Haimanti Ganguly Exclusive: কাউকে আড়াল করতেই আমাকে নিশানা করা হয়েছে, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই: হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়
Haimanti Ganguly: ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে এবিপি আনন্দের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন হৈমন্তী।
কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তোলপাড় গোটা রাজ্য। কেঁচো খুড়তে কেউটে বেরিয়ে আসার মত করে একে একে বিভিন্ন নাম উঠে আসছে। অবশেষে কুন্তল বর্ণিত 'রহস্যময়ী' হৈমন্তীর (Haimanti Ganguly) হদিশ পেল এবিপি আনন্দ। ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে এবিপি আনন্দের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে যাবতীয় বিতর্ক নিয়ে এবার মুখ খুললেন হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রশ্ন: কুন্তল ঘোষ কি পরিকল্পনা করে আপনার নাম একাধিকবার সংবাদমাধ্যমের সামনে বললেন?
হৈমন্তী: আমি এই কুন্তল ঘোষকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। আমার এই নিয়ে কোনও আগ্রহ নেই। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।
প্রশ্ন: কেমন যড়যন্ত্র বলে মনে হচ্ছে আপনার?
হৈমন্তী: আমার মনে হয় কোনও কিছু আড়াল করার জন্যই আমার নাম আনা হচ্ছে। কোনও তথ্য প্রমাণ নেই। কৌশলগতভাবে কেন করা হচ্ছে। কী অভিসন্ধি রয়েছে, তা আমার জানা সম্ভব নয়। আমি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। শুধু কুন্তল ঘোষ বলেছে বলেই আমাকে এভাবে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।
প্রশ্ন: আপনি কি বলতে চাইছেন যে আসল অপরাধের সামনে একটা আড়াল তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে?
হৈমন্তী: একদমই। আমি যখন শুনেছিলাম, তখন স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। আমি সেই পরিস্থিতিতেই ছিলাম না যে মিডিয়ার সামনে দাঁড়িয়ে কী বলা উচিত। এত বড় দুর্নীতির সঙ্গে আমার নাম কীভাবে চলে এল বুঝতেই পারিনি।
প্রশ্ন: আপনার কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। সেই কারণেই সম্ভবত আরও বেশি সংবাদমাধ্যমের নজর আপনার ওপর পড়ল।
হৈমন্তী: আমি কাজের সূত্রে বাইরে ছিলাম। যখন আমি শুনলাম যে নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে আমার নাম জড়িয়েছে, তখন থেকে আমি কথা বলার পরিস্থিতিতে ছিল না। কীভাবে নিজের কথাটা তুলে ধরব সবার সামনে, তা বুঝতে পারছি না। এটা অনেক বড় জটিল বিষয়।
প্রশ্ন: কেন কুন্তল ঘোষ আপনারই নাম উল্লেখ করবে?
হৈমন্তী: কুন্তল ঘোষ প্রতিদিনই কারও না কারও নাম নিয়েছে। এতদিন আমার নাম নেয় নি। কিন্তু সিবিআই যখন গোপালবাবুকে ডেকে পাঠালেন, তখন শুনলাম যে কোনও ব্যাঙ্কের নমিনিতে আমার নাম ছিল, তাই হয়ত আমার নাম নিয়েছে সুযোগ বুঝে।
প্রশ্ন: গোপাল দলপতিকে চিটফান্ড মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তিহার জেলেও ছিলেন তিনি। নমিনি হিসেবে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম থাকলে, আপনিও তো অবশ্যই তদন্তের মধ্যে চলে আসবেন, এটাই স্বাভাবিক।
হৈমন্তী: এটাই আমার দুর্ভাগ্য যে আমার নামও চলে এল। কিছু বলার নেই।
প্রশ্ন: ৩ মার্চ কোর্টে দাঁড়িয়ে কুন্তল ঘোষ বলেছেন যে টাকার সোর্স ছিল তাপস মণ্ডল। আপনি বললেন যে কুন্তল ঘোষকে চেনেন না, তাপস মণ্ডলকে কি চিনতেন?
হৈমন্তী: আমি এঁদের কাউকেই চিনি না। এখন তো ডিজিটাল ইন্ডিয়া। আপনারা দেখে নিন কোনও টাকার লেনদেন কারও থেকে এসেছে কিনা। কুন্তল আসল প্রশ্ন এড়িয়ে আমাকে নিশানা করেছে।
প্রশ্ন: প্রথম যখন আপনার নাম এল, তখন জানা গিয়েছিল যে মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে অফিস আছে আপনার। সত্যিই কি আপনার অফিস আছে এত অভিজাত এলাকায়?
হৈমন্তী: মুম্বইয়ে আমার কোনও অফিস নেই। আমার সঙ্গে কোনও কোম্পানির কোনও যোগাযোগ নেই। এতদিন ধরে এই সব শুনছি, এত বড় বড় অঙ্কের অর্থ এগুলো ভাবতেই পারছি না। কলকাতার বাইরে আমার কোনও অফিস নেই। কোনও ব্যবসা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত নই আমি।
প্রশ্ন: আপনার বেহালার বাড়ির সামনে বেশ কিছু কাগজ পাওয়া গিয়েছে। টেট পরীক্ষার্থীরা বলছেন যে এরকম রোল নম্বর তাঁদের দেওয়া হয়েছিল। এই বিষয়ে কোনও ধারণা রয়েছে আপনার?
হৈমন্তী: বেহালার ফ্ল্যাটে আমি দীর্ঘদিন ছিলাম না। সেই অনেক লোক এসেছে। প্রথম দিন নাকি আমার ছবির স্ক্রিপ্ট পাওয়া গিয়েছিল। পরে দেখলাম সেই স্ক্রিপ্টের সঙ্গে তালিকা পাওয়া গিয়েছে। পুরোপুরি আমাকে ফাঁসানোর জন্য চক্রান্ত হয়েছে।
প্রশ্ন:গোপাল দলপতির সঙ্গে আপনার ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে? আপনার মা বলছেন যে অনেকদিন আগে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। আবার আপনার পাড়ার বাসিন্দারা বলছেন যে তাঁরা কিছুদিন আগেও আপনাকে ও গোপাল দলপতিকে একসঙ্গে দেখেছেন।
হৈমন্তী: মা হঠাৎ করে এই সব শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিল। তবে আমার ও গোপাল দলপতির এখনও ডিভোর্স হয়নি। একটা ফাইল করেছিলাম। এই পর্যন্তই হয়ে আছে। এক, দেড় বছর হয়েছে। আমি আমার কাজে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় এই নিয়ে আর এগোইনি পরে।
প্রশ্ন: তার মানে গোপাল দলপতির সঙ্গে আপনার শেষ দেখা হয়েছে দেড় বছর আগে?
হৈমন্তী: সত্যি বলতে এখনও কোনও সমস্যা হলে গোপাল দলপতি আমার পাশে দাঁড়ান। তবে আমি কোনওভাবে আর্থিক কোনও সাহায্য ওনার থেকে নেইনি। আমি নিজে যা করি, তাতে আমি সন্তুষ্ট। আমার আলাদা কোনও আর্থিক সাহায্যের দরকার হয় না।
প্রশ্ন: ইডি, সিবিআই থেকে কোনও ফোন এসেছে? ভবিষ্যতে কোনও তদন্তকারী সংস্থা আপনাকে ডাকলে সাহায্য করবেন?
হৈমন্তী: ইডি, সিবিআই বা কোনও তদন্তকারী সংস্থা থেকে কোনও ফোন আমার কাছে আসেনি। আগামীতে প্রয়োজন পড়লে সাহায্য করতে প্রস্তুত আমি। আমি কোনও অন্যায় করিনি।