Abhishek Banerjee: 'লাইমলাইটে' আনতেই কি গুরুত্বপূর্ণ দিনে অভিষেককে তলব এজেন্সির? উঠছে TMC-BJP সেটিংয়ের অভিযোগ !
Central Agency: নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে ৪ বার তলব করল কেন্দ্রীয় এজেন্সি
অনির্বাণ বাগচি, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও ঊজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা : বেশি করে 'লাইমলাইটে' আনতেই কি গুরুত্বপূর্ণ দিনে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে (Abhishek Banerjee) তলব করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি (Central Agency) ? দিল্লিতে ধর্না কর্মসূচির দিনেই অভিষেককে ED-র সমন প্রসঙ্গে তৃণমূল-বিজেপির সেটিংয়ের তত্ত্ব তুলছে সিপিএম ও কংগ্রেস। এনিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে দুই দলই।
১৩৭ দিন। অর্থাৎ, ৪ মাস ১৭ দিন। এই সময়কালে, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে ৪ বার তলব করল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। চলতি বছরের ২০ মে, নবজোয়ার যাত্রার মধ্যেই অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে ডেকে পাঠায় CBI। এরপর ১৩ জুন নবজোয়ার যাত্রার মধ্য়েই অভিষেককে তলব করে ED। গত ১৩ সেপ্টেম্বর, বিরোধী জোট 'INDIA'-র সমন্বয় কমিটির বৈঠকের দিন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ED। আর এবার ৩ অক্টোবর, মঙ্গলবার, দিল্লিতে তৃণমূলের ধর্নার দিনই ফের তলব করা হয় অভিষেককে। এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বলেন, 'আমি তো বলছি, তদন্তে সহযোগিতা করছি। যতবার ডেকেছে গেছি। আগামীদিনেও যাব। আপনারা তদন্তের জন্য় ডাকছেন না। কর্মসূচিকে বাধা দিতে ডাকছেন।... আপনি ৪ তারিখ ডাকুন। আজকে ডাকলেন না কেন ? কাল ডাকলেন না কেন ? '
আর এখানেই প্রদেশ কংগ্রেস ও সিপিএমের প্রশ্ন। কেন বারবার বেছে বেছে গুরুত্বপূর্ণ দিনেই অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে তলব করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ? এর নেপথ্য়ে কি মূল উদ্দেশ্য় অভিষেক ও তৃণমূলকে বেশি করে 'লাইমলাইটে' আনা ?অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের গুরুত্ব আরও বাড়ানো ? তৃণমূলের যাতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার তত্ত্ব এবং বিজেপি বিরোধিতা আরও জোরালভাবে সামনে আনতে সুবিধা হয়, সেই সুযোগই করে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ? গোটাটাই কি তৃণমূল ও বিজেপির 'সেটিং' ?
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "সেটিং। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দু'বার দু'বার ডাকল ইডি-সিবিআই। একটা গতমাসে, যখন তাঁর কর্মসূচি আছে। এবার ২ বা ৩ অক্টোবর কর্মসূচি আছে, আবার সেইদিনে ডাকল। যাতে দেখানে পারেন, আমি এতবড় নেতা যে আমাকে ভয় পেয়ে আমার কাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করে দিতে চায়। এটা বিজেপির উদ্দেশ্য, তৃণমূলকে সাহায্য করার।"
প্রদেশ কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাতো বলেন, "তাঁর একটা বড় প্রোগ্রাম আছে, সবাই আগে থেকেই জানেন। তার পরেও ডাকছে। তাহলে, এই বিষয়টায় তো স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহ হবে। তিন-চার দিন পরে ডাকতে পারত। এরকম এক একটা ঘটনাপ্রবাহ সন্দেহের দিকে যাচ্ছে এবং সন্দেহটা খুব জোরাল হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং এই সেটিং তত্ত্ব যেটা মানুষ অনেকদিন ধরে সন্দেহ করছে, সেটা কিন্তু পরিষ্কার হয়ে গেছে।"
ইডি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের অন্তর্গত। অর্থাৎ নির্মলা সীতারমণের অধীনস্থ। এদিকে, CBI কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গমন্ত্রকের অন্তর্গত।
যে দফতর খোদ নরেন্দ্র মোদির হাতে রয়েছে। সম্প্রতি ইডির জিজ্ঞাসাবাদের পর বেরিয়ে সেখানে দাঁড়িয়েই খোলা চ্য়ালেঞ্জ ছুড়েছিলেন অভিষেক। বলেছিলেন, 'ক্ষমতা থাকলে আমায় গ্রেফতার করুন। আমার বিরুদ্ধে থাকলে আমায় গ্রেফতার করুন। কোর্টে আমি লড়ে নেব।'
এই ইস্যুতে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "চিন্তা নেই। বড় মাছ । বড় মাছ ধরতে গেলে অনেকক্ষণ বর্ষি দিয়ে খেলাতে হয়। এদিক ওদিক নিয়ে গিয়ে একটু হাঁফিয়ে নিতে হয় মাছকে। তার পরে তুলতে হয়। সেইভাবেই তোলা হবে। চিন্তা করছেন কেন ?"
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেন, অভিষেকের নাম শুনে যে পরিমাণ ওরা ভয় পাচ্ছে, ইয়ে ডর হমে আচ্ছা লাগা। অভিষেককে নামে ভয় পাচ্ছে। শয়নে-স্বপনে-জাগরণে অভিষেক। যেদিন ওঁর কর্মসূচি, সেদিকে ওঁকে ডেকে বসিয়ে রাখো, ওঁ যেন কর্মসূচি করতে না পারে।
এরমধ্য়ে মূল প্রশ্ন একটাই আদৌ কি কোনওদিন এই তদন্তের শেষ হবে ? সুবিচার হবে ?