আছে। মাসির বাড়িতে এলে এখানেই থাকতেন তিনি। তাঁর জীবনযাপন ছিল একেবারে সাদামাটা। বাপি লাহিড়ির আত্মীয় ময়ূখ চৌধুরী বলেন, আজ সকালে শুনলাম। ভাবতে পারছি না। একটা সময় এসিও ছিল না। তাও এখানে থাকতেন। উত্তরবঙ্গে কখনও হোটেলে থাকেননি। বাড়ির খাবারই খেতে ভালবাসতেন।
বাড়ির আনাচ কানাচ জুড়ে বাপি লাহিড়ির অনেক স্মৃতি! পরিবারের সদস্যরা বলছেন, স্মৃতিগুলোই থেকে যাবে। এই বাড়িতে আর কোনওদিনও ফিরবেন না বাপি!
বুধবার মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন প্রয়াত বাপি লাহিড়ির আত্মীয়রা।