Howrah News: 'ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা', মুর্শিদাবাদের ছায়া এবার হাওড়ার স্কুলে !
Howrah Domjur Primary School: সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে জরাজীর্ণ প্রাথমিক স্কুলের দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় এক শিশুর। এবার মুর্শিদাবাদের ছায়া হাওড়ার প্রাইমারি স্কুলে !
সুনীত হালদার, হাওড়া: সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) জরাজীর্ণ প্রাথমিক স্কুলের দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় এক শিশুর। হাওড়ার (Howrah) একাধিক স্কুলেও জরাজীর্ণ অবস্থা। এমনই একটি স্কুল ডোমজুড়ের কাটলিয়া বোর্ড প্রাথমিক স্কুল। শিক্ষক এবং অভিভাবকদের আশঙ্কা যে কোনও মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে বড় দুর্ঘটনা। যদিও জেলা শিক্ষা দপ্তর থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে খুব শীঘ্রই ভাঙ্গা বাড়ি মেরামত করে দেওয়া হবে।
জানা গিয়েছে, ডোমজুড়ের কাটলিয়া বোর্ড প্রাইমারি স্কুল বেশ পুরনো। ১৯৪৭ সালে এই স্কুলের প্রতিষ্ঠা হয়। বর্তমানে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১২৪। শিক্ষক চারজন। এই স্কুলের সবকটি ঘরের জরাজীর্ণ অবস্থা। টিনের চালের ছাদে অসংখ্য ছিদ্র। যেখানে সেখানে ছাদের চাঙর খসে পড়ছে। দেওয়াল এবং ছাদে চওড়া ফাটল। গোটা স্কুল বাড়িটি কার্যত ভুতুড়ে বাড়ির চেহারা নিয়েছে। এই বাড়ির মধ্যেই কার্যত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে খুদে পড়ুয়ারা। স্কুলে পর্যাপ্ত বেঞ্চ না থাকায় মাটিতে চট পেতে ক্লাস করছে খুদে পড়ুয়ারা। স্কুলের অভিভাবকদের অভিযোগ, 'ক্লাস রুমগুলির ছাদ থেকে চাঙর খসে পড়ছে। যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাঁরা সরকারি সব দপ্তরে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যাদের পয়সা আছে তারা এখান থেকে ছাড়িয়ে ছাত্রদের বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করছে।'
স্কুলের টিচার ইনচার্জ জয়ন্তনাথ দাস জানিয়েছেন,' দীর্ঘদিন এই স্কুলের ক্লাসরুমগুলোর অবস্থা জরাজীর্ণ। বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়। বাধ্য হয়ে একই ক্লাসরুমে দুটি ক্লাস এক সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে। স্কুলের অবস্থা খারাপ বলে ভয়ে ছাত্রছাত্রীরা স্কুল ছেড়ে চলে যাচ্ছে। শিক্ষা দপ্তরকে এই নিয়ে জানানো সত্বেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।' এদিকে ডিস্ট্রিক্ট প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল চেয়ারম্যান কৃষ্ণ ঘোষ জানিয়েছেন কোভিড পরিস্থিতিতে আমপান এবং ইয়াস দুটি বড় ঘূর্ণিঝড়ের ফলে প্রায় ১০০ টি স্কুল বাড়িতে ক্ষতি হয়েছে। ওই সব স্কুলের মেরামতির জন্য ফাইলের প্রসেসিং এর কাজ হচ্ছে।খুব শীঘ্রই ওই স্কুলের মেরামতির জন্য টাকা বরাদ্দ করা হবে। এর পাশাপাশি বেঞ্চের জন্য টাকা দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, অপরদিকে, ভাঙনের কবলে হুগলির বলাগড়ের প্রাথমিক বিদ্যালয়। সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরে হাইকোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। মামলা গ্রহণ আদালতের। পঞ্চায়েত প্রধান ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকে সশরীরে আদালতে হাজিরার নির্দেশ। বলাগড়ের ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই নদী। ভাঙনের কবলে স্কুলবাড়ি। যে কোনও মুহূর্তে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। পঞ্চায়েতের তরফে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চায় হাইকোর্ট। চাষের জমি আগেই গেছে নদীগর্ভে। এবার গ্রামের স্কুলবাড়িটাও বিলিন হতে বসেছে।
আরও পড়ুন, বিয়েতে নারাজ, 'প্রেমিকার ছেলেকে অপহরণ' সোনারপুরে !
গঙ্গা ভাঙন আস্ত একটা স্কুলকে গিলে নিতে চলেছে। তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই, আক্ষেপ গ্রামবাসীর ! গ্রামাবাসী জানিয়েছেন, বর্ষার আগে স্কুল থেকে অনেক দূরে ছিল গঙ্গা। প্রতিদিন একটু একটু করে এগিয়ে আসছে। নদী পাড় ভাঙছে। খয়রামারির কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মাটিতে ফাটল ধরে গঙ্গায় মিশে যাচ্ছে। বলাগড় ব্লকের চর খয়রামারি ভাঙন কবলিত। চাষের জমি, গ্রামবাসীর বাড়িঘর পর্যন্ত জলে তলিয়ে গেছে। প্রাথমিক স্কুলের সীমানা পাঁচিল ইতিমধ্যেই গঙ্গা-গর্ভে চলে গেছে। স্কুলের বারান্দায় এসে ধাক্কা মারছে জল। যে কোনও সময় গোটা স্কুলটাই হয়ত তলিয়ে যাবে চোখের সামনে। নদীর পাড় যেভাবে ভাঙছে তাতে আতঙ্কে রয়েছে গ্রামবাসী। ভাঙন আটকানোর কোনও ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ।